টেকনাফ ভিশন ডেস্ক:টঙ্গীর তুরাগ নদীর তীরে তাবলীগ জামাতের সর্ববৃহৎ জমায়েত বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব শুরু হয়েছে। শুক্রবার বাদ ফজর আমবয়ানের মধ্য দিয়ে শুরু হয় এ বিশ্ব ইজতেমা।
রোববার আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে ইজতেমার প্রথম পর্ব শেষ হবে। এরপর চারদিন বিরতি দিয়ে ২০ জানুয়ারি শুরু হবে দ্বিতীয় পর্ব। ২২ জানুয়ারি আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে তা শেষ হবে।
প্রথম পর্বে ২৭টি খিত্তায় অবস্থান নেবেন ১৭ জেলার মুসল্লিরা। খিত্তাগুলো হলো ঢাকার জন্য (খিত্তা ১ থেকে ৫), টাঙ্গাইল (৬, ৭ ও ৮), ময়মনসিংহ (৯, ১০ ও ১১), মৌলভীবাজার (১২), ব্রাহ্মণবাড়িয়া (১৩), মানিকগঞ্জ (১৪), জয়পুরহাট (১৫), চাঁপাইনবাবগঞ্জ (১৬)।
এছাড়া রংপুর (১৭), গাজীপুর (১৮ ও ১৯), রাঙামাটি (২০), খাগড়াছড়ি (২১), বান্দরবান (২২), গোপালগঞ্জ (২৩), শরীয়তপুর (২৪), সাতক্ষীরা (২৫) ও যশোর (২৬ ও ২৭)।
ইজতেমায় অস্থায়ীভাবে খুঁটি স্থাপনের মাধ্যমে চারশ বৈদ্যুতিক বাতির ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিভিন্ন স্থানে যোগাযোগ স্থাপনের লক্ষে ছয়টি টেলিফোন লাইন ও কয়েকটি হট লাইন স্থাপন, বিনামূল্যে চিকিৎসার জন্য নিয়ন্ত্রণ কক্ষের সামনে ৫৪টি চিকিৎসা সেবা কেন্দ্র এবং হামদর্দের একটি ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প স্থাপন করা হয়েছে।
এদিকে, ইজতেমা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পৃথক নিয়ন্ত্রণ কক্ষ স্থাপন করেছে গাজীপুর সিটি করপোরেশন, জেলা প্রশাসন, র্যাব, পুলিশ, আনসার ও ভিডিপি। নিরাপত্তার জন্য তুরাগ নদীতে টঙ্গী ব্রিজ ও কামারপাড়া ব্রিজের নিচে দুই পাশে বাঁশ দিয়ে দুইটি বেষ্টনী নির্মাণ করা হয়েছে। এছাড়াও রয়েছে ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরাসহ র্যাবের নয়টি ও পুলিশের পাঁচটিসহ মোট ১৪টি ওয়াচ টাওয়ার।
ইজতেমায় যাতায়াতকারী মুসল্লিদের জন্য বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। বিশেষ ট্রেনগুলো ১৩ থেকে ১৫ জানুয়ারি ঢাকা-টঙ্গী, জামালপুর-টঙ্গী, লাকসাম-টঙ্গী, আখাউড়া-টঙ্গী, ময়মনসিংহ-টঙ্গী রুটে চলাচল করবে।
Special_Train_Ijtema.jpg
ইজতেমার জন্য বিশেষ ট্রেন, ফাইল ছবি।
বুধবার এক সরকারি তথ্য বিবরণীতে বলা হয়, যাত্রীদের টিকেট সংগ্রহের মাধ্যমে ট্রেনে ভ্রমণ করতে হবে। ১০ জানুয়ারি দুপুরের পর থেকে ১৫ জানুয়ারি আখেরি মোনাজাতের আগের দিন পর্যন্ত ঢাকা অভিমুখী সব ট্রেনের টঙ্গী স্টেশনে দুই মিনিট বিরতি থাকবে।
ইজতেমা উপলক্ষে আগামী ১৩ জানুয়ারি শুক্রবার সূবর্ণ এক্সপ্রেস ও ১৫ জানুয়ারি রোববার মহানগর এক্সপ্রেস ট্রেন সাপ্তাহিক বন্ধের দিনও চলাচল করবে।
১৫ জানুয়ারি রোববার আখেরি মোনাজাতের দিন সূবর্ণ এক্সপ্রেস, মহুয়া এক্সপ্রেস এবং তুরাগ এক্সপ্রেস-১, ২, ৩, ৪ এবং ঢাকা-কুমিল্লা, ঢাকা-টঙ্গী, ঢাকা-জয়দেবপুর ও ঢাকা-নারায়ণগঞ্জের মধ্যে ডেমু (কমিউটার) ট্রেনগুলো চলাচল বন্ধ থাকবে।
আখেরি মোনাজাতের পরদিন অর্থাৎ ১৬ জানুয়ারি টিকেটধারী মুসল্লিদের টঙ্গী স্টেশন থেকে ট্রেনে আরোহণের সুবিধার্থে সুন্দরবন, পারাবত, ধুমকেতু, এগারসিন্দুর প্রভাতি, অগ্নিবীণা, একতা, কিশোরগঞ্জ, জয়ন্তিকা, সিল্কসিটি, উপকূল, কালনী, মহানগর প্রভাতি, রংপুর, যমুনা, সিরাজগঞ্জ, হাওর ও মহানগর গোধূলী এক্সপ্রেস ট্রেন টঙ্গী স্টেশনে দুই মিনিট বিরতি দেবে।
অপরদিকে, মুসল্লিদের যাতায়াত নির্বিঘ্ন করতে যানবাহন পার্কিং সংক্রান্ত এক নির্দেশনা জারি করেছে ডিএমপি। এতে জানানো হয়, বিশ্ব ইজতেমা চলাকালীন রেইনবো ক্রসিং হতে আব্দুল্লাহপুর হয়ে ধউর ব্রিজ পর্যন্ত এবং রামপুরা ব্রিজ হতে প্রগতি সরণী পর্যন্ত রাস্তা ও রাস্তার পাশে কোনো যানবাহন পার্কিং করা যাবে না।
তবে, বিভাগ অনুযায়ী নির্ধারিত পার্কিংয়ের স্থানে মুসল্লিবাহী যানবাহন পার্কিং করতে পারবেন। সে সময় অবশ্যই গাড়ির চালক/হেলপার গাড়িতে অবস্থান করবেন এবং মালিক ও চালক একে অপরের মোবাইল ফোন নম্বর নিয়ে রাখবেন।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, বিদেশগামী বা বিদেশ ফেরত যাত্রীদের বিমানবন্দরে আনা-নেওয়ার জন্য ট্রাফিক উত্তর বিভাগের ব্যবস্থাপনায় চারটি বড় আকারের মাইক্রোবাস নিকুঞ্জ-১ আবাসিক এলাকার গেটে ভোর ৪টা থেকে অপেক্ষায় থাকবে।
এছাড়া ইজতেমায় আগত মুসল্লিদের শুভেচ্ছা জানিয়ে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।
Comment here