কক্সবাজারক্রাইমজাতীয়টেকনাফসারাদেশ

ওসি প্রদীপ, লিয়াকত সহ ৭ জন জেল হাজতে

মুহাম্মদ জুবাইর:
কক্সবাজার টেকনাফ শামলাপুর মেরিন ড্রাইভে পুলিশের গুলিতে সেনাবাহনীর (অব:) মেজর সিনহা মোঃ রাশেদ খানের মৃত্যুর ঘটনায় কক্সবাজার আদালতে দায়ের করা মামলায় টেকনাফ মডেল থানার প্রত্যাহারকৃত ওসি প্রদীপ কুমার দাসকে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) হেফাজতে কক্সবাজার আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। বিকাল ৫টার দিকে তাকে বহন কারী আইনশৃংখলা বাহিনীর গাড়ী কক্সবাজার আদালত চত্বরে পৌঁছেন। অপরদিকে লিয়াকতসহ অন্য ৬জন আসামীরাও আদালতে হাজির হয়। আদলত তাদের জামিন না মঞ্জুর করে জেল হাজতে প্রেরনের নির্দেশ দেয়।

জেলা হাজতে পাঠানো আসামীরা হলেন, টেকনাফ থেকে প্রত্যাহারকৃত ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, বাহারছরা শামলাপুর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের প্রত্যাহারকৃত পরিদর্শক লিয়াকত আলী (৩১), এসআই নন্দলাল রক্ষিত, কনস্টেবল সাফানুর করিম, কনস্টেবল কামাল হোসেন, কনস্টেবল আবদুল্লাহ আল মামুন, এএসআই লিটন মিয়া, এসআই টুটুল। করোনাকালীন হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী ৪ জন করে ২ দফায় আসামীদের হাজত খানা থেকে কাঠগড়ায় আনা হয়।

আসামিদের পক্ষে এডভোকেট মোহাম্মদ জাকারিয়া বাদী পক্ষে এডভোকেট রাখাল চন্দ্র মিত্র জামিন আবেদন শুনানি করেন। রাষ্ট্র পক্ষে কোর্ট ইন্সপেক্টর প্রদীপ কুমার দাশ।

মামলার এজাহারনামীয় ২জন আসামী আদালতে সেরেন্ডার করেনি। তারা হচ্ছেন, ৮নং আসামী এসআই টুটুল ও ৯নং আসামী কনস্টেবল মো: মোস্তফা। আসামী পক্ষের আইনজীবি ঐডভোকেট মোঃ জাকারিয়া বলেছেন ৮নং আসামী এসআই টুটুল ও ৯নং আসামী কনস্টেবল মো: মোস্তফা নামে কোন পুলিশ সদস্য জেলা পুলিশে নেই।

সুত্রে জানা যায়, ৩১জুলাই সেনাবাহীনর (অব:) মেজর সিনহা মো: রাশেদ খাঁন পুলিশের গুলিতে নিহতের ঘটনায়, নিহত মেজর (অবঃ) সিনহা মোঃ রাশেদ খানের বড়বোন ও মোঃ শামসুজ্জামানের সহধর্মিণী শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস (৪২) বাদী হয়ে ৫ আগস্ট সকালে ৯ জনকে আসামী করে কক্সবাজার আদালতে টেকনাফের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। মামলায় মেজর (অবঃ) সিনহা মোঃ রাশেদ খানের সঙ্গী ও ৩১ জুলাই এর ঘটনায় টেকনাফ পুলিশের দায়ের করা মামলার আসামি সাহেদুল ইসলাম সিফাতসহ ১০ জনকে স্বাক্ষী করা হয়েছে। আদালতের আদেশ মতে, ৫ আগস্ট রাত সাড়ে ১০ টার দিকে টেকনাফ মডেল থানায় নিয়মিত একটি হত্যা মামলা হিসাবে রুজু করা হয়। দায়েরকৃত মামলায় বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইন্সপেক্টর লিয়াকতকে প্রধান আসামি ও টেকনাফ থানার প্রত্যাহারকৃত ওসি প্রদীপ কুমার দাসকে দ্বিতীয় আসামি করা হয়। এছাড়া মামলার অন্য আসামিরা হলেন বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের উপপরিদর্শক (এসআই) নন্দ দুলাল রক্ষিত, কনস্টেবল সাফানুর করিম, কামাল হোসেন, আব্দুল্লাহ আল মামুন, সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) লিটন মিয়া, সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) টুটুল ও কনস্টেবল মোহাম্মদ মোস্তফা।
যার মামলা নম্বর টেকনাফ থানা : ৯/২০২০, যাহার সিআর মামলা নম্বর : ৯৪/২০২০ ইংরেজি (টেকনাফ)। দন্ডবিধি ৩০২, ২০১ ও ৩৪ জামিন অযোগ্য ধারায় মামলাটি রুজু করার সাথে সাথে মামলার এজাহারভুক্ত সকল আসামীদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়ে।
৬ আগষ্ট বিকালে কক্সবাজারে টেকনাফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত (আদালত নম্বর-৩) এর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মুহাং হেলাল উদ্দিনের আদালতে উপস্থিত হয়ে ৭জন পুলিশ সদস্যদের জামিন আবেদন করেন নিয়োজিত আইনজীবীরা। বিচারক উক্ত আবেদন না মঞ্জুর করে উপস্থিত আসামীদের জেল-হাজতে প্রেরণের নির্দেশ প্রদান করেন বলে পিপি সংবাদ উল্লেখ্য,গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হওয়া আসামিদের মধ্য থেকে মামলার ২নম্বর আসামী-টেকনাফ থানা থেকে প্রত্যাহার হওয়া ওসি প্রদীপ কুমার দাশ (৪৮) চট্টগ্রাম পুলিশের হেফাজতে থেকে কক্সবাজারে সারেন্ডার করতে আসছেন। প্রদীপ কুমার দাশ গত ৪ আগস্ট থেকে অসুস্থ হয়ে ছুটিতে যান। তার ব্যক্তিগত মোবাইল ফোনটি তখন থেকে বন্ধ ছিলো।
এদিকে, আদালতের নির্দেশে টেকনাফ থানায় রুজু হওয়া মামলাটি তদন্তের জন্য র‌্যাব-১৫ এর কাছে বৃহস্পতিবার ৬ আগস্ট সকালে পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত ওসি এবিএমএস দোহা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, আদালতের আদেশ অনুযায়ী টেকনাফ মডেল থানা কর্তৃপক্ষ এ মামলার সকল কার্যক্রম সম্পন্ন করেছেন।
অপরদিকে, র‌্যাব-১৫ থেকে একজন তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ দিয়ে মামলার সার্বিক কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
অপরদিকে ৬ আগষ্ট বিকালে সিনহা হত্যায় নিয়োজিত তদন্ত টিম টেকনাফ মডেল থানা পরিদর্শন করেছেন। এসময় তদন্ত টিম থানায় আসার সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে হাজারো জনতা ওসি প্রদীপের কুকির্তির বর্ণনা দিয়ে সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন এবং উচিৎ প্রতীকারের দাবী জানান। তদন্ত টিম দীর্ঘক্ষন থানায় অবস্থান করলেও সিংবাদিকদের সাথে কোন কথাই বলেননি। #####

Comment here