জাতীয়দৃষ্টিপাত

৫৭ ধারায় মামলা নিতে পুলিশ সদর দপ্তরের পরামর্শ লাগবে

নিজস্ব প্রতিবেদক
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) আইনে মামলা করার আগে পুলিশ সদর দপ্তরের আইন শাখার পরামর্শ নিতে হবে। গতকাল বুধবার বিকেলে পুলিশের মহাপরিদর্শক এ কে এম শহীদুল হকের সভাপতিত্বে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অনির্ধারিত এক বৈঠকে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। পুলিশ সদর দপ্তরের আদেশে এ কথা জানানো হয়েছে। রাতেই নির্দেশনা পুলিশের সব কটি ইউনিটিতে পাঠানো হয়েছে।

পরামর্শে বলা হয়েছে, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (সংশোধন) আইন ২০১৩-এর ৫৭ ধারার বর্ণিত অপরাধ সংগঠনসংক্রান্ত মামলা করার বিষয়ে বিভিন্ন মিডিয়া ও সংবাদমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রচারিত ও প্রকাশিত হচ্ছে। কতিপয় ক্ষেত্রে বিভিন্ন থানায় এ ধারায় করা মামলার ক্ষেত্রে আইনের যথাযথ প্রয়োগ হচ্ছে না মর্মে অভিযোগ উত্থাপিত হচ্ছে। আইনের যথাযথ প্রয়োগের মাধ্যমে অপরাধীকে আইনের আওতায় আনা এবং নিরীহ ব্যক্তি যাতে হয়রানির শিকার না হয় তা নিশ্চিত করতে মামলা করার আগে যে বিষয়গুলো অনুসরণ করতে হবে—(ক) তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (সংশোধন) আইন ২০১৩-এর ৫৭ ধারার সংগঠিত অপরাধসংক্রান্ত মামলা রুজুর ক্ষেত্রে অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে, (খ) অভিযোগ সম্পর্কে কোনো ধরনের সন্দেহের উদ্রেক হলে তাত্ক্ষণিকভাবে সংশ্লিষ্ট থানায় জিডি এন্ট্রি করে অভিযোগের সত্যতা সম্পর্কে যাচাই-বাছাই করতে হবে, (গ) মামলা করার আগে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের আইন শাখার আইনগত পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে, (ঘ) কোনো নিরীহ ব্যক্তি যাতে হয়রানির শিকার না হয় তা নিশ্চিত করতে হবে।

এ বিষয়ে পুলিশ সদর দপ্তরের সিনিয়র তথ্য অফিসার এ কে এম কামরুল আহছান বলেন, বৈঠকে দেশে ৫৭ ধারায় মামলা দায়ের নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। এ সময় আইজিপি কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেন যে ৫৭ ধারায় মামলা করতে হলে পুলিশ সদর দপ্তরের আইন শাখার পরামর্শ নিতে হবে। সারা দেশে এই নির্দেশনা পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।

বৈঠকে উপস্থিত পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘খুলনায় ছাগল নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট শেয়ার দেওয়ায় ৫৭ ধারার মামলার জের ধরে এক সাংবাদিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এ রকম ঘটনায় পুলিশের সুনাম ক্ষুণ্ন হয়। রাজনৈতিক কিছু নেতা এই আইনের সুবিধা নিয়ে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করছেন। থানা পুলিশও অতি উৎসাহে মামলা নিচ্ছে। আইজিপি স্যার কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, নির্দেশনা অমান্য করে মামলা নিলে সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বৈঠকে ইতিমধ্য ৫৭ ধারায় যেসব মামলা হয়েছে সেসব নিয়েও আলোচনা হয়েছে। তদন্ত করে সেগুলো দ্রুত নিষ্পত্তির তাগাদা দেওয়া হয়েছে। ’ ওই কর্মকর্তা আরো বলেন, খুলনার ডুমুরিয়া থানার ওসি সুকুমার বিশ্বাসকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। সেই সঙ্গে মামলা নেওয়ার পেছনে কোনো রহস্য আছে কি না তা খতিয়ে দেখতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

Comment here