জাতীয়টক শোরাজনীতিসারাদেশ

খালেদাকে নিয়ে বিএসএমএমইউ ভিসির প্রতিবেদন আদালতে

উচ্চ আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী দুর্নীতি মামলায় দণ্ডিত খালেদা জিয়ার চিকিৎসা বিষয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) প্রতিবেদন সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ে জমা পড়েছে।

বুধবার দুপুরে প্রতিবেদনটি হাতে পাওয়ার কথা জানিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের মুখপাত্র ও হাই কোর্ট বিভাগের বিশেষ কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাইফুর রহমান।

বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি কেএম জহিরুল হকের হাই কোর্ট বেঞ্চে বৃহস্পতিবার প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করা হবে।

খালেদার জামিন আবেদন নাকচ করে গত বছর ১২ ডিসেম্বর এক আদেশে আপিল বিভাগ বলেছিল, বিএনপি চেয়ারপারসনের সম্মতি থাকলে বঙ্গবন্ধু মেডিকেলের মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শ অনুযায়ী তাকে দ্রুত ‘অ্যাডভান্সড ট্রিটমেন্ট’ দেওয়ার পদক্ষেপ নিতে হবে।

সে অনুযায়ী উন্নত চিকিৎসা নিতে খালেদা জিয়া সম্মতি দিয়েছেন কি না, দিয়ে থাকলে তার চিকিৎসা শুরু হয়েছে কি না, শুরু হয়ে থাকলে সর্বশেষ কী অবস্থা- তা বুধবার বিকাল ৫টার মধ্যে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রারের জেনারেলের মাধ্যমে আদালতকে জানাতে বিএসএমএমইউ উপাচার্যকে নির্দেশ দেয় হাই কোর্ট।

বিএনপির চেয়ারপারসনের সর্বশেষ শারীরিক অবস্থা জানতে চেয়ে ও তার জামিন চেয়ে করা দুটি আবেদনের শুনানি নিয়ে একই বেঞ্চ রোববার এ আদেশ দেয়।

দুর্নীতির দুই মামলায় মোট ১৭ বছরের দণ্ড মাথায় নিয়ে কারাবন্দি সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া গত এপ্রিল থেকে বিএসএমএমইউ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। দল ও পরিবারের সদস্যরা তাকে অন্য হাসপাতালে নিতে চাইলেও তাতে অনুমতি মেলেনি।

জিয়া দাতব্য ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় জামিনের জন্য খালেদা জিয়ার আবেদন এর আগে ৩১ জুলাই হাই কোর্ট খারিজ করে দেয়। অপরাধের গুরুত্ব, সংশ্লিষ্ট আইনের সর্বোচ্চ সাজা ও বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে খালেদাসহ অন্য আসামিদের আপিল শুনানির জন্য প্রস্তুতির বিবেচনায় নিয়ে এ আদেশ আসে।

দুর্নীতি মামলায় কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে সোমবার কারাগার থেকে ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে নেওয়া হয়। ছবি: মাহমুদ জামান অভি

দুর্নীতি মামলায় কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে সোমবার কারাগার থেকে ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে নেওয়া হয়। ছবি: মাহমুদ জামান অভি
খালেদার আইনজীবীরা এরপর আপিল বিভাগে যান। আপিল বিভাগের নির্দেশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক কনক কান্তি বড়ুয়া গত বছর ১১ ডিসেম্বর খালেদা জিয়ার সর্বশেষ স্বাস্থ্যগত অবস্থা ও চিকিৎসা প্রতিবেদন দেয়। পরে ১২ ডিসেম্বর সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল তা সর্বোচ্চ আদালতের কাছে হস্তান্তর করেন।

সেখানে খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য পরীক্ষায় গত বছর ১০ ডিসেম্বর গঠিত মেডিকেল বোর্ডের প্রতিবেদনের পাশাপাশি গত বছরের ৭ অক্টোবর গঠিত মেডিকেল বোর্ডের প্রতিবেদনও দেওয়া হয়।

গত বছর ১০ ডিসেম্বর গঠিত মেডিকেল বোর্ডে ছিলেন চিকিৎসক শামীম আহমেদ, বদরুন্নেছা আহমেদ, তানজিমা পারভীন, চৌধুরী ইকবাল মাহমুদ, সৈয়দ আতিকুল হক, ঝিলান মিয়া সরকার ও ফরিদ উদ্দিন।

ওই বোর্ডের প্রতিবেদনে বলা হয়, খালেদা জিয়া ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, কফজনিত শ্বাসকষ্ট (কফ ভেরিয়েন্ট অ্যাজমা), প্রতিস্থাপনজনিত হাঁটুর ব্যথায় (অস্টিও-আর্থরাইটিস) ভুগছেন। গেঁটে বাতসহ বেশ কিছু সমস্যায় উন্নত চিকিৎসা ও পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য খালেদা জিয়া সম্মতি দিচ্ছেন না বলে তার যথাযথ চিকিৎসা হচ্ছে না।

ওই প্রতিবেদন পাওয়ার পর শুনানি শেষে গত ১২ ডিসেম্বর আপিল বিভাগ কিছু পর্যবেক্ষণ দিয়ে খালেদা জিয়ার জামিন আবেদনটি খারিজ করে দেয়।

আপিল বিভাগের ওই রায়ে বিএনপি চেয়ারপারসনের সম্মতি থাকলে বিএসএমএমইউ হাসপাতালের মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শ অনুযায়ী তাকে দ্রুত ‘অ্যাডভানসড ট্রিটমেন্ট’ দেওয়ার পদক্ষেপ নিতে বলা হয়।

সেই রায় গত ১৯ জানুয়ারি প্রকাশিত হওয়ার পর হাই কোর্টে নতুন করে জামিন আবেদন করার উদ্যোগ নেন খালেদার আইনজীবীরা।

–বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম

Comment here