জাতীয়সারাদেশ

গণমাধ্যমকর্মীদের বিশেষ অনুদান ও চিকিৎসাকেন্দ্র স্থাপনের আহ্বান ডিইউজের

করোনা পরিস্থিতিতে কর্মরত সাংবাদিকদের অর্থনৈতিক সুরক্ষা নিশ্চিত করতে বিশেষ অনুদান প্রদান ও তাদের জন্য নির্দিষ্ট চিকিৎসাকেন্দ্র স্থাপন করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন-ডিইউজের একাংশ।

বুধবার ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন নির্বাহী পরিষদের এক ভার্চুয়াল সভায় এ আহ্বান জানানো হয়।

সভায় সাংবাদিক নেতারা বলেন- প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক মিডিয়া ও অনলাইনে কর্মরত সাংবাদিকরা ঢাকা ও ঢাকার বাইরে বিভিন্ন শহর ও মফস্বল অঞ্চলে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে করোনা সংক্রান্ত বিভিন্ন সংবাদ সংগ্রহ করছে। ইতিমধ্যে তিনজন সাংবাদিক মৃত্যুবরণ করেছেন। অনেকে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। যদিও ঝুঁকি নিয়ে কাজ করা সাংবাদিকদের পেশা। তবুও দুঃখজনকভাবে আজ তাদের অনেককে বিনা বেতনে কাজ করতে হচ্ছে। দুর্ভাগ্যজনক এই পরিস্থিতিতেও করোনা আক্রান্ত সাংবাদিকদের জন্য কোনো সুনির্দিষ্ট চিকিৎসাকেন্দ্র স্থাপন করা হয়নি। এই অবস্থায় সাংবাদিকদের আর্থিক অনুদানের ব্যবস্থাসহ অন্য বিষয়গুলো কার্যকর করতে এগিয়ে আসার জন্য অনুরোধ জানানো হয়।

ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের একাংশের সভাপতি কাদের গনি চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মো. শহিদুল ইসলামের সঞ্চালনায় ভার্চুয়াল এ সভায় অংশ নেন সহ-সভাপতি শাহীন হাসনাত, বাছির জামাল, রাশেদুল হক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান সাজু, কোষাধ্যক্ষ গাজী আনোয়ার সাংগঠনিক সম্পাদক মো. দিদারুল আলম, প্রচার সম্পাদক খন্দকার আলমগীর হোসাইন ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক আবুল কালাম, জনকল্যাণ সম্পাদক দেওয়ান মাসুদা সুলতানা, দফতর সম্পাদক ডি এম আমিরুল ইসলাম অমর, কার্যনির্বাহী সদস্য রফিক মুহাম্মদ, শহিদুল ইসলাম, খন্দকার হাসনাত করিম পিন্টু, জেসমিন জুঁই, আবুল হোসেন খান মোহন, কাজী তাজিম উদ্দিন, রফিক লিটন, মো. আবদুল হালিম, শামসুল আরেফিন, আলমগীর শিকদার, আবু বকর ও আবু হানিফ।

সভায় ১৭ দফা সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এর মধ্যে রয়েছে- গণমাধ্যমে ছাঁটাই বন্ধ করতে হবে, পবিত্র ঈদুল ফিতরের আগেই সংবাদকর্মীদের বকেয়াসহ চলতি মাসের বেতন ও উৎসব ভাতা প্রদান করতে হবে। করোনাকালে চাকরিচ্যুতদের চাকরিতে পুনর্বহাল করতে হবে। করোনা মহামারীর সময়ে প্রত্যেক গণমাধ্যম মালিককে কর্মরত সংবাদকর্মীদের স্বাস্থ্যগত সুরক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে। কোনো সংবাদকর্মী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলে তার চিকিৎসার সম্পূর্ণ ব্যয়ভার গণমাধ্যম মালিককে বহন করতে হবে। পাশাপাশি করোনা আক্রান্ত সংবাদকর্মীর পরিবারের দেখভাল করতে হবে।

করোনায় আক্রান্ত হয়ে কোনো সংবাদকর্মী মৃত্যুবরণ করলে প্রতিষ্ঠানের মালিককে ক্ষতিপূরণ হিসেবে প্রয়াত সংবাদকর্মীর পরিবারকে নগদে ন্যূনতম ৫০ লাখ টাকা এবং সরকারের পক্ষ থেকে ৫০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। করোনাকালে সাংবাদিকদের অর্থনৈতিক সুরক্ষা নিশ্চিত করতে বিশেষ আর্থিক অনুদান, ঝুঁকি ভাতা ও চিকিৎসা কেন্দ্র স্থাপন করতে হবে। সাংবাদিকদের জন্য বীমার ব্যবস্থা করতে হবে। দেশের এই দূর্যোগপূর্ণ মুহূর্তে তথ্য প্রবাহ সচল রাখতে গণমাধ্যমের সঙ্কটের কথা বিবেচনা করে গণমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য জরুরি ভিত্তিতে বিশেষ অনুদান দিতে হবে। সংবাদপত্র, টেলিভিশন, অনলাইন, রেডিওসহ সব গণমাধ্যমে বেসরকারি খাতের বকেয়া বিজ্ঞাপন বিল দ্রুত পরিশোধের ব্যবস্থা করতে হবে।

১৭ দফায় আরও রয়েছে- গণমাধ্যমের সব কর দুই বছরের জন্য স্থগিত করতে হবে এবং টেলিভিশনের জন্য স্যাটেলাইট ফি ছয় মাসের জন্য স্থগিত রাখতে হবে। বিজ্ঞাপনের আয়ের ওপর থেকে সব ধরনের ভ্যাট মওকুফ করতে হবে। মিডিয়ার স্বাধীনতাবিরোধী ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল করতে হবে। প্রবীণ সাংবাদিক আবুল আসাদ, ফটোসাংবাদিক শহিদুল ইসলাম কাজলসহ গ্রেফতারকৃত সব লেখক সাংবাদিকদের অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে।

Comment here