রোহিঙ্গা সমাচার

নব-বধুর দেন-মোহর বিক্রি করে ইয়াবায় মত্ত রোহিঙ্গা স্বামী !

টেকনাফ প্রতিনিধি :
মেহেদীর রং না মুছতেই স্ত্রীর দেন-মোহরানার ৬ ভরি স্বর্ণ বিক্রি করেই ইয়াবা পাচারে মত্ত রয়েছে রোহিঙ্গা যুবক এমরান খান। এর প্রতিবাদ করায় এক কাপড়ে ঘর হতে তারিয়ে দিয়েছে স্ত্রীকে। এর প্রতিকার চেয়ে দ্বারে দ্বাারে ঘুরছে বাংলাদেশে পিতা-মাতাহীন নুর কায়েদা। ঘটনাