কক্সবাজারটেকনাফসারাদেশ

হ্নীলা ইউপি সদস্যসহ দু’জনকে আটক, হেনস্থার প্রতিবাদে সড়কে ব্যারিকেড়

মুহাম্মদ জুবাইর, টেকনাফ:
কক্সবাজার টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের নোয়াপাড়া রেহিঙ্গা ক্যাম্পে দায়িত্বরত এপিবিএন পুলিশ টহলদল কর্তৃক হয়রানী, মারধর ও স্থানীয় ইউপি সদস্যসহ ওই যুবককে আটকের প্রতিবাদে কক্সবাজার-টেকনাফ প্রধান সড়কে ব্যারিকেড সৃষ্টি করেছে বিক্ষুব্ধ জনতা।

এসময় এলাকার শত শত যুবক ও ছাত্রলীগের কর্মীরা সড়কে গাছ ফেলে ব্যারিকেড সৃষ্টি ও টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ মিছিল প্রদর্শন করে। ঘন্টাব্যাপী প্রতিবাদের মুখে হ্নীলা ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডের সদস্য মোঃ আলী ও হয়রানির শিকার নয়াপাড়ার জহির আহমদের পুত্র জাফর আলমকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

৭ অক্টোবর বুধবার বেলা ১১ টার দিকে নয়াপাড়া জেলে ঘাট এলাকার প্রধান সড়কে উক্ত প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।

এসময় রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এই জনপদে স্থানীয়দের বিভিন্ন ভাবে হয়রানির অভিযোগ তুলে শ্লোগান ও বক্তব্য রাখেন স্থানীয়রা।

হয়রানির শিকার জাফর আলম জানান, গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় প্রয়োজনীয় কাজ শেষে বাড়ি ফিরছিলাম। এসময় নয়াপাড়া মোছনী রোহিঙ্গা ক্যাম্পে দায়িত্বে নিয়োজিত এপিবিএন পুলিশের টহল দলের সামনে পড়লে আমাকে তল্লাশির নামে শরীরের বিভিন্ন অংশে হাত দিয়ে নাজেহাল করে। শুধু তাই নই, পরিহিত শার্ট ও প্যান্ট এবং প্যান্টের বেল্টও খুলে নেয়া হয় এবং মানি ব্যাগে থাকা পাঁচ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। পরে প্যান্ট-শার্ট ও মানিব্যাগ ফিরিয়ে দিলেও ব্যাগে ৫ হাজার টাকা পায়নি। আমার টাকার কথা জিজ্ঞেস করলে চড় তাপ্পড়ের হুমকী দেয়। নিরূপায় হয়ে আমি বাড়িতে ফিরে যায়।

বিষয়টি সকালে জাফর আলম স্থানীয়দের জানালে মুহুর্তে চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে এবং উত্তেজিত হয়ে উঠে ছাত্র ও যুবকরা। এক পর্যায়ে স্থানীয় মেম্বার মোঃ আলী বিষয়টি জানতে পেরে উপস্থিত জনতাকে ধৈর্য্য ধরার পরামর্শ দেন। এবং জাফরসহ ক্যাম্পের পুলিশ কর্মকর্তাকে অবহিত করতে গেলে কোন কিছু বলার আগেই জাফরকে ব্যাপক মারধর করে আটক করে এবং মেম্বারকেও বসিয়ে রাখে। তাদের আটকের খবর ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয়রা তাৎক্ষণিক ভাবে সড়কে ব্যারিকেড সৃষ্টি করে এবং টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে দেয়। এসময় কক্সবাজার – টেকনাফ সড়কের উভয় পাশে যানবাহন আটকে পড়ে। দূর্ভোগে পড়তে হয় যাত্রী ও পথচারীদের।

খবর পেয়ে প্রায় ঘন্টা শেষে হ্নীলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রাশেদ মাহমুদ আলী ঘটনাস্থলে এসে ঘটনার সুষ্ঠু বিচারের আশ্বাস দিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন এবং সড়কের ব্যারিকেড উঠিয়ে নেয়।

পরে চেয়ারম্যানসহ পুলিশ ব্যারাকে গিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে শান্তিপূর্ণ সমাধান হয় এবং ভবিষ্যতে এধরনের ঘটনা পুনরাবৃত্তি না করারও আশ্বাস দেওয়া হয়।

এব্যাপারে মোছনি নয়াপাড়া নিবন্ধিত রোহিঙ্গা ক্যাম্পের সাব ইনস্পেকটর রাকিবুল ইসলামের কাছে মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি একটি মিটিংএ আছেন বলে কল কেটে দেন।

স্থানীয় মেম্বা মোঃ আলী জানান, বিষয়টি ভুল বোঝাবুঝির মাধ্যমে হয়েছে। ভবিষ্যতে এধরনের ঘটনা পুনরাবৃত্তি হবেনা বলে আশ্বস্ত করেছেন।

হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাশেদ মাহমুদ আলী বলেন, স্থানীয়দের সাথে এপিবিএন পুলিশের মধ্যে অনাকাঙ্খিত ঘটনার সৃষ্টি হয়েছিল। এটি বসে দীর্ঘক্ষন আলাপ আলোচনার ভিত্তিতে সমাধান করা হয়েছে। ভবিষ্যতে এধরনের ঘটনা যাতে না ঘটে তাও বলা হয়েছে। রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকায় মাদক ও সন্ত্রাসীদের প্রতিরোধে এপিবিএন সদস্যদের এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতা করা হবে।

Comment here