এক্সক্লুসিভটেকনাফসারাদেশ

টেকনাফে অধিক রোহিঙ্গার দায়ভার কে বহন করবে?

হুমায়ূন রশিদ,টেকনাফ:মিয়ানমারে সীমান্ত চৌকিতে স্বশস্ত্র সন্ত্রাসী হামলার জেরধরে সেনাবাহিনীর বিশেষ অভিযানের খপ্পরে পড়ে স্বজন,সহায়-সম্বল ও বাস্তুহারা মানুষেরা প্রাণ হারানোর আতংকে শাহপরীরদ্বীপ হতে উলুবনিয়া পর্যন্ত বিভিন্ন সীমান্ত পয়েন্ট দিয়ে কতিপয় সুবিধাভোগী ও দালাল চক্রের সহায়তায় গত ২মাসে লক্ষাধিক রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ করে বৃহত্তর চট্টগ্রামের প্রত্যন্ত এলাকায় ছড়িয়ে যায়। লোকালয়,বিভিন্ন ভাড়াবাসা ছাড়াও নিবন্ধিত নয়াপাড়া শরণার্থী ক্যাম্প,আনরেজিষ্টার্ড লেদা রোহিঙ্গা বস্তি,বাহারছড়া শামলাপুর চরপাড়া বস্তি ও কুতুপালংয়ে অবস্থান নিয়েছে প্রায় অর্ধলক্ষাধিক রোহিঙ্গা। এছাড়া টেকনাফ শাহপরীর দ্বীপ হতে বৃহত্তর চট্টগ্রামের জেলা-উপজেলা সমুহের প্রত্যন্ত এলাকায় আরো দেড় লক্ষ মত রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ ও শিশু ছড়িয়ে রয়েছে। যা দেশের জন্য মোটেও কল্যাণকর এবং শুভ বলে মনে হয়না। এদিকে জাতিসংঘ ২৩হাজার রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ ও শিশু বাংলাদেশে অবস্থান নিয়েছে বলে দাবী করেছেন। যা বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। অপরদিকে বাংলাদেশ সরকারের আইন মন্ত্রী ব্যারিষ্টার আনিসুল হক বলেছেন বাংলাদেশ অক্ষম সত্বেও দুইলক্ষ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছে বলে দাবী করেছেন। কিন্তু স্থানীয়ভাবে এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সরকারী দপ্তর সমুহে অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গাদের তালিকা নেই। তবে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ অব্যাহত রয়েছে।
তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়-চলতি বছরের গত ৯অক্টোবর ভোররাতে মিয়ানমারের উত্তর-পশ্চিম প্রদেশ আকিয়াবের মন্ডু থানার কাউয়ারবিল থেনাইসো,মগনামা ও নাগাকুরাসহ ৫টি বিজিপি ক্যাম্প ও ব্যাটেলিয়ন সদরে স্বশস্ত্র সন্ত্রাসী হামলা,অস্ত্র ও বুলেট লুট এবং হতাহতের ঘটনা ঘটায়।এরই সুত্রধরে অনির্দিষ্টকালের কারফিউ জারী করা হলে থমথমে অবস্থার সৃষ্টি হয়। এই নৃশংস ঘটনার জন্য আরকান মুসলিম সমর্থিত উগ্রপন্থী সংগঠন আরএসওকে দায়ী করে মিয়ানমার সেনাবাহিনী মুসলিম সম্প্রদায়ের উপর বিশেষ অভিযান শুরু করে। এতে বহু লোকজন হতাহত,বসত-বাড়িতে অগ্নি সংযোগ,লুটপাটের কারণে স্বজন ও সর্বস্বহারা মানুষ পালিয়ে শাহপরীরদ্বীপ হতে পালংখালী পর্যন্ত প্রায় ২৫/৩০টি সীমান্ত পয়েন্ট দিয়ে স্থানীয় কতিপয় দালাল ও সুবিধাভোগীদের সহায়তায় এসব রোহিঙ্গারা অনুপ্রবেশ করে বলে বিভিন্ন সুত্রে দাবী করে আসছে। গতমাসে কক্সবাজারে বিজিবি-বিজিপির পতাকা বৈঠকে দু‘দেশের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয় ছাড়া রোহিঙ্গা বিষয়টি আলোচনায় আসে। এর ঘটনার পর পরই ওপারে নির্যাতনের মাত্রা আরো বেড়ে যায়। এরফলে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের মাত্রা বৃদ্ধি পেয়ে এখনো অব্যাহত রয়েছে।ইতিমধ্যে নয়াপাড়া শরণার্থী ক্যাম্প,লেদা রোহিঙ্গা টাল, বাহারছড়া চরপাড়া রোহিঙ্গা বস্তি,কুতুপালং অনিবন্ধিত বস্তিসহ রাঙ্গুনিয়া-রাউজান এলাকার রোহিঙ্গা বস্তি সমুহে চরম খাদ্য এবং চিকিৎসা সংকট দেখা দিয়েছে। এছাড়া টেকনাফ উপজেলার প্রতিটি গ্রামসহ বিভিন্ন ভাড়াবাসায় অবস্থান করছে। যা স্থানীয় শ্রম ও কাঁচাবাজারে চরম প্রভাব ফেলছে।
এদিকে বিভিন্ন স্তরের লোকজনের সাথে আলাপকালে জানায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা এসব রোহিঙ্গাদের নির্দিষ্ট একটি জায়গায় সংগঠিত করে রাখতে হবে। অন্যথায় এরা বিভিন্ন অপরাধীদের সঙ্গে মিলে সামাজিক অপরাধ বৃদ্ধির পাশাপাশি আইন-শৃংখলা পরিস্থিতির চরম অবনতি ঘটাবে। বাংলাদেশের অতীতের তিক্ত অভিজ্ঞতা রোহিঙ্গাদের এসব আচরণ এখন স্পষ্ট। আগামীতে অনুপ্রবেশকারী এসব রোহিঙ্গারা নানা অপরাধে জড়িত হওয়ার পাশাপাশি ভাড়াটে হিসেবে সরকার বিরোধী আন্দোলনে অংশ নেওয়ার আংশকাও উড়িয়ে দেওয়া যায়না। সুতরাং এসব অপকর্মের দায়ভার কে বহন করবে তা নিয়ে বিভিন্ন মহল থেকে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
সুতরাং সবাইকে গণনা করে হিসাবের আওতায় আনা হলে পরবর্তীতে আর্ন্তজাতিকভাবে পদক্ষেপ গ্রহণে অনেক সহজ হতে পারে বলে মতামত প্রকাশ করেন। #

Comment here