এক্সক্লুসিভটেকনাফসারাদেশ

মাঘের শুরুতেই টেকনাফে কাঁচা আম

মুহাম্মদ জুবাইর:
এখনো চলছে মাঘ মাস। টেকনাফের বিভিন্ন হাট বাজারে মৌসূমের আগেই দেখা গেছে
কাঁচা আম। তবে আগাম ফল হিসেবে বিক্রি হচ্ছে খুব চড়া মূল্যে। কেজি ৪/৫শ
টাকা। তারপরও চাহিদা বেশী। অবিশ্বাস্য হলেও এই কনকনে শীতের মধ্যেও টেকনাফ
বাজারে বিক্রি হচ্ছে এখন কাঁচা আম।
২৩ জানুয়ারী বিকালে টেকনাফ পৌরসভার বাস ষ্টেশন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে,
রাস্তার পাশে ফুটপাতে বসে বিভিন্ন ধরনের মৌসুমী ফল বিক্রি করছেন
বিক্রেতারা। তার মধ্যে ক্রেতাদের নজর কাড়ছে কাঁচা আম। চড়া দামে বিক্রি
হওয়ায় অনেকে ইচ্ছে থাকা সত্বেও আম ক্রয় করতে পারছেনা। আবার অনেকে দাম
শুনে ফিরে যাচ্ছেন।
কালের বিবর্তনে এবং জলবায়ুর পরিবর্তনে আবহমান বাংলার আরও ২টি ঋতুর
পরবর্তী গ্রীষ্মের ফল আম বাজারে আসা শুরু হওয়ায় সাধারণ মানুষ হিসেব
মিলাতে পারছেননা। এসব দেখে গ্রামাঞ্চলের বয়স্করা তো বলেই ফেলছেন- ‘কি
কলিযুগেই না এসেছি আমরা’।
সাধারণতঃ টেকনাফের গ্রামাঞ্চলে ফালগুন মাসে আম গাছে ফুল আসতে দেখা যেত।
পাঠ্যপুস্তকেও কবি লিখেছেন- ‘ফালগুন বিকশিত কাঞ্চন ফুল-ডালে ডালে পুঞ্জিত
আ¤্র মুকুল’। এখন চলছে মাঘ মাস। চৈত্র মাস আসতে আরও অনেকদিন বাকি থাকতেই
টেকনাফের বাজারে আগাম কাঁচা আম আসতে শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায়
টেকনাফ বাস স্টেশনে দেখা গেছে থোকা থোকা কাঁচা আম।
ব্যবসায়ী মোঃ হাছান প্রকাশ লেডু বলেন, টেকনাফ সদর ইউনিয়নের দক্ষিন
লেংগুরবিল গ্রামের মৃত মকতুল হোছনের এক ছেলের কাছ থেকে এসব আম সংগ্রহ
করেছি। এক কেজিতে ৫ থেকে ৭টি পর্যন্ত হয়। প্রতি কেজি ৪/৫শ টাকা পর্যন্ত
বিক্রি হচ্ছে।
ব্যবসায়ী ছৈয়দ করিম জানান, প্রতিবছর উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম থেকে তিনি
আগাম ফল কিনে এনে বাজারে বিক্রি করেন। চলতি বছর আগাম আম এনে বিক্রি করছে।
কেনা আমগুলো আকারের বড় হওয়ায় এখন প্রতি কেজি আম ৪/৫শ টাকায় বিক্রি করছেন।
মৌসুমের প্রথম ফল কাঁচা আম বাজারে আসায় ক্রেতাদের প্রচুর চাহিদাও রয়েছে।
কৃষি অফিস সুত্রে জানা যায়, ২২ জানুয়ারী হাবির ছড়া এলাকার আবদুল গফুর ও
আবদুস সমদ এর নিজস্ব আগাম জাতের আম বাগান চট্রগ্রাম পাহাড়তলী কৃষি
গবেষনাগার এরর প্রধান বেজ্ঞানিক কর্মকর্তা, ড. হারুন রশিদ, বেজ্ঞানিক
কর্মকর্তা, কামরুল হাসান, টেকনাফে আগাম জাতের বিভিন্ন আম বাগান পরিদর্শন
করেছেন। তাদের মতে এটি আবহাওয়ার কারনে হতে পারে। এনিয়ে আরো গবেষনা করা
হবে।
উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা শফিউল আলম বলেন, ‘পৌষ মাসের প্রথম দিকে
উপজেলার অধিকাংশ আমগাছে মুকুল এসেছে। সাধারণত চৈত্র মাসের শেষের দিকে আম
বাজারে আসার কথা থাকলেও অসময়ে বাজারে কাঁচা আম আসার খবরটি অবিশ্বাস্য
হলেও সত্য। তিনি আরো জানান দেশীয় জাতের আম গাছ প্রায় বিলুপ্তির পথে। তাই
আগাম জাতের এই গাছ গুলো নিয়ে গবেষনা করতে চট্রগ্রাম পাহাড়তলী কৃষি
গবেষনাগারের প্রধান বেজ্ঞানিক কর্মকর্তা, ড. হারুন রশিদ, বেজ্ঞানিক
কর্মকর্তা, কামরুল হাসান, টেকনাফে আগাম জাতের বিভিন্ন আম বাগান পরিদর্শন
করেছে।

Comment here