আন্তর্জাতিকরোহিঙ্গা সমাচার

টেকনাফে এক নারী জীবিত উদ্ধার : নাফনদে রোহিঙ্গা বোঝাই নৌকা ডুবি

জাবেদ ইকবাল চৌধুরী,টেকনাফ ভিশন :

Exif_JPEG_420
Exif_JPEG_420

রেহেনা বেগম (২২), মিয়ানমারের মংডু বড় গওজিবিল15241225_1333993306651468_2611818620833107574_n এলাকার মৌঃ মোহাম্মদ আমিনের স্ত্রী। সে গতকাল সোমবার সকাল সাড়ে ৯ টার পৌঁেছ বাংলাদেশের টেকনাফ সীমান্তের জাদিমোড়া নয়াপাড়া এলাকায়। স্থানীয় হ্নীলা নাটমোড়া গ্রামের জেলে আশিষ, সুশান্ত ও সুমন একটি ফিশিং ট্রলার নাফনদে চিৎকার শুনে তাকে উদ্ধার করে। সে প্রথমে নয়াপাড়া এলাকায় বসবাসকারী

আপন বড় বোনের স্বামী কবির আহমদের বাড়ীতে আশ্রয় নেন। সেখানেই এ প্রতিবেদকের সাথে কথা হয় রোহিঙ্গা মুসলিম নারী রেহেনা বেগমের সাথে। তিনি বলেন, রবিবার রাত ১০ টার সময় মিয়ানমার নাফনদ রৈংগ্যাদং ঘাটে অবস্থান নেন। একটু পরে বাংলাদেশের এ পাড় থেকে চার জন দালাল একটি বড় নৌকা নিয়ে ওখানে পৌছেঁ। এরপর ওই নৌকে উঠে পড়ে একে একে ৩৫ জনের মত নারী পুরুষ ও শিশু ।
রাত প্রায় ১২ টার কাছাকাছি সময়ে ট্রলারটি প্রায় ৩৫ জন নারী শিশু ও পুরুষ নিয়ে তিনিসহ বাংলাদেশের দিকে রওয়ানা দেন। সাথে ছিলো রেহেনা মা বলকিস, ভাবী মনিরা , ভাইপো ৮ বছর বয়সের সোয়াইব ও ভাই ঝি ৬ বছর বয়সের নুর আয়েশা। আধা কিলোমিটার পর্যন্ত ট্রলার চলার পর হটাৎ নৌকাটি পানিতে ডুবে যায়। এ সময় কেউ কেউ নাফ নদে ঝাপ দেয়। তিনিও নাফনদে ঝাপ দেয় । তিনি সাতারঁ কাটা জানা নারী বিধায় সাতঁরিয়ে একটি দ্বীপের সন্ধান পান । সেখানের একটি গাছে রাত কাটান। সকালে নাফনদে জেলেদের নৌকা দেখে রেহেনা চিৎকার দেন এবং তাদের কাছ থেকে যে কোন একটি কূ

