এক্সক্লুসিভটেকনাফ

হ্নীলায় বিভিন্ন স্থানে লোকালয়ে রোহিঙ্গা বসতি : সংঘাতের আশংকা

সাদ্দাম হোসাইন / মোঃ রফিক / ফরিদুল আলম : নির্যাতন-নিপীড়নের শিকার হয়ে বাংলাদেশ সরকারের মানবিকতায় নির্দিষ্ট স্থানে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বিশেষ একটি অংশ এখন লোকালয়ে বসত-বাড়ি তৈরী করায় স্থানীয় বাসিন্দাদের মনে আতংক দেখা দিয়েছে। এদের কারণে জনবসতি ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের স্বাভাবিক পরিবেশ ব্যাহত হলেও তদারককারী এনজিও সংস্থা ও ব্যবসায়ী মনোভাবাপন্ন কতিপয় ব্যক্তিদের কারণে তারা স্থানীয় জনসাধারণের সাথে মিলে গেলে নানা অপরাধ প্রবণতা বৃদ্ধি পাওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে।
তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, বিগত ২০১৭ ইং ২৫ আগষ্ট মিয়ানমার সীমান্ত চৌকিতে স্বশস্ত্র সন্ত্রাসী হামলার পর মুসলিম সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের উপর নির্য়াতনের ফলে বাংলাদেশ সরকার মানবিক বিবেচনায় সীমান্তের উখিয়া-টেকনাফ পয়েন্টে প্রায় ১০লক্ষাধিক রোহিঙ্গার অনুপ্রবেশ ঘটে। টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা জাদিমোরা, নয়াপাড়া, লেদা, আলীখালী, রইক্ষ্যং, চাকমার কূল ও বাহার ছড়ায় অস্থায়ী রোহিঙ্গা ক্যাম্প সমুহের পাশাপাশি প্রত্যন্ত এলাকায় দুই লক্ষাধিক রোহিঙ্গা নাগরিক অবস্থান নেয়। সরকার প্রাথমিকভাবে এসব রোহিঙ্গাদের উপরোক্ত স্থানে রাখে। নয়াপাড়া শরণার্থী ক্যাম্পের কতিপয় স্বশস্ত্র সন্ত্রাসী গ্রুপ সন্ত্রাসী কর্মকান্ড, অপহরণ ও মুক্তিপণ বাণিজ্যের কারণে এসব রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে নিয়ে স্থানীয় জনসাধারণ এমনিতে চরম উদ্বেগের মধ্যে রয়েছে।
ইতিমধ্যে রোহিঙ্গাদের নিয়ে এলাকা ভিত্তিক বাণিজ্য চালিয়ে স্বার্থ আদায়কারী চক্র সক্রিয় হয়ে রোহিঙ্গাদের সেবায় নিয়োজিত এনজিও সংস্থা সমুহকে প্ররোচিত করে দক্ষিণ মোচনী, উত্তর মোচনী , উত্তর লেদা জুনিয়র হাইস্কুল ও বিদ্যুৎ কেন্দ্রে ঘেঁষে লোকালয়ে নতুন করে রোহিঙ্গা বস্তি গড়ে উঠছে। এতে স্থানীয় জনসাধারণ ও রোহিঙ্গাদের মধ্যে অপ্রীতিকর ঘটনার আশংকা দানা বাঁধছে। রোহিঙ্গারা কোন বিষয়ে রাজপথে নেমে ভাংচুর ও বিক্ষোভ করলে দমন করা কঠিন হয়ে পড়বে। তাই লোকালয়ে এসব রোহিঙ্গা ক্যাম্প না করে ভাসমান ও আলীখালীর রোহিঙ্গাদের অস্থায়ী ক্যাম্প সমুহের পাশ^বর্তী স্থানে বসালে ভাল হবে বলে সচেতন মহল মনে করেন।
লেদা জুনিয়র হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক জামাল উদ্দিন বলেন, নতুন রোহিঙ্গা ক্যাম্প বসানোর ফলে পায়খানার দূর্গন্ধ, তাদের যথেচ্ছা আচরণ শিক্ষার্থীদের পড়াশুনা ব্যাহত করছে। তাই দ্রুত এসব ক্যাম্প উচ্ছেদ করা জরুরী হয়ে পড়ছে। ৯নং ওয়ার্ড মেম্বার মোহাম্মদ আলী বলেন, রোহিঙ্গারা কোন সময়েই স্থানীয়দের জন্য শুভ নই। বিশেষ সুবিধাভোগী মহল রোহিঙ্গা বাণিজ্যের জন্য যেখানে-সেখানে ক্যাম্প বসিয়ে যাচ্ছে। তা উচ্ছেদ করা দরকার। এই ব্যাপারে ৮নং ওয়ার্ড মেম্বার নুরুল হুদা বলেন, যেখানে-সেখানে রোহিঙ্গা ক্যাম্প আমাদের জন্য হুমকি স্বরূপ। অথচ এলাকার বেকার লোকজনকে চাকুরী দেওয়ার কথা থাকলেও তাদের না দিয়ে বহিরাগতরা চাকুরী করছে। সুতরাং লোকালয়ের রোহিঙ্গা ক্যাম্প তুলে দেওয়ার জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ রবিউল হাসান জানান, অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গাদের ১টি নিবন্ধিত ও ৭টি অনিবন্ধিত রোহিঙ্গা ক্যাম্পে রাখা হয়েছে। নতুন রোহিঙ্গা ক্যাম্প বসানোর বিষয়টি জানা ছিলনা। উর্ধ্বতন মহলকে অবহিত করার পর উচ্ছেদের ব্যাপারে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

Comment here