ক্রাইমটেকনাফ

টেকনাফে এসআই ও এএসআই’র বিরুদ্ধে মামলা নিয়ে তোলপাড়

কক্সবাজার প্রতিনিধি :
পুলিশের এক উপ-পরিদর্শকসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের ঘটনায় তোলপাড় চলছে। এলাকার একজন আলোচিত ডাকাত হওয়ার পরও পুলিশের কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা নিয়ে আইনী লড়াই করার সাহস নিয়ে চলছে বেশ আলোচনা সমালোচনা। ককক্সবাজার দায়রা জজ আদালত থেকে এ মামলার সর্বশেষ আদেশ পুলিশ সুপার বরাবরে পৌঁছেছে গতকাল মঙ্গলবার। তবে এ আদেশ এখনো টেকনাফ মডেল থানায় পৌঁছেনি বলে জানিয়েছেন দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শেখ আশরাফুজ্জামান।
এর আগে গত ৬ ডিসেম্বর কক্সবাজার অবকাশকালীন দায়রা জজ মীর শফিকুল আলম কক্সবাজার পুলিশ সুপারকে আইনের বিধান মোতাবেক মামলা দায়ের করে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের এ আদেশ দেন।
মনি আলম নামের এক ভুক্তভোগী ২০১৬ সালের ৭ এপ্রিল কক্সবাজার দায়রা জজ আদালতে এ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ফৌজদারী মিচ মামলা (৬২৩/১৬) দায়ের করেন।
এতে উল্লেখ করা হয়, টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং পুলিশ ফাড়িঁর ইনচার্জ থাকা কালীন সময়ে এস আই মাশরুরুল হক ও এ এস আই জয়নাল অভিযান চালিয়ে ২০১৪ সালের ১৪ অক্টোবর রাত ১০ টার সময় মামলা বাদী কাঞ্জর পাড়া এলাকার আব্দুর শুক্কুরের ছেলে মনি আলমকে আটক করে ১০ লাখ টাকা দাবী করে। টাকা দিতে অস্বীকার করায় মনির আলমের ডান পায়ের হাটুর নিচে ২ রাউন্ড গুলি ছুড়েঁ আহত করে।
কে এই মনি আলম
মনি আলম এলাকায় মইন্না ডাকাত হিসেবে বেশ পরিচিত। হোয়াইক্যং কাঞ্জর পাড়ার আব্দুল শুক্কুরের ছেলে। এক সময় কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কের কাঞ্জর পাড়া ছিলো সড়ক ডাকতির মোক্ষম স্থান। এখানে একটু রাত ঘনিয়ে আসলেই চলতো ব্যারিকেট দিয়ে সড়ক ডাকাতি। আর এর প্রধান ব্যক্তি ছিলো মইন্না ডাকাত। এ ছাড়া এ মইন্না ডাকাত ্ওই এলাকার বন্দুক যুদ্ধে নিহত অপর এক ডাকাত হত্যার মামলাও চার্জশিট ভুক্ত আসামী। তার বিরুদ্ধে সরকারি কাজে বাধা, অস্ত্র , ডাকাতি, হত্যা , বনভূমি দখল ও বনজ সম্পদ উঝাড় করাসহ নানান অপর্কম করে বেড়াতো। এসব কারনে তার কিরুদ্ধে রয়েছে কয়েক ডজন মামলাও। খোজঁ নিয়ে জানা যায়, মনি আলম ওরফে মইন্না ডাকাতের বিরুদ্ধে জিআর-১৮৪/১১,জিআর-৬৪৫/১৩, জিআর-৬১৩/১৪,জিআর-৫৭৬/১৪,জিআর-৫৭৭/১৪,জিআর-৫৭৮/১৪,জিআর-১২০/১৪, মামলা নং-৩৪(১২-১৩), মামলা নং-৫(১২)১৩, জিআর-৪৭৪/১৪ মামলাসহ কয়েক ডজন মামলা আসামী। সম্প্রতি জেল থেকে বের হয়ে পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে। একটি সুত্র মতে এস আই মাশরুরুল হক ছিলো মনি আলম ওরফে মইন্না ডাকাতের বিরুদ্ধে করা কয়েকটি মামলার বাদী ও তদন্ত কর্মকর্তা। বিভিন্ন সময়ে হোয়াইক্যং এ থাকা কালে এসআই মাশরুরুল হককে ম্যানেজ করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। যার কারনে তার বিরুদ্ধে মামলা বা চার্জশিট হয়েছে বলে মনে করেমনি আলম। এর জের ধরে এ মামলা । আর মামলাটি উক্ত পুলিশ কর্মকর্তা কক্সবাজার জেলা থেকে বদলী হয়ে চট্টগ্রাম চলে যাওয়া পর দায়ের করে। তার বিরুদ্ধে রয়েছে একাধিক ডাকাতি, অস্ত্র ও বন মামলা। তবে মনি আলম তার বিরুদ্ধে ডজন খানেক মামলা থাকার কথা স্বীকার করে বলেন, বিভিন্ন সময়ে তার বিরুদ্ধে কিছু মিথ্যা মামলা হয়েছে তবে তিনি সব মামলায় জামিন রয়েছেন বলে দাবী করেন। হোয়াইক্যং ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ আহবায়ক হারুন অর রশিদ সিকদার বলেন, একজন চিহ্নিত ডাকাত কিভাবে একজন দায়িত্বশীল পুলিশ কমূকর্তার বিরুদ্ধে মামলার সাহস পায় তা বোধগম্য হচ্ছে না। এখানে অন্য কোন রহস্য আছে কি না তা খতিয়ে দেখা দরকার বলেও মনে করেন তিনি।
এ বিষয়ে চট্টগ্রামের বাকলিয়া থানায় কর্মরত পুলিশের এস আই মাশরুরুল হক বলেন, এলাকায় ডাকাতি সহ বিভিন্ন অপকর্মে জড়িত মইন্না ডাকাত ওই সময়ে পুলিশকে কাবু করতে না পেরে ষড়যন্ত্র করছে। মনি আলম ওরফে মইন্না ডাকাত সম্পর্কে তদন্ত করলে থনের বিড়াল বের হয়ে আসবে বলেও দাবী করেন ওই কর্মকর্তা।

Comment here