লে পৌছেঁ দেওয়ার অনুরুধ জানান। নৌকায় থাকা জেলোর বাংলাদেশী বিধায় রেহেনাকে উদ্ধার করে টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের জাদিমোড়া ও নয়া পাড়ার মাঝামাঝি স্থানে নামিয়ে দেয়। পরে সে সেখান থেকে পাশ্ববর্তী আপন বোনের স্বামী কবির আহমদের বাড়ীতে আশ্রয় নেন। সেখানেই কথা হয় এ প্রতিবেদকের সাথে । বেচেঁ যাওয়া রোহিঙ্গা নারী রেহেনা বেগম আরো জানান, ১০/১২ দিন আগে স্বামী মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে পাড়ি জমায়। এরপর তারাও পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের বাংলাদেশে পালিয়ে আসছিলেন। কিন্তু নৌকা ডুবির ঘটনায় একজন বোনকে রইংগ্যাধং এলাকা হতে জীবিত ও মা, ভাইপো, ভাই ঝিসহ ৩ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে বলে সে খবর পেয়েছে। এখনো নিখোঁজ রয়েছে ভাবী । নৌকা ডুবির আগে তিনি দালাল ইসমাইলকে টাকার লোভে এতো বেশী লোক না উঠানোর জন্য বারংবার বারন করার পরও ওই দালাল তা শুনেননি বলেও ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
এদিকে সাংবাদিকদের সামনে কথা বলার এক ফাকেঁ বিজিবি’র একটি কবির আহমদের বাড়ীতে পৌছেঁ উদ্ধার পাওয়া রেহেনাকে চিকিৎসার জন্য লেদা পাঠানোর ব্যবস্থা করে। তাকে লেদা অনিবন্ধিত রোহিঙ্গা শিবিরের আইওএম পরিচালিত হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। এ সময় ওই হাসপাতালে বিজিবি’র একটি টিম সেখানে অবস্থান করছিলো। এখানে টেকনাফ ২ বিজিবি ব্যাটলিয়ান কমান্ডার লে.কর্ণেল আবুজার আল জাহিদ জানান, খবর পেয়ে ভিকটিমকে বিজিবি হেফাজতে নেও

য়া হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে উক্ত ভিকটিম নৌকা ডুবির ঘটনাটি বানানো বলে জানিয়েছে। এ থেকে বুঝা যায় সে একটি কল্প বাহিনী তৈরী করেছে মাত্র। উদ্ধার হওয়া রেহেনার বরাত দিয়ে বিজিবি’র ওই কর্মকর্তা আরো বলেন, প্রথমে লাল দিয়া , পরে জলিলের দিয়া এসে অবস্থান করে। এক পর্যায়ে জেলেদের নৌকা দেখে ওই রোহিঙ্গা নারী নাফনদীতে ভাসতেছে এমন অভিনয় করে চিৎকার করতে থাকে। জেলেরা চিৎকার শুনে কূলে নিয়ে আসে। এরপর মোবাইলে এক নিকট আত্বীয়ের ঘরে উঠে।
অপরদিকে অন্ধকারে নাফ নদে ঝাপ দেওয়া অন্যান্য রোহিঙ্গা নারী পুরুষ ও শিশুদের ভাগ্যে কি ঘটেছে তা তিনি জানেন না। যদিও বা সকাল থেকে স্বজনদের খবর নিতে নাফনদীর কাছাকাছি বেশ কয়েকজন নারী পুরুষকে দেখা গেছে।
অনুসন্ধানে আরো জানা যায়-গত ৪ ডিসেম্বর রবিবার দিবাগত রাত ১০ টারদিকে রইগ্যাদং

হতে জাদিমোরা পয়েন্ট দিয়ে অনুপ্রবেশ করানোর জন্য ইসমাঈল,আরফাত.মোঃ সালাম প্রকাশ বলী গুইজ্যাসহ ৪জন নৌকা নিয়ে ৫/৬ পরিবার রোহিঙ্গাদের আনতে যায়। প্রতিজন বাংলা ৫হাজার টাকা করে ৩৫জন রোহিঙ্গা নৌকায় উঠার সময় যাত্রী রেহানা ইসমাঈলকে এত বেশী যাত্রী উঠালে ডুবে যাওয়ার কথা জানালে ইসমাঈল ভয় দেখিয়ে আরো লোক নিতে পারবে বলে সাহস দেয়। নৌকাটি যাত্রা করার আধঘন্টা পর নাফনদীর মাঝপথে আসলে দূঘর্টনার কবলে পড়ে।
রোহিঙ্গা বোঝাই চার নৌকা মিয়ানমারে ফেরত

টেকনাফে রোহিঙ্গা বোঝাই চারটি নৌকা নাফনদ থেকে মিয়ানমারে ফেরত পাঠিয়েছে বিজিবি । প্রতিটি নৌকায় ১০/১২ জন করে নারী-পুরুষ ও শিশু ছিল বলে জানায় বিজিবি।
রবিবার রাত থেকে সোমবার ভোর পর্যন্ত এসব নৌকা আটক করে ফেরত পাঠানো হয়।
টেকনাফ ২ ব্যাটালিয়নে উপ-অধিনায়ক মেজর আবু রাসেল ছিদ্দিকী সংবাদের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশ ঠেকাতে সীমান্তে বিজিবি টহল জোরদার রয়েছে।
টেকনাফে ৮৬ হাজার ইয়াবা উদ্ধার
টেকনাফে ৮৬ হাজার পিস পরিত্যক্ত ইয়াবা উদ্ধার করেছে বিজিবি।
রবিবার (৪ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত নয়টার দিকে দমদ

মিয়া বিওপির বিজিবি জওয়ানরা নাফ নদীতে অভিযান চালিয়ে ২ কোটি ৫০ লাখ টাকা মুল্যের এ ইয়াবার পরিত্যক্ত চালানটি উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে। এসময় পাচারকারীরা বিজিবি উপস্থিতি বুঝতে পেরে পালিয়ে কেওড়া বাগানে ঢুকে পড়ায় কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি। টেকনাফ ২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেঃ কর্নেল মোঃ আবু জার আল জাহিদ সংবাদের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন- জব্দকৃত ইয়াবা সমুহ বিজিবি সদরে জমা রাখা হয়েছে, যা উর্ধতন কর্তৃপক্ষ ও মিডিয়াকর্মীদের উপস্থিতিতে ধ্বংস করা হবে।
নাফনদ থেকে নৌকা জাল নিয়ে গেছে মিয়ানমারের বিজিপি!dsc05440
নাফনদ হতে একটি নৌকা জালসহ নিয়ে গেছে মিয়ানমার বর্ডার গার্ড পুলিশ। এ সময় নদীতে ঝাপদিয়ে সাতঁরিয়ে কূলে ফিরে আসে তিন জেলে। ৫ ডিসেম্বর সোমবার সকাল ১১ টার টেকনাফ সদর ইউনিয়নের বড়ইতলী গ্রামের পাশ্ববর্তী নাফনদের জালিয়ার দ্বীপ ও ছোয়ার দিয়ার মাঝামাঝি এলাকার ঘটনা এটি। জানা যায়, বড়ইতলী গ্রামের

আবুল হোসেনের ছেলে জামাল হোসেন, জমিল হোসেনের ছেলে দিলদার হোসেন ও মোঃ ইউনুছের ছেলেআবু ছিদ্দিক গতকাল সোমবার সকাল ৯ টার সময় নাফনদের জলিলের দ্বীপ ও ছোয়ারদিয়ার এলাকার মাঝামাঝি পানিতে বাটা জাল পুতে। কয়েক ঘন্টা পর ১১ টার সময় ওই জাল হতে তিন জনেই মাছ সংগ্রহ করছিলো মনের ধ্যানে। একপর্যায়ে মিয়ানমারের বিজিপি’র একটি স্পিড বোট তাদের নৌকায় ধাক্কা দেয়। এ সময় দ্রæত তিন জেলে নৌকা জাল ফেলে পানিতে ঝাপ দেয় এবং সাতারঁ কেটে কূলে কাছাকাছি পৌঁছলে স্থানীয় নূর হোসেনের নৌকা তাদের উদ্ধার করে। ফিরে আসা দিলদার হোসেনের সাথে কথা হয় এ প্রতিবেদকের। তিনি বলেন, নৌকায় উদ্ধার হওয়ার পর স্থানীয় বিজিবি সদস্যরা তাদের খোজঁ খবর নিয়ে বাড়ীতে চলে জাওয়ার জন্য বলে।
এ বিষয়ে বিজিবি ও কোষ্টগার্ডের দায়িত্বশীলদের মোবাইল সংযোগ

না দেওয়ায় কথা বলা সম্ভব হয়নি।

 

Comment here