টেকনাফ

ট্রলার ডুবির ঘটনায় গ্রাম পুলিশসহ ৮ জন কারাগারে

টেকনাফ :
সেন্টমার্টিনের কাছে মালয়েশিয়াগামী ট্রলারডুবির ঘটনায় আটক ৮ জনকে কক্সবাজার আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আটককৃতরা হলো টেকনাফ উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের নোয়াখালীয়াপাড়ার বাসিন্দা হাসান আলীর ছেলে সৈয়দ আলম (২৮), আব্দুস সালামের ছেলে আব্দুল আজিজ (৩০) , উলা মিয়ার ছেলে ফয়েজ আহমদ (৫০), নোয়াখালী জুম্মাপাড়ার মোহাম্মদ আজমের ছেলে সাদ্দাম হোসেন (২০), মমতাজ মিয়ার ছেলে মোহাম্মদ রফিক (২৬), টেকনাফ সদর ইউনিয়নের রাজার ছড়া গ্রামের মোস্তাক আহমদের ছেলে হুমায়ুন কবির (২০), বাহারছড়া ইউনিয়নের গ্রাম পুলিশ (চৌকিদার) নোয়াখালীয়াপাড়া বাঘঘোনা এলাকার রশিদ আহমদের ছেলে মোহাম্মদ করিম (৪৯) ও উখিয়া বালুখালী ১০ নং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের কবির হোসেনের ছেলে মোহাম্মদ ওসমান। এ ঘটনায় গত মঙ্গলবার রাতে টেকনাফ মডেল থানায় মামলাটি দায়ের করেছেন সেন্টমার্টিন্ ষ্টেশনের কোস্টগার্ড পিটিঅফিসার এমএস ইসলাম। এতে ১৯ জনকে জ্ঞাত ও ৬/৭ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে ১৯১২ সালের মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইন এর ৭/৮ সহ ৩০২/৩৪ ধারার অপরাধ আইনে মামলা করা হয়েছে। পরে পুলিশ
এই মামলায় মঙ্গলবার রাত থেকে বুধবার (১২ ফেব্রæয়ারি) সকাল পর্যন্ত ৮ জনকে গ্রেফতার করে কক্সবাজার জেলা সদরে আদালতে প্রেরণ করে পুলিশ।
টেকনাফ মডেল থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাস এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশ জানায়, সেন্টমার্টিনের কাছে ট্রলারডুবির ঘটনার মঙ্গলবার জীবিত উদ্ধার ৭২ জনকে টেকনাফ থানা হেফাজতে রাখা হয়েছে। বুধবার সকালে সাগর থেকে উদ্ধার আরও একজনকে সেন্টমার্টিনেই রাখা হয়েছে। এ নিয়ে মোট ৭৩ জনকে উদ্ধার করেছে কোস্টগার্ড ও নৌবাহিনীর সদস্যরা। তাদের পরবর্তীতে কোথায় রাখা হবে সে নির্দেশনা দেবেন আদালত। পুলিশ আদালতের নির্দেশনার অপেক্ষায় আছে।
পুলিশ আরও জানায়, মানবপাচারের জন্য মালয়েশিয়াগামী ট্রলারটির পরিচালনার সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগে আটক ৮ জনের মধ্যে রোহিঙ্গা ও স্থানীয় নাগরিক উভয়েই রয়েছে।
বাহারছড়া ইউপি চেয়ারম্যান আজিজ উদ্দিন জানান, মানবপাচারের অপরাধে গ্রাম পুলিশ (চৌকিদার) জড়িত থাকার বিষয়টি ভাবিয়ে তুলেছে। বিষয়টি সবার নজরে আনা দরকার বলেও অভিমত প্রকাশ করেন তিনি।
এর আগে, মঙ্গলবার প্রেস ব্রিফিংয়ে কোস্টগার্ডের পক্ষ থেকে জানানো হয়- ১৩৮ জনকে বহনকারী ছোট ট্রলারটি ডুবন্ত কোরালের সঙ্গে বাড়ি খেয়ে তলা ফেটে ডুবে যায়। নিহতদের অনেকের লাশই পানির নিচ থেকে টেনে বের করতে হয়েছে। এসময় চার মাঝিকে আটক করা হয়।
এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৫ জনের মৃতদেহ এবং জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে ১০৯ জনকে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্মা পুলিশ পরিদর্শক মো: লিয়াকত আলী বলেন, এ ঘটনায় আটক আসামীদের আদালতের আদেশে কারাগারে পাঠানো হয়। এ ছাড়া অন্যান্য পলাতক আসামীদের আটকের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান তিনি।
এদিকে নিহতদের কক্সবাজার জেলা মর্গ হতে ময়নাতদন্ত শেষে স্বজনদের হস্তান্তর করা হবে বলেও জানান তিনি।

প্রসঙ্গত, গত (১০ ফেব্রæয়ারি) রাতে টেকনাফ উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের নোয়াখালীয়াপাড়া সাগর উপকূল হয়ে অবৈধভাবে সাগরপথে মালয়েশিয়া যাওয়ার সময় সেন্টমার্টিনের ছেড়া দিয়া থেকে ১০ নটিক্যাল মাইল দক্ষিণ-পশ্চিমে অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাইয়ের কারনে পানিতে ডুবে যায় ট্রলারটি। পরে মাছ ধরার জেলেদের মাধ্যমে খবর পেয়ে বাংলাদেশ কোস্টগার্ড ও নৌবাহিনীর সদস্যরা উদ্ধার অভিযান শুরু করে।

Comment here