ক্রাইম

জঙ্গিদের অর্থদাতার প্রকৃত নাম সারোয়ার জাহান: র‌্যাব

টেকনাফ ভিশন ডেস্ক:আশুলিয়ার গাজীরচট এলাকার ‘জঙ্গি আস্তানায়’ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানের সময় পাঁচতলা থেকে লাফিয়ে পড়ে নিহত অাবদুর রহমানের প্রকৃত নাম সারোয়ার জাহান। তিনি নব্য জেএমবির প্রধান বলে জানিয়েছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটলিয়ন (র‌্যাব)।
শুক্রবার সকাল ১১টায় রাজধানীর কাওরান বাজারে র‌্যাবের নতুন মিডিয়া সেন্টারে এক ব্রিফিংয়ে এ কথা জানান র‌্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ।
তিনি জানান,আবদুর রহমানের সাংগঠনিক নাম শাইখ আবু ইব্রাহিম আল হানিফ। আশুলিয়ার বাইপাইলের জেএমবির জঙ্গি আস্তানা থেকে উদ্ধার হওয়া আবদুর রহমানের ন্যাশনাল আইডি কার্ড ও পাসপোর্টের সূত্র ধরে অনুসন্ধান চালিয়ে তার পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে।
আবদুর রহমানের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাটে। তার বাবার নাম আব্দুল মান্নান। মায়ের নাম সালেহা খাতুন। সে প্রথম স্ত্রীকে তালাক দিয়ে দ্বিতীয় বিয়ে করে। তার তিন সন্তান। প্রথম পক্ষের দুটি ও দ্বিতীয়পক্ষে একটি সন্তান রয়েছে।
বেনজীর আহমেদ জানান, ১৯৯৮ সালে সারোয়ার বাড়ি ছেড়ে নাচোলে একটি কওমি মাদ্রাসায় ভর্তি হয়। এরপর থেকে সে জঙ্গি কার্যক্রমে জড়িয়ে পড়ে। শায়খ আবু ইব্রাহীম আল হানিফ নামে নব‌্য জেএমবি গঠন করে আমিরের দায়িত্ব নেন আবদুর রহমান।
এর প্রমাণ হিসেবে নব‌্য জেএমবি কর্মকাণ্ড শুরুর একটি ঘোষণার অনুলিপি সংবাদ সম্মেলনে দেখানো হয়। ওই ঘোষণায় আবু ইব্রাহীম আল হানিফের সঙ্গে শেখ আবু দুজুনা নামে আরেকজনের সই আছে। সেই আবু দুজুনা হলেন নারায়ণগঞ্জের অভিযানে নিহত তামিম চৌধুরী, যাকে এতোদিন নব‌্য জেএমবির প্রধান সমন্বয়ক বলা হচ্ছিল।
২০০৩ সালে চাঁপাইনবাবগঞ্জে বাংলা ভাইয়ের নেতৃত্বে একদল জঙ্গি পুলিশের ওপর হামলা চালিয়ে তিন অস্ত্র লুট করে। পরে এ ঘটনায় মামলা হলে পুলিশ ৩৩ জনকে গ্রেফতার করে। এর মধ্যে সারোয়ার জাহান ছিল। তিনি ওই মামলার ৭ নং আসামি।
এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে আবদুর রহমানের দুই সহযোগী নাসির আহমেদ নয়ন ও হাসিবুল হাসানকে ২৭ লাখ ৭০ হাজার টাকাসহ আটক করে র‌্যাব।
উল্লেখ্য,শনিবার সন্ধ্যায় আশুলিয়ার গাজীরচট এলাকার একটি আবাসিক ভবনের পঞ্চম তলায় জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে অভিযান শুরু করে র‌্যাব। র‌্যাবের অভিযান টের পেয়ে পাঁচতলা থেকে পালানোর উদ্দেশ্যে লাফ দেন নব্য জেএমবির প্রধান অর্থদাতা আবদুর রহমান।
পরে আবদুর রহমানকে আহত অবস্থায় আটক করে সাভার এনাম মেডিকেলে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীণ অবস্থায় রাতে তার মৃত্যু হয়। আবদুর রহমানের পাঁচতলায় কক্ষগুলো তল্লাশি করে ৩০ লাখ টাকা, অস্ত্র, বিস্ফোরক, গুরুত্বপূর্ণ নথি পাওয়া যায়।
এদিকে আবদুর রহমানের স্ত্রীকে আটক ও তিন শিশুকে উদ্ধার করে র‌্যাব। এ ছাড়া ওই বাড়ির কেয়ারটেকার তারিকুলকে আটক করা হয়। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদ শেষে কেয়ারটেকার তারিকুলকে ছেড়ে দেওয়া হয়। তবে আব্দুর রহমানের স্ত্রী-সন্তানদের আশুলিয়া থানায় হস্তান্তর করে র‌্যাব।
এ ঘটনায় আবদুর রহমানের স্ত্রী শাহনাজ আক্তার রুমিকে আসামি করে অস্ত্র আইন এবং সন্ত্রাসদমন ও বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলা দায়ের করে র‌্যাব। র‌্যাবের করা দুটি মামলায় রুমিকে পাঁচ দিন করে ১০দিন রিমান্ড মঞ্জুর করেন ঢাকার চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত।
এ ছাড়া আব্দুর রহমানের তিন শিশু সন্তানের মধ্যে দুই ছেলে তাহমিদ (৭) ও জাওয়াত (৫) রুমির মায়ের সঙ্গে এবং মেয়ে লাবণ্য (১১)কে গাজীপুরের সেফ হাউসে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়।###

Comment here