জাতীয়টেকনাফসারাদেশ

টেকনাফে ‘সুফল প্রকল্প বনায়ন’র নামে… পানবরজ, ফলজ গাছ নির্বিচারে কর্তন ! পথে বসেছে হতদরিদ্র চাষীরা : উল্টো মামলায় জড়িয়ে দেওয়ার হুমকি

টেকনাফে ‘সুফল প্রকল্প বনায়ন’র নামে…
পানবরজ, ফলজ গাছ নির্বিচারে কর্তন ! পথে বসেছে হতদরিদ্র চাষীরা : উল্টো মামলায় জড়িয়ে দেওয়ার হুমকি

হ্নীলা প্রতিনিধি:
কক্সবাজারের টেকনাফ রেঞ্জের হ্নীলাইউনিয়নের মুছনী বনবিটসহ অন্যান্য বনবিটে সংরক্ষিত বনাঞ্চলে ‘সুফল প্রকল্প বনায়ন’র নামে ভিলেজার ও অসহায় হতদরিদ্র পরিবার আয়বর্ধক সৃজিত বাগান ও পানবরজ উচ্ছেদ আতংকে রয়েছে। টেকনাফ বন কর্তৃপক্ষ ক্ষমতার অপব্যবহার ও অপশাসন চালিয়ে ভূমিহীন হতদরিদ্র অসহায় পরিবারের দীর্ঘকালের বসত ভিটা এবং পানের বরজ, আম, পেয়ারা, সবজি ও ধান চাষ উপযোগী জায়গায় বনায়ন সুফল প্রকল্পের নামে হয়রানীর অভিযোগ পাওয়া গেছে। দমদমিয়াস্থ ন্যাচার পার্ক জাম বাগানের বন পাহারা দলের সদস্য মোঃ হোছাইন ও মোঃ হাছান দু’সহোদর সামাজিক বনায়নের অংশীদার এবং দীর্ঘ বছর ধরে তাদের পূর্বপুরুষ ও ওয়ালি ওয়ারিশগণ বসবাস করে আসছে। জীবন জীবিকা ও আয় বর্ধনে বিভিন্ন চাষাবাদ করে পরিবারের ঘানি টানতো। তাদের পিতা মৃত আবদুল খালেকও একজন ভিলেজার ছিলেন। তার দু’সন্তানও ভিলেজার হিসাবে রয়েছে। সম্প্রতি বন কর্তৃপক্ষ রোহিঙ্গা শ্রমিক নিয়োজিত করে তাদের পানবরজ ও বিভিন্ন সবজি বাগানসহ বনায়নের নামে চার শতাধিক ফলজ গাছ কেটে সাবাড় করে। এ অবস্থায় আয়ের অন্য কোন উৎস না থাকায় পরিবার পরিজনের জিবিকা নির্বাহের পথ বন্ধ হয়ে এখন পথে বসেছে ওরা। শুধু তাই নই, এমন অমানবিক পরিস্থিতি দেখে স্থানীয়রা উচ্ছেদ আতংকে ভোগছে। অথচ পাহাড়ের শত শত একর জমি এখনো অনাবাদি রয়েছে এবং নাকের ঢগায় বনভূমিতে হাজার হাজার রোহিঙ্গা নাগরিকরা বসবাস করলেও দেখেও না দেখার ভান করছে। কিন্তু স্থানীয় নাগরিকরা সে সুযোগ হতে বঞ্চিত।
তারা বলেন, বন প্রহরী বাহার মুন্সি গত গ্রীষ্ম কালে তাদের কাছে দু’লাখ টাকা চাঁদা দাবী করেছিল। হতদরিদ্র অসহায় পরিবারের সদস্যরা তাকে কোনমতে ১০ হাজার টাকা আদায় করে। এর পর গত ১০ অক্টোবর পুনঃরায় বাহার মুন্সী টাকা দাবী করলে টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করে অভিযোগকারীরা। দাবীকৃত টাকা না পেয়ে রোহিঙ্গা অজ্ঞাত রোহিঙ্গা শ্রমিক দিয়ে যুগ যুগ ধরে গড়ে তোলা তাহাদের সৃজিত বাগান চোখের সামনেই মুহুর্তে ধ্বংস করে ফেলে। এরপরও তাদের ক্ষুদা বাণিজ্য কমছে না।
বন কর্তৃপক্ষের এহেন আচরনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করলে উল্টো ভুক্তভোগীদের বিভিন্ন মামলায় জড়িত করার হুমকি দেয়। এসব হুমকির মুখে হতদরিদ্র পরিবার দিনাতিপাত করছে। বর্তমানে তারা জিবিকা হারিয়ে পথে বসার উপক্রম হয়েছে। ভোক্তভোগী পরিবার কর্তৃক প্রতিকার চেয়ে বিভাগীয় বন কর্মকর্তা, কক্সবাজার দক্ষিন বন বিভাগ বরাবর বনপ্রহরী মুছনী বিট এর বাহার মুন্সীসহ অজ্ঞাত ৫০/৬০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দাখিল করেছে ভুক্তভোগী উত্তর দমদমিয়ার মোঃ হোছন ও মোঃ হাছন।
এদিকে নয়াপাড়া শালবাগান রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন পশ্চিমে উচ্ছেদের নামে লাখ লাখ টাকা খরচ করে চাষকৃত পান বরজ ধ্বংস করে দিয়েছে বন বিভাগ।
ভুক্তভোগী দিল মোহাম্মদ ও নুর মোহাম্মদ বলেন, আশপাশে অনেক রোহিঙ্গাদের বসবাস। আমাদের আয়-রোজগার বলতে কিছুই নেই। স্বর্ন বিক্রি ও ধার কর্জ নিয়ে পান বরজ করছিলাম। তাও ধ্বংস করে দিলো। এখন আমরা এক প্রকার পথের বিখারি। তারা উধ্বতন কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা কামনা করেন।
এবিষয়ে টেকনাফ উপজেলা রেঞ্জ কর্মকর্তা সৈয়দ আশিক আহমদের সাথে যোগাযোগ করা হলে বলেন, উচ্ছেদ অভিযান চলমান প্রক্রিয়া এবং বন ও বাগানের স্বার্থে সুফল বনায়ন কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। এবং উল্লেখিত অভিযোগটি মিথ্যা বলেও দাবী করেন তিনি। ####

Comment here