কক্সবাজারক্রাইমরোহিঙ্গা সমাচার

টেকনাফে আনসার ক্যাম্পের অস্ত্র লুটের ৩ হোতা গ্রেফতার : অভিযান অব্যাহত লুন্ঠিত ৫টি সহ ১০ টি অস্ত্র ও লুণ্ঠিত ১৮৯ রাউন্ড গুলি উদ্ধার

জাবেদ ইকবাল চৌধুরী, তুমব্রু থেকে :
আনসারের লুন্ঠিত ৫টি সহ ১০ টি অস্ত্র ও লুণ্ঠিত ১৮৯ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)। আটক করা হয় ওই ঘটনার অন্যতম নায়ক কুতুপালং শরনার্থী শিবিরের র্শীষ সন্ত্রাসী খাইরুল আমিন (বড়) , মাস্টার আবুল কালাম আজাদ ও মোহাম্মদ হাসান আহমদ।
সোমবার রাতে কক্সবাজারের কুতুপালং ও বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা তুমব্রæ গহিন অরন্যে অভিযান চালিয়ে এসব অন্ত্র উদ্ধার করা হয়। জানা যায়, সোমবার রাত ১০ টার দিকে কুতুপালং এলাকা থেকে একটি পিস্তল ও একটি ওয়ান স্যুটার গান এবং ২৬ রাউন্ড গুলিসহ ৩ রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী খাইরুল আমিন (বড়) , মাস্টার আবুল কালাম আজাদ ও মোহাম্মদ হাসান আহমদকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তাদের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে উদ্ধার অভিযান চালানো হয়। এক পর্যায়ে নাইক্ষ্যংছড়ির তুমব্রæ পাহাড়ি এলাকার একটি গর্ত হতে দুটি ড্রামের ভিতর হতে উল্লেখিত আনসারের লুণ্ঠিত অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার করা হয়। এ ছাড়া উদ্ধার করার হয় তাদের ব্যবহৃত ৩ টি দেশীয় তৈরী বন্দুক।
মঙ্গলবার দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে র‌্যাব মহাপরিচালক বেনজির আহমেদ ও আনসার ডিজি মেজর জেনারেল মিজানুর রহমান খান । ঘটনাস্থলে এক প্রেস ব্রিফিং এ র‌্যাব ডিজি জানান, সব সংস্থা যখন অনেকটা গা ছাড়া ভাব নিয়ে ছিলেন, তখনো কিন্তু র‌্যাব আনসারের লুণ্ঠিত অস্ত্র উদ্ধার নিয়ে কাজ করে যাচ্ছিলো কৌশলে। এতে সাফল্যও এসেছে । এ অভিযানে প্রাথমিক ভাবে ধারনা করা হয় লুন্ঠিত ৫ টি অস্ত্র ও ১৮৯ টি গুলি উদ্ধার সম্ভব হয়েছে। তিনি আরো বলেন, যেহেতু পাহাড়ি এলাকা এখানে লুণ্ঠিত আরো অস্ত্র থাকার সম্ভাবনা থাকায় এ অভিযান আরো দুদিন চলবে। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে র‌্যাব মহাপরিচালক( ডিজি) বেনজির আহমেদ বলেন, আটককৃতরা রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী তা সঠিক, তবে এরা কোন সন্ত্রাসী সংগঠনের সাথে জড়িত তা প্রাথমিক ভাবে বলা যাচ্ছে না। তবে চেষ্টা চলছে সঠিত তথ্য বের করতে। তিনি আরো বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দিক নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা বলতে পারি বাংলাদেশের এক ইঞ্চি মাটিও দেশের বা বেদেশী কোন সন্ত্রসী গোষ্ঠীকে ব্যবহার করতে দেওয়া হবে না সে নীতি বাস্তবায়ন করে চলেছে র‌্যাব। এ সময় সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন আনসার ও ভিডিপি মহাপরিচালক( ডিজি )মেজর জেনারেল মিজানুর রহমান খান। তিনি র‌্যাব মহাপরিচালকসহ অপারেশনের সাথে সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি কৃজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, র‌্যাব ৭ দেশের অভ্যান্তরে কোন সন্ত্রাসী যাতে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করতে না পারে এবং দেশের মাটিতে সন্ত্রাসী কাজকর্ম করলে যে পাড় পাওয়া যায় না তাই প্রমান করেছে। তিনি আরো বলেন, টেকনাফের নয়াপাড়া রোহিঙ্গা শরনার্থী ক্যাম্পে হামলা, পিসি আলী হোসেন হত্যা ও লুণ্ঠিত অস্ত্র উদ্ধার ছিলো একটি জঠিল কাজ । যা র‌্যাব করতে সক্ষম হয়েছে।
র‌্যাব-৭ এর কক্সবাজার ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার লে. কমান্ডার আশেকুর রহমান জানান, গোপন সংবাদের অভিযান চালিয়ে প্রথমে এই তিন জনকে আটক করা হয়েছে। তারা টেকনাফের আনসার ক্যাম্পের অস্ত্র লুটের অন্যতম হোতা। এ পর্যন্ত টেকনাফের আনসার ক্যাম্পের লুট হওয়া ১টি এসএমজি, ৬টি ম্যাগাজিন, ২টি চাইনিজ রাইফেল এবং ২টি এম২ চাইনিজ রাইফেল উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। এখনো অভিযান চলছে বলে জানিয়েছেন আশেকুর রহমান।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ১২ মে দিবাগত রাত ২ টার দিকে টেকনাফ উপজেলার নয়াপাড়ায় রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে আনসার বাহিনীর শালবন ব্যারাকে দুর্বৃত্তরা হামলা চালায়। এতে আনসারের এক কমান্ডার আলী
হোসেন নিহত হন। দুর্বৃত্তরা ব্যারাক থেকে ১১টি অস্ত্র ও ৬৭০ টি গুলি লুট করে নিয়ে যায়।

Comment here