জাতীয়রাজনীতিসারাদেশ

সম্মেলনে এক মঞ্চেই কাঁদলেন আ’লীগের ৩ প্রভাবশালী নেতা

সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন ছিল বৃহস্পতিবার। সিলেট আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে আয়োজিত এ সম্মেলনে বক্তব্য দিতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন সিলেট আওয়ামী লীগের তিন প্রভাবশালী নেতা।

তারা হলেন- সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সদ্য সাবেক হওয়া সভাপতি ও সাবেক সিটি মেয়র বদরউদ্দিন আহমদ কামরান, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাবেক সংসদ সদস্য শফিকুর রহমান চৌধুরী ও মহানগর আওয়ামী লীগের সদ্য সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসাদ উদ্দিন আহমদ। এরা তিনজনই সিলেট আওয়ামী লীগের দীর্ঘদিনের কাণ্ডারি। তারা সবাই নতুন কমিটি থেকে বাদ পড়েছেন।

সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সদ্য সাবেক সভাপতি ও কেন্দ্রীয় সদস্য বদরউদ্দিন আহমদ কামরান কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘আপনাদের সবার দোয়ায় আমি এখনও বেঁচে আছি। সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে হয়তো এটিই আমার শেষ বক্তব্য।’ তার এই বক্তব্যে কান্নায় চোখ ভিজে যায় সমর্থকদের।

ভুলত্রুটির ক্ষমা চেয়ে কামরান কারাগারের স্মৃতিচারণ করে জীবনের শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত দলের জন্য কাজ করার অঙ্গীকার করেন। বলেন, ‘দেশের মধ্যে অশুভ শক্তি সবসময় ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। মহানগর সভাপতি হিসেবে কাজ করতে গিয়ে আমি আমার সহকর্মী ইব্রাহিমকে হারিয়েছি। ১৮ মাস জেল খেটেছি। কুমিল্লা কারাগারে থাকাবস্থায় আমি আমার মাকে হারিয়েছি। দীর্ঘ এই সময় মহানগরের দায়িত্ব পালনের সব সফলতা আপনাদের, সব ব্যর্থতা আমি কাঁধে তুলে নিলাম।’

সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরী দলের জন্য ত্যাগ স্বীকারের কথা স্মরণ করে কেঁদে কেঁদে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে অতীতে নিজের সংসদীয় আসন ছেড়ে দিয়েছি। ভবিষ্যতেও নেত্রীর নির্দেশে কাজ করব।’

আর কান্নাজড়িত কণ্ঠে সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদ উদ্দিন আহমদ বলেন, ‘শূন্যহাতে সংগঠনের দায়িত্ব নিয়ে আজ সবচেয়ে সংগঠিত মহানগর আওয়ামী লীগ। ভবিষ্যতে আর দায়িত্ব পাব কিনা জানি না। তবে আমৃত্যু দলের জন্য কাজ করে যাব।’

তাদের কান্না ছুঁয়ে যায় নিজ নিজ কর্মী-সমর্থকদের। সম্মেলনস্থলে এক আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। পরে ঘণ্টাখানেক পর নতুন কমিটি ঘোষণা করেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। ঘোষিত কমিটিতে ঠাঁই হয়নি এ তিন নেতার।

সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, আবদুর রহমান, প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইমরান আহমদ, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, অ্যাডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ, কেন্দ্রীয় সদস্য সুজিত রায় নন্দী ও অধ্যাপক মো. রফিকুর রহমান প্রমুখ।

Comment here