আন্তর্জাতিকরোহিঙ্গা সমাচার

ইয়াঙ্গুনে মালয়েশিয়ার ত্রাণবাহী জাহাজ ‘মিয়ানমারে রোহিঙ্গা নেই’ স্লোগান বন্দরে

টেকনাফ ভিশন ডেস্ক  :

‘মিয়ানমারে রোহিঙ্গা নেই’ স্লোগান বন্দরে

মিয়ানমারের ইয়াঙ্গুনে তিলাওয়া বন্দরের সামনে গতকাল রোহিঙ্গাবিরোধী ব্যানার হাতে কট্টরপন্থী বৌদ্ধরা। ছবি : এএফপি

সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, প্রথমে জাহাজটিকে নিজেদের জলসীমায় ঢুকতে দিতে অস্বীকার করে মিয়ানমার সরকার। ফলে পরিকল্পনা অনুযায়ী রোহিঙ্গা অধ্যুষিত রাখাইন রাজ্যের রাজধানী সিত্তের বন্দরে জাহাজটি ভিড়তে পারেনি। পরে আলোচনা সাপেক্ষে সেটি ইয়াঙ্গুনের তিলাওয়া বন্দরে নোঙর করে। মালয়েশিয়ার পাঠানো সহায়তাসামগ্রী এ বন্দরে খালাসের পর সেগুলো রাখাইনের উত্তরাংশে পাঠানো হবে, যেখানে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী রোহিঙ্গাদের অস্তিত্ব নির্মূলে গণহত্যা আর ধর্ষণ চালিয়েছে বলে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে অভিযোগ রয়েছে। তবে এসব সহায়তা কেবল রোহিঙ্গাদের মধ্যে নয়, নৃতাত্ত্বিক বৌদ্ধ রাখাইনদের মধ্যেও বিতরণ করতে হবে, এমন দাবি জানিয়েছে মিয়ানমার সরকার।

রোহিঙ্গাদের জন্য পাঠানো মালয়েশীয় সহায়তার কিছুটা অংশ ইয়াঙ্গুনে খালাসের পর বাকিটা বাংলাদেশে  রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরে পাঠানো হবে।

গতকাল তিলাওয়া বন্দরে জাহাজ ভেড়ার সময় সেখানে ছিলেন মিয়ানমারের সমাজকল্যাণমন্ত্রী। জাহাজের ডেকে সে সময় ভিড় করে স্বাস্থ্যকর্মী ও জাতীয়তাবাদী আন্দোলনকর্মীরা। ‘কোনো রোহিঙ্গা নেই’ লেখা প্ল্যাকার্ড নিয়ে সেখানে হাজির ছিলেন প্যাট্রিয়টিক মিয়ানমার মংকস ইউনিয়নের নেতারাও। রোহিঙ্গাবিরোধী সংগঠনটির ইয়াঙ্গুন অংশের নেতা তুসেইতা বলেন, ‘আমরা তাদের (মালয়েশীয়দের) জানাতে চাই যে আমাদের এখানো কোনো রোহিঙ্গা নেই। ’

মিয়ানমার সরকার ও কট্টরপন্থী জাতীয়তাবাদীরা রোহিঙ্গাদের নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠীর স্বীকৃতি দেয় না, বরং তাদের অবৈধ অভিবাসী আখ্যা দেয়। ফলে ন্যূনতম অধিকার পাওয়া দূরে থাক, উল্টো রোহিঙ্গারা প্রচণ্ড নিপীড়নের শিকার। ২০১২ সালের সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা তাদের আরো বিপর্যয়ের মধ্যে ফেলে দেয়। গত অক্টোবরে রোহিঙ্গা অধ্যুষিত রাখাইনের সীমান্ত এলাকায় সন্ত্রাসী হামলায় কয়েকজন পুলিশ সদস্য নিহত হওয়ার পর গোটা এলাকা অবরুদ্ধ করে গণহত্যা আর ধর্ষণ চালিয়েছে সেনাবাহিনী, এমন অভিযোগ পাওয়া গেলেও সরকার সেটাকে গণমাধ্যমের অত্যুক্তি আর বানোয়াট খবর বলে দাবি করে আসছে। এতে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সমালোচনা তীব্রতর হতে থাকে। প্রতিবেশী মালয়েশিয়াও একসময় মিয়ানমার সরকারের বিরুদ্ধে কড়া কথা বলে। এর প্রতিক্রিয়া হিসেবে রোহিঙ্গাদের জন্য তাদের পাঠানো সহায়তা গ্রহণে প্রথমে অস্বীকৃতি জানায় মিয়ানমার সরকার, এমনটা মনে করেন বিশ্লেষকরা। সূত্র : এএফপি।

Comment here