টেকনাফ

বাবা নেই ৩০ বছর

২৮ সেপ্টেম্বর ১৯৯০ ইংরেজী। আমার বাবা আমাদের ছেড়ে মহাল আল্লাহর ডাকে সাড়া দিলেন। আমার বাবার নাম সাইফুল মুল্লুক চৌধুরী। প্রকাশ শহর মুল্লুক চৌধুরী। তিনি উর্দু শিক্ষিত ছিলেন। বৃটিশ শাসিত বার্মা ও ভারতে পড়াশোনা করেছেন। ষাটের দশকে টেকনাফ ইউনিয়ন কাউন্সিলের মেম্বার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। বিভিন্ন সময় ঠিকাদারী, সার, কেরোসিন ও কৃষি পন্যের ডিলার হিসেবে ব্যবসা করেছেন। পাকিস্থান আমলে টেকনাফ খায়ুকখালী ঘাটে একমাত্র সিএন্ডএফ এজেন্ট হিসেবেও পন্য খালাসের কাজটিও করতেন বাবা। ৩০ বছর কেটে গেলো বাবার সানিধ্য বিহীন। কিন্তু প্রতিনিয়ত বাবার স¥ৃতি আমাকে তাড়া করছে। বাবা নেই কোথায় ? সব খানেই তো আছে বাবা। যেখানে যায় ছায়ার মত বিধে আছে বাবার কর্ম। বাবার দিক নিদের্শনা। বাবার স্মৃতি।

আজ বাবার মৃত্য দিবস। কিন্তু আমার কাছে প্রতিনিয়তই বাবা র স্মৃতি। আমি যখন আইএসসি ২ য় বর্ষে তখন (১৯৯০ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর ) বাবাকে হারায়। তখন বাবা হারানো কি তা বুঝার তেমন বুদ্ধি না থাকলেও সময় গড়ানোর সাথে সাথে বাবার শূণ্যতা হাড়ে হাড়ে টের পাই। বাবা নেই সেই শূন্যতা মা,ভাই বোন ও স্বজনরা কোন দিন বুঝতে দেয়নি। বাবার অবর্তমানে এম এ পর্যন্ত পড়ালেখা করেছি। বাবা শুধু বলতেন কাউকে কষ্ট না দিতে। বলতেন মধ্যপন্থা অবলম্বন না করতে। হ্যাঁ অথবা না বলতে। না জেনে কোন উত্তর না দিতে। মিথ্যা কথা না বলতে। সত্য কথা বলতে। বড়দের সম্মান করতে। ছোটদের আদর করতে। কোন কাজকে ছোট না ভাবতে। নিজের কাজ নিজে করতে। টাকার পেছনে না ঘুরতে। বেয়াদব থেকে আদব শিখতে। দিনে রাতে সকাল হতে ঘুমানো পর্যন্ত কিভাবে ইসলামী নিয়ম মেনে চলতে হয় সব কিছু রাতে ঘুমানোর সময় শেখাতে ন। এসব এখনো সচল আছে আমার মনে প্রাণে।
বাবার রেখে যাওয়া আদর্শ এবং শিখিয়ে যাওয়া কথা, চাল চলন, বচন এখনও মেনে চলি। তাই শারীরিক ভাবে বাবা পাশে না থাকলেও প্রতিদিন প্রতিক্ষণ বাবার পথেই চলি। আমি দোয়া করি যেনো আমার বাবা জান্নাত বাসী হোন। সবার কাছে সেই দোয়ায় প্রার্থনা করছি। আল্লাহর বাবা কে ভালোই রাখুন এ দোয়া আজীবন কামনা করছি। আমিন।
জাবেদ ইকবাল চৌধুরী,
সম্পাদক ও প্রকাশক,
টেকনাফ ভিশন ।

Comment here