আন্তর্জাতিককক্সবাজাররোহিঙ্গা সমাচার

কক্সবাজারের রোহিঙ্গাদের সহনশীলতা কার্যক্রমে বিশ্বব্যাংকের সাড়ে ৩ কোটি মার্কিন ডলার অনুদান


জাবেদ ইকবাল চৌধুরী, কক্সবাজার।

কক্সবাজার রোহিঙ্গা ক্যাম্পের জনগোষ্ঠীর সহনশীলতার ব্যাপারে সহায়তা করার জন্য বিশ্বব্যাংক ৩ কোটি ৫০ লক্ষ মার্কিন ডলার অনুদান দিচ্ছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়কে বিশ্বব্যাংক থেকে যে ১৬ কোটি ৫০ লক্ষ মার্কিন ডলার অনুদান ঘোষনা দেওয়া হয়েছে, এই অনুদান তারই একটা অংশ। বাংলদেশ সরকারের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সহায়তায় (এমওডিএমআর)
তবে পুরো প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে (জাতিসংঘ বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি ) ডব্লিউএফপি।
জানা গেছে, রোহিঙ্গাদের কাজের সুযোগ সৃষ্টি ও কমিউনিটি-ভিত্তিক সেবার কাজে এই সাড়ে ৩ কোটি লক্ষ মার্কিন
ডলার ব্যয় করা হবে, যার মধ্যে রয়েছে কোভিড-১৯ বিষয়ক মানবিক সাড়াদানের অংশ হিসেবে রোহিঙ্গা
ক্যাম্পে ৭ লক্ষ মানুষের জন্য খাদ্য সহায়তা প্রদান। কোভিড-১৯ এর কারণে বিভিন্ন বিধিনিষেধ শেষ হওয়ার পর, এই প্রকল্পের আওতায় ক্যাম্পে অত্যন্ত ঝুঁকিতে থাকা পরিবারগুলোর জন্য আত্মনির্ভরশীলতার সুযোগ বৃদ্ধি করা হবে ও সামাজিক সুসঙ্গতি বৃদ্ধির লক্ষ্যে তরুণদের জন্য স্বেচ্ছাসেবী-ভিত্তিক কাজের সুযোগ সৃষ্টি করা হবে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় (এমওডিএমআর) সচিব শাহ্ কামাল বলেন, ‘আমি আশা করি, এই চুক্তি বাস্তবায়নের মাধ্যমে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর অধিকার রক্ষা হবে ও তাদের
সুযোগ-সুবিধার উন্নয়ন ঘটবে।’
বাংলাদেশে নিযুক্ত ডব্লিউএফপি’র প্রতিনিধি রিচার্ড রেগান বলেন, ‘এই কর্মসূচিগুলো রোহিঙ্গা ও
স্থানীয় জনগোষ্ঠী উভয়ের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ।“ তিনি আরও বলেন, “মাঝারি থেকে দীর্ঘমেয়াদী সহনশীলতা
ও সামাজিক সুসঙ্গতির উন্নয়নের জন্য মানুষের দক্ষতা, বাজারের সাথে সংযোগ ও দীর্ঘ মেয়াদে খাদ্য-
নিরাপত্তার উন্নয়নের জন্য সম্পদ থাকা প্রয়োজন।’
সংশ্লিষ্ঠ সুত্রে জানা গেছে , সেলফ্ রিলায়েন্স কার্যক্রমের মাধ্যমে ৬০ হাজার বাস্তুুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর পরিবারের অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নয়ন ঘটানো ও সামাজিক সহনশীলতা বৃদ্ধি করা। স্বল্পমেয়াদী কমিউনিটি সেবা দান, সেচ্ছাসেবী সহায়তা ও প্রশিক্ষণ কোর্স দেওয়ার জন্য নির্ধারিত কর্মদিবসগুলোর মাধ্যমে তা করা হবে। এছাড়াও, এর আওতায় ঝুঁকিতে থাকা পরিবারগুলোর জন্য দক্ষতা উন্নয়ন ও আত্মনির্ভরশীলতা-সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম পরিচালিত হবে। অতিমাত্রায় ঝুঁকিতে থাকা পরিবার ও ব্যক্তির জন্য এর আওতায় স্বেচ্ছাসেবী নেটওয়ার্কে যুক্ত থাকার জন্য কাজের বিনিময়ে সহায়তা দেওয়া হবে।
এই প্রকল্পের ফলে প্রায় ৪০ হাজার বাস্তুুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর পরিবারের জন্য কর্মসংস্থানের
সুযোগ সৃষ্টি হবে, যা রোহিঙ্গা ক্যাম্পের মোট জনসংখ্যার শতকরা ২০ ভাগ। এর মাধ্যমে ক্যাম্পের
অবস্থার উন্নয়ন ঘটানোর জন্য বনায়নসহ সাইট, প্রবেশপথ ও নিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নয়ন করা হবে।
ডব্লিউএফপি’র জন সংযোগ কর্মকর্তা মেহরিন আহমেদ জানিয়েছেন, ডব্লিউএফপি প্রতি মাসে আট লাখ ৬০ হাজার জন রোহিঙ্গাকে খাদ্য সহায়তা এবং কক্সবাজারের ছয় লাখ স্থানীয় জনগোষ্ঠীকে সহযোগিতা প্রদান করছে।
শুধু তাই নয়, জাতিসংঘ বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি বিশ্বের বৃহত্তম মানবিক সহায়তা দানকারী সংস্থা, যা জরুরি অবস্থায় জীবন রক্ষা করে চলেছে,
মানুষের জীবনে সমৃদ্ধি ঘটাচ্ছে ও সংঘাত, দুর্যোগ ও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব থেকে উদ্ধার পাওয়া মানুষের জন্য টেকসই ভবিষ্যৎ নির্মাণে সহায়তা করছে।

Comment here