জাবেদ ইকবাল চৌধুরী, কক্সবাজার
মিয়ানমারের রাখাইনে রোহিঙ্গাদের উপর এখনো ভয়ভীতি প্রদর্শনসহ নানা নির্যাতন অব্যাহত রয়েছে। তারা এখনো নিরাপত্তাহীনতায় ভোগছে। যে কারনে রোহিঙ্গারা এখনো বাংলাদেশমুখী। নিজেদের নিরাপদ রাখতে তারা বাংলাদেশে পালিয়ে আসছে। জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনের সিনিয়র ইমার্জেন্সি কো-অর্ডিনেটর লুইস অভিন এক প্রেস ব্রিফিংএ একথা জানিয়েছেন। কক্সবাজারে স্থানীয় এক হোটেলের সম্মেলন কক্ষে গতকাল রাতে এই প্রেস ব্রিফিং অনুষ্টিত হয়।
ব্রিফিংএ তিনি জানান, রাখাইনে রোহিঙ্গারা এখনো নিরাপদ বোধ করছেনা। তারা সব সময় নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে বসবাস করছে। তারা রাখাইনে স্বাধীনভাবে চলাচল করতে পারেনা। তারা সব সময় আতংকের মধ্যে থাকে। পরিবারের সিংহভাগই যেহেতু বাংলাদেশে চলে এসেছে, এ কারনে রোহিঙ্গারা এখনো বাংলাদেশ সীমান্তমুখী। তারা বাংলাদেশে পালিয়ে আসছে। রাখাইনের পরিস্থিতি যতদিন উন্নতি না হয়, অথবা স্বাধীনভাবে থাকার পরিবেশ সৃষ্টি না হলে রোহিঙ্গাদের পালিয়ে আসা থামবেনা।
তিনি জানান, রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে বাংলাদেশের সাথে মিয়ানমারের আলোচনা চলছে। ইউএনএইচসিআর আশা করে মিয়ানমারের সাথে এমনভাবে বাংলাদেশের চুক্তি হোক যাতে রোহিঙ্গারা রাখাইনে মিয়ানমারের নাগরিক হিসাবে ফেরত যেতে পারে। তারা যাতে স্বাধীনভাবে রাখাইনে বসবাস করতে পারে, এব্যাপরে ইউএনএইচসিআর রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবসনে সব সময় সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত।
তিনি উল্লেখ করেন, অতীতে রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারের ফেরত পাঠানো হলেও তারা বারবার সীমান্ত ক্রস করে বাংলাদেশে চলে এসেছে। এবারের প্রত্যাবাসন চুক্তি যাতে আগের মতো না হয় সে প্রত্যাশার কথাও জানান তিনি। রোহিঙ্গাদের মানবাধিকার, রাখাইনে স্বাধীনভাবে চলাফেরা করার অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। রাখাইনে রোহিঙ্গাদের উপর সহিংসতা বন্ধ করতে হবে। ব্রিফিংএ তিনি আরো বলেন, সম্প্রতিক পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের মধ্যে প্রায় ৭৫ হাজার রোহিঙ্গা চরম অপুষ্টিতে ভোগছে। একই সাথে পালিয়ে আসা ২৫ ভাগ রোহিঙ্গা অপুষ্টিজনিত রোগে ভোগছে।
কক্সবাজার শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনের রিপোর্ট মতে গত ২৫ আগষ্ট থেকে এই পর্যন্ত ৬ লাখ ৩১ হাজার ৫’শ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করেছে। অনুপ্রবেশ অব্যাহত থাকায় এই সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে।
Comment here