টেকনাফ :
রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীর গুলিতেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন টেকনাফের যুবক আবদু শুক্কুর (৩২)। নিহত যুবক দু’ কন্যা সন্তানের জনক। সে টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ড জাদিমুড়া শালবাগান এলাকার আবুল বসরের ছেলে। ৫ নভেম্বর সকাল ১১ টার দিকে নিজ বাড়ির পাশের হাটাচলার রাস্তায় এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে নিহতের মৃতদেহ উদ্ধার করে।
স্থানীয় সুত্র জানা যায়, বেশ কিছুদিন ধরে আইনশৃংখলা বাহিনী টেকনাফের লেদা, নয়াপাড়া ও শালবাগান এলাকায় অভিযান জোরদার করেছে। র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) , আর্ম পুলিশ ব্যাটলিয়ন (এপিবিএন) রোহিঙ্গা ক্যাম্পের এসব এলাকায় অভিযান চালিয়ে আলোচিত রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী, নুর-উর-নবী, শালমান শাহসহ বেশ কজনকে আটক করেছে। উদ্ধার করেছে এলজি, ইয়াবা ও কিরিচ। তবে এখনো অধরা রয়েছে আলোচিত রোহিঙ্গা সন্তাসী আব্দুল হাকিম, খালেক ও জহির । এদের ধরতে র্যাব ও এপিবি কৌশলী অভিযান অব্যাহত রেখেছে। নিহত আব্দু শুক্কুর বিভিন্ন সময়ে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের ধরতে আইনশৃংখলা বাহিনীকে সহায়তা দিয়ে আসছিলো। এতে ক্ষ্প্তি হয়ে উঠে রোহিঙ্গা সস্ত্রাসী জকির। এর জের ধরে এক পর্যায়ে বৃহস্পতিবার সকাল ১১ টার দিকে সরাসরি শুক্কুরকে গুলি করে হত্যা করে পথের কাটা সরালো তারা এমনটি মনে করছেন নিহতের পরিবার।
নিহতের পিতা আবুল বসর বলেন , ‘ আমার ছেলে আব্দু শুক্কুর সকাল বেলা ঘর হতে বের হয়। পার্শ্ববর্তি চাচার বাড়ির পাশ দিয়ে সে দোকানের দিকে যাওয়ার সময় আগে থেকে উৎপেতে থাকা রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী কয়েকদিক থেকে তাকে ঘেরাও করে। সামনা সামনি থাকা রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী জকির ডাকাত সরাসরি তাকে কয়েক রাউন্ড গুলি ছুড়েঁ । এক পর্যায়ে মৃত্যু নিশ্চিত জেনে ওরা পাহাড়ের দিকে চলে যায়। প্রকাশ্য দিবালোকে শত শত স্থানীয় ও রোহিঙ্গারা এ ঘটনার প্রত্যক্ষ্যদর্শী । তবে কেউ ডাকাত গ্রুপের ভয়ে এগিয়ে আসেনি। ’
তিনি আরো জানান, আগের দিন রাতেও র্যাব সদস্যরা শালবাগানে অভিযান পরিচালনা করে। এ সময় আমার ছেলে আইনশৃংখলা বাহিনীর সাথে ছিলো এমন অজুহাতে এমন নিষ্ঠুর ঘটনা করলো জকির বাহিনী। এদিকে ঘটনাস্থলে গিয়ে টেকনাফ মডেল থানার পরিদর্শক (অপারেশন) খোরশেদ আলম মৃতদেহের সুরত হাল প্রতিবেদন তৈরী করে লাশ উদ্ধার করেন। তিনি বলেন , ‘মৃতদেহের শরীরে বেশকটি গুলির চিহ্ন দেখা গেছে। ’
হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান রাশেদ মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘ রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা দিন দিন বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। একই এলাকায় বছর খানেক আগে যুবলীগ সভাপতি ওমর ফারুককে হত্যা করে তারা। এবার বাংলাদেশী শুক্কুরকে হত্যা করলো প্রকাশ্যে দিবালোকে। ’
টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার দায়িত্বরত পরির্দশক (তদন্ত) আব্দুল আলিম বলেন, ‘ ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে প্রয়োজনীয় পুলিশ ফোর্স পাঠানো হয়েছে। ’ এ বিষয়ে যতাযথ আইনী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে দায়িত্ব পালনকারী সংস্থা আর্ম পুলিশ ব্যাটলিয়ন-১৬ ( কক্সবাজার) এর অধিনায়ক (এসপি) হেমায়েতুল ইসলাম বলেন, ‘ ঘটনাস্থলের কয়েক গজের মধ্যেই এপিবিএন ক্যাম্প রয়েছে। আর এখানে এ ধরনের ঘটনা দূভাগ্যজনক। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে রয়েছে। আইনশৃংখলা বাহিনী জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে কাজ শুরু করেছে।’
Comment here