ক্রাইমটেকনাফ

টেকনাফে পৌর কাউন্সিলরের বাড়ীতে স্বশস্ত্র হামলা : উভয় পক্ষের আহত-১২


ফরহাদ আমিন, টেকনাফ :::
টেকনাফে পৌর কাউন্সিলরের বাড়ীতে স্বশস্ত্র হামলা ঘটেছে। এতে উভয় পক্ষের অন্তঃসত্তা মহিলাসহ ১২ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। ২৮ জুলাই শুক্রবার দিবাগত রাত পৌনে ১ টার দিকে টেকনাফ পৌরসভার ১নং ওয়াডের নাইট্যংপাড়ার কাউন্সিলর শাহ আলম মিয়ার বাড়ীতে এ হামলা ঘটে। খবর পয়ে পুলিশের এসআই জসিম উদ্দিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তবে এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে পরস্পর বিরোধী বক্তব্য পাওয়া যায়।
এলাকাবাসীর সুত্রে জানা যায়, ওই সময় পৌরসভার পুরাতন পল্লান পাড়ার নুরুল ইসলামের ছেলে কাউন্সিলর কহিনূরের স্বামী শাহ আলমের নেতৃত্বে ২০/২৫ জনের একটি সংঘবদ্ধদল কাউন্সিলর শাহ আলম মিয়ার বাড়ীতে স্বশস্ত্র হামলা চালায়। এতে নাইট্যং পাড়ার কাউন্সিলর শাহ আলম মিয়া, ভাই জাহেদ আলম, তার অন্তঃসত্তা স্ত্রী তসলিমা আক্তার, বৃদ্ধ পিতা হাজী সোনা মিয়া, গর্ভবর্তী বোন জেসমিন আক্তার, মোঃ আলমের স্ত্রী নাসিমা আক্তার, মোঃ শফির ছেলে মোঃ রফিক, আহমদ হোছন, আবদুল করিমের ছেলে আবদুল হামিদ, মোঃ হোছন আহত হয়। পরে আহতদেরকে উদ্ধার করে টেকনাফ হাসপাতালে নেওয়া হলে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে জাহিদ আলমের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় কক্সবাজার থেকে চমেক হাসপাতালের প্রেরণ করা হয়েছে। বর্তমানে তার অবস্থা আশংকাজনক। শুধু তাই নই। এর আগেও তার নেতৃত্বে নাইট্যং পাড়ার নেজাম, হামিদ, জাহাঙ্গীর ও আনোয়ারের বসতবাড়ী ও পরিবারের উপর হামলার ঘটনা ঘটলেও কেউ আইনের আশ্রয় নিতে সাহস পায়নি।
কাউন্সিলর শাহ আলম মিয়া জানান, কাউন্সিলর কহিনুরের স্বামী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রনালয়ের তালিকাভূক্ত ইয়াবা ব্যবসায়ী শাহ আলমের সাথে আমার নামের মিল থাকায় যত্রতত্র আমার পদবী ব্যবহার করে মাদক ইয়াবা পাচার করলে আমি মৌখিকভাবে প্রতিবাদ করি। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে শুক্রবার দিবাগত রাতে শাহ আলম বাড়ীতে এসে নাম ধরে ডাক দিলে গেইট খুলে দিই। পূর্বে থেকে অস্ত্র শ্বস্ত্রে নিয়ে ২০/২৫ জনের সন্ত্রাসী বাহিনী আমি ও পরিবারের সদস্যদের উপর দা, কিরিচ, লোহার রড দিয়ে অতর্কিত হামলা চালায়। এক পর্যায়ে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে সন্ত্রাসীরা সটকে পড়ে। এ ব্যাপারে শনিবার কাউন্সিলর শাহ আলম মিয়া বাদী হয়ে টেকনাফ মডেল থানায় ৮ জনকে জ্ঞাত ও ১২ জনকে অজ্ঞাত আসামী করে এজাহার দায়ের করে।
এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে একইদিন মহিলা কাউন্সিলর কহিনুরের দেবর আবদুল মতলবের ছেলে মোঃ ইউনুছ (৩৮) বাদী হয়ে অপর একটি এজাহার দায়ের করেছে। এতে উল্লেখ করা হয়, রাত ১১ টার দিকে পৌর এলাকার পুরান পল্লান পাড়া এলাকার ইউনুছ, আয়াত উল্লাহ, জসিম, আবদু শুক্কুর, ফারুক ও জুবাইর মোটর সাইকেল যোগে হ্নীলা থেকে বাড়ী ফিরছিল। এসময় পূর্ব থেকে উৎপেতে থাকা সোনা মিয়ার ছেলে জাহেদ আলম, শাহ আলম, মোঃ আলম, মৃত কালুর ছেলে সোনা মিয়া, মোঃ রফিকসহ ৮/১০ জন সন্ত্রাসী পথরোধ করে আক্রমন চালায়। এসময় উপর্যপুরী ছুরির আঘাতে আবদু শুক্কুর ও জসিম গুরুত্বর আহত হয়। আহতদের টেকনাফ হাসপাতালে নিয়ে গেলে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।
এ ব্যাপারে পৌর কাউন্সিলর কহিনুর আক্তার জানান, আমি অসুস্থতার কারনে চট্রগ্রাম অবস্থান করছি। তবে এলাকায় একটি ঘটনার খবর শুনেছি। এ ঘটনায় আমার স্বামী জড়িত নয়। আমার স্বামীকে এ ঘটনায় জড়িয়ে একটি মহল বিভ্রান্ত চড়ানোর চেষ্টা চলাচেছ। কাউন্সিলর শাহ আলমের পরিবারের লোকজন আমার দেবরদের হামলা চালিয়ে গুরুত্বর আহত করা হয়েছে। বর্তমানে দুইজনকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনার বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বিশেষ ভাবে অনুরোধ জানাচিছ।
এ ব্যাপারে টেকনাফ মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আশরাফুজ্জামান জানান, ঘটনাটি শুনে পুলিশের একটি টিম পাঠানো হয়েছে। তবে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন।
Share Button
[Twitter] [Facebook] [Google Plus] [Email]

Comment here