ক্রাইমটেকনাফ

টেকনাফ ২ বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়ন ও মডেল থানা পুলিশ : ১ ঘন্টায় প্রায় এক কোটি ইয়াবা ধ্বংস

 
টেকনাফ ভিশন ডেস্ক  :  
টেকনাফে এক ঘন্টায় ধবংস করা হয়েছে ৯৬ লাখ ১ হাজার ৪৬৭ পিস ইয়াবা। যার বাজার মূল্য ২৮৫ কোটি ৪ লাখ ৪০ হাজার ১’শ টাকা। এর মধ্যে ৫২ লাখ ৬৯ হাজার ৮৬৭ পিস বিজিবি ও ৪২ লাখ ৩১ হাজার ৬’শ পিস ধবংস করেছে পুলিশ। ইয়াবাছাড়াও বিপুল পরিমান মাদক ধ্বংস করেছে টেকনাফ ২ ব্যাটলিয়ন বিজিবি ও টেকনাফ থানা পুলিশ। টেকনাফের বিভিন্ন পয়েন্টে অভিযান চালিয়ে ২ বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়ন সদস্যরা গত ২০১৭ সালের ২৫ অক্টোবর হতে ২০১৮ সালের ২০ মার্চ পর্যন্ত সময়ে এবং ২০১৮ সালের ১ জানুয়ারি হতে ৩০ জুন সময়ের মধ্যে মাদকদ্রব্য আটক করে।
টেকনাফ ৬ জুলাই শুক্রবার সকাল ১২ টার সময় কক্সবাজারের রামু এ্যাডহক রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এস এম রকিব উল্লাহ প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিতিতে মাদকদ্রব্যাদি ২ ব্যাটালিয়ন সদর অফিস সম্মুখস্থ মাঠে ধ্বংস করা হয়। এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কক্সবাজার রামু সেক্টর কমান্ডার কর্ণেল আব্দুল খালেক, টেকনাফস্থ ২ বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে.কর্ণেল মোঃ আছাদুদ-জামান চৌধুরী, ডিজিএফআই কক্সবাজার অফিসের কর্মকর্তা লে. কর্ণেল জোবায়ের আহম্মেদ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (উখিয়া সার্কেল) কক্সবাজার চাইলাউ প্রু মার্মা,কক্সবাজার অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট রাজীব কুমার বিশ্বাস, সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট রাজীব কুমার দেব ও মুহাম্মদ হেলাল উদ্দিন, ২ বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়নের উপ-অধিনায়ক মেজর শরীফুল ইসলাম জোমাদ্দার, টেকনাফ উপজেলা দায়িত্বপ্রাপ্ত নিবার্হী কর্মকর্তা প্রনয় চাকমা, কোস্ট গার্ড টেকনাফ ষ্টেশন কমান্ডার লে. কমান্ডার ফয়জুল ইসলাম, টেকনাফ মডেল থানার ওসি রনজিত কুমার বড়–য়া, টেকনাফ শুল্ক গোদাম কর্মকর্তা নুরুল মোস্তফা, মাদকদ্রব্য অধিদপ্তর টেকনাফ সার্কেলের পরিদর্শক মোশারফ হোসেন প্রমুখ।
অনুষ্ঠান শেষে বিজিবি রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এস এম রকিব উল্লাহ বলেন, সীমান্ত সড়ক ব্যবস্থাপনার দাবী ছিলো অনেক দিন ধরে। সরকার ইতিমধ্যে সীমান্ত সড়ক নিমার্নের উদ্যোগ নিয়েছে। এটি হয়ে গেলে সহজে অভিযান স্থলে পৌঁছানো সম্ভব হবে। না হয় কোন কোন জায়গা আছে যেখানে বিজিবি টিমকে পৌঁছতে ৫/৬ দিন পর্যন্ত সময় লাগে। অপর এক প্রশ্নে জবাবে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এস এম রকিব উল্লাহ বলেন, ৬/৭ মাস ধরে দেখা যায় নাফনদী পেরিয়ে রোহিঙ্গা প্রাণের মায়া ত্যাগ করে ইয়াবা বহন করছে। এমনকি রাত দু’টার সময়ও দেখা গেছে সাতঁরিয়ে নাফনদী পাড়ি দিয়ে ইয়াবা পাচার করতে। যে সব পয়েন্ট দিয়ে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের সম্ভাবনা রয়েছে সে সব স্থানে বিজিবি টহল জোরদার করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
বিজিবি সুত্রে জানা যায়, ২ বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়ন সদস্যরা গত ২০১৭ সালের ২৫ অক্টোবর হতে ২০১৮সালের ২০ মার্চ পর্যন্ত পাচঁ মাসে সময়ে টেকনাফের বিভিন্ন পয়েন্টে অভিযান চালিয়ে ১৫৮ কোটি ৯ লাখ ৬০ হাজার ১’শ টাকা মূল্যের ৫২ লাখ ৬৯ হাজার ৮৬৭ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট, ৫ লাখ ৯০ হাজার ৮’শ টাকা মূল্যের ১,৪৭৭ বোতল ফেন্সিডিল, ৪৬ হাজার ৫৫০ টাকা মূল্যের ১৩ কেজি ৩’শ গ্রাম গাঁজা, ২ লাখ ৮হাজার ৬৫০ টাকা মূল্যের ৬’শ সাড়ে ৯৫ লিটার বাংলা/চোলাই মদ, ৯ লাখ সাড়ে ৯৭ হাজার টাকা মূল্যের ৩ হাজার ৯৯০ ক্যান আন্দামান বিয়ার, ৮ লাখ ৪৩ হাজার ২৫০ টাকা মূল্যের ৩ হাজার ৩৭৩ ক্যান ডায়াব্লু (বিয়ার ১২%), ৮ লাখ সাড়ে ৭৯ হাজার টাকা মূল্যের ৩ হাজার ৫১৮ ক্যান সিংগা বিয়ার, ৫৪ লাখ ৬৫ হাজার টাকা মূল্যের ২৭ হাজার ৩২৫ প্যাকেট মিয়ানমারের বিভিন্ন প্রকার সিগারেট সহ মোট ১৫৯ কোটি ১৮ লাখ ২৫ হাজার ৬’শ টাকা মূল্যমানের ২৩ প্রতাজির মাদকদ্রব্য ধ্বংস করা হয়।
এদিকে এক ঘন্টা সময়ের ব্যবধানে টেকনাফ থানা প্রা্গংনে শুক্রবার দুপুর ১ টার সময় ধবংস করে ৪২ লাখ৩১ হাজার ৬’শ পিস ইয়াবা। যার বাজার মূল্য ১২৬ কোটি ৯৪ লাখ ৮০ হাজার টাকা।
টেকনাফ মডেল থানা পুলিশ সুত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের ১ জানুয়ারি হতে ৩০ জুন পর্যন্ত সময়ে ১২৬ কোটি ৯৪ লাখ ৮০ হাজার টাকা মূল্যের ৪২ লাখ ৩১ হাজার ৬’শ পিস ইয়াবা, ৯ লাখ ৮৬ হাজার ৪’শ টাকা মূল্যেও ৩ হাজার ২৮৮ ক্যান বিয়ারসহ ১২৭ কোটি ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৪’শ টাকা মূল্যেও বিভিন্ন প্রকার মাদক ধংবস করা হয়।
টেকনাফ মডেল থানার ওসি রনজিত কুমার বড়–য়া বলেন, সীমান্তে মাদক দমনে সমন্বিতভাবে অভিযান জোরদার করা হয়েছে। কোন গড ফাদার বলেন খুচরা বিক্রেতা বলেন কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। মাদক দমনে সকলের সহযোগিতাও চান তিনি।

Comment here