টেকনাফসারাদেশ

আমার উপর রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের বিরূপ প্রভাব

সাদ্দাম হোসাইন, হ্নীলা :
অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গাদের বিরূপ প্রভাব সীমান্তে বসবাসরত বাঙ্গালীরা কোন না কোন সময়ে ভোগ করে থাকেন। ইদানীং অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গাদের কারণে আমার জীবনে ক্ষুদ্র এক প্রভাব নাভিশ্বাস তুলেছে। আগামীতে এই জাতীয় ঘটনারোধে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।
৮সেপ্টেম্বর সকালে শাহপরীর দ্বীপ এক আতœীয়ের বাড়ি হতে ঈদের বেড়ানো শেষ করে যানবাহনের অভাবে প্রায় ২কিলোমিটার হেটে হেটে নৌকা ধরার জন্য ঘাটে পৌঁছলাম। দেখি অসংখ্য রোহিঙ্গা ঘাটে জড়ো হয়ে রয়েছে। শাহপরীর দ্বীপের ভাঙ্গায় এসে আমরা দাদা-দাদী,বোনসহ নৌকার অপেক্ষায় রয়েছি। প্রতিটি নৌকায় কোন জায়গা খালি নেই। বেশী টাকা দিয়ে রোহিঙ্গারা নৌকা ভাড়া করে ফেলায় আমরা খুব অসহায় হয়ে পড়লাম। আমি কিভাবে পার হবো এই চিন্তায় এক থেকে দেড় ঘন্টা দাঁড়িয়ে রইলাম। এক নৌকার মাঝিকে বললাম ভাই আমাকে নিয়ে যাবেন? উত্তরে নৌকার মাঝি বলেন ভাই রিজার্ভ যেতে হবে । আমিও বলি ঠিক আছে রিজার্ভ যাব কত দিতে হবে বল? মাঝি আমার কাছ থেকে ১ হাজার টাকা দাবী করে বসে। তখন আমি নিরুপায় হয়ে অনেক মিনতি করে ৮শত টাকায় রাজি করলাম। কোন মতে ভাঙ্গা বেড়িবাঁধ পার হয়ে দেখি এখানেও রোহিঙ্গাদের একই অবস্থা। তা দেখে ভয়ে আস্তে আস্তে রাস্তার উপর দাঁঁড়িয়ে সিএনজির কাছে গিয়ে চালককে জিজ্ঞাসা করলাম। ভাই হ্নীলায় যাবেন? চালক বলে যাব কিন্তু ২ হাজার টাকা লাগবে। তখন আমি আরো কয়েকটি সিএনজির কাছে গেলে অন্য সিএনজি চালকেরা বলে আড়াই থেকে ৩হাজার টাকা দিতে হবে। এবার আমি চিন্তা করলাম এখানে রোহিঙ্গাদের কারণে পকেট খালি হলেও চড়া দামে বাধ্য হয়ে যেতে হবে। কোন প্রকারে ৮শ টাকায় টেকনাফ পৌর এলাকায় পৌঁছলাম। এখানে এসে দেখি যানবাহন সংকট আরো চরম এবং ভাড়া আরো বেশী। এই পৌর শহরে ২ঘন্টা চরম ভোগান্তি পোহানোর পর হ্নীলায় আসার জন্য একটি সিএনজির দেখা হয়। সিএনজি চালক ১হাজার টাকা ভাড়া হাকলেও শেষ পর্যন্ত ৮শত টাকায় হ্নীলায় আসতে বাধ্য হয়।
উল্লেখ্য,আগে শাহপরীর দ্বীপ ভাঙ্গা পার হতে রিজার্ভ নৌকা ২শ টাকা ও ভাঙ্গা থেকে টেকনাফ আসতে সিএনজি ভাড়া দেড়শ থেকে ২শ টাকা এবং টেকনাফ থেকে হ্নীলায় আসতে রিজার্ভ ২শ টাকা লাগত। এখন রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের কারণে যানবাহনের প্রতি সংশ্লিষ্টদের নিয়ন্ত্রণ না থাকায় এরা দিনের পর দিন বেপরোয়া হয়ে জনজীবনকে বিষিয়ে তুলেছে। রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের বিরূপ প্রভাব এই প্রথম আমার জীবনে আসল। না জানি আমার মতো হাজার হাজার ভূক্তভোগীর করুণ পরিণতি কে লাঘব করবে? এই ব্যাপারে উপজেলা প্রশাসন ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কঠোর হস্তক্ষেপ দরকার বলে ভূক্তভোগীরা মনে করেন।

Comment here