জাতীয়

এস এম সুলতানের ৯৫তম জন্মবার্ষিকী আজ

টেকনাফ ভিশন ডেস্ক :

   

বিশ্ববরেণ্য চিত্রশিল্পী এস এম সুলতানের ৯৫তম জন্মবার্ষিকী আজ। ১৯২৪ সালের ১০ আগস্ট নড়াইল শহরতলির মাছিমদিয়ায় রাজমিস্ত্রি পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন তিনি।

ছোটবেলায় শিল্পী সুলতানের নাম ছিল ‘লাল মিঞা’। চার-পাঁচ বছর বয়স থেকেই তার মধ্যে ছিল ছবি আঁকার প্রবল ঝোঁক। সে বয়সে পুইয়ের পাকা ফলের রঙ আর কাঁচা হলুদ মিশিয়ে ছবি আঁকতেন তিনি। মাত্র ১১ বছর বয়সে ড. শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের একটি প্রতিকৃতি এঁকে তাক লাগিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। নড়াইলের জমিদার ধীরেন্দ্রনাথ রায় তার আঁকা ছবি দেখে মুগ্ধ হন। ১৯৪৭ সালে ভারতের সিমলায় তার প্রথম একক চিত্রপ্রদর্শনী হয়। ১৯৫১ সালে নিউইয়র্কে আন্তর্জাতিক শিক্ষা সম্মেলনে পাকিস্তানের প্রতিনিধিত্ব করেন সুলতান। ১৯৫৫ সালে সবার অলক্ষ্যে করাচি থেকে তিনি ঢাকায় চলে আসেন। ১৯৬৮ সালে প্রতিষ্ঠা করেন স্কুল অব আর্টস।

শিল্পী এসএম সুলতান বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ঘুরেছেন। সেসব দেশে নিজের আঁকা ছবির প্রদর্শনী করেছেন এবং বেশ সুনামও কুড়িয়েছেন। দেশে চারটি দলবদ্ধ, দুটি একক চিত্রপ্রদর্শনী এবং লন্ডনে একটি দলবদ্ধ প্রদর্শনী করেছেন তিনি। তেলরঙের মাধ্যমে ছবি এঁকেছেন। জলরঙ, কাঠ-কয়লা দিয়েও ড্রইং করেছেন। অকৃতদার এসএম সুলতান ছিলেন প্রচারবিমুখ ও সংসারবিরাগী।

বরেণ্য এ শিল্পী কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ‘ম্যান অব দ্য ইয়ার’, নিউইয়র্কের বায়োগ্রাফিক্যাল সেন্টার থেকে ‘ম্যান অব অ্যাচিভমেন্ট’ এবং এশিয়া উইক পত্রিকা থেকে ‘ম্যান অব এশিয়া’ খেতাব লাভ করেন। এ ছাড়া তিনি ১৯৮২ সালে একুশে পদক ও ১৯৯৩ সালে স্বাধীনতা পদকে ভূষিত হন। তিনি ১৯৮৪ সালে বাংলাদেশ সরকারের রেসিডেন্ট আর্টিস্ট স্বীকৃতি এবং ১৯৮৬ সালে বাংলাদেশ চারুশিল্পী সংসদ সম্মাননা পান।

১৯৯৪ সালের ১০ অক্টোবর যশোর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে দেহত্যাগ করেন। নড়াইল শহরের কুড়িগ্রামে সুলতান কমপ্লেক্স চত্বরে চিরনিদ্রায় শায়িত রয়েছেন বাংলাদেশের এ কিংবদন্তি শিল্পী।

শিল্পীর জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে নড়াইলে এস এম সুলতান ফাউন্ডেশন, জেলা শিল্পকলা একাডেমি, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটসহ বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন নানা কর্মসূচি নিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে শিল্পীর সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ, কোরআনখানি, দোয়া-মাহফিল, শিশুদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণ।

Comment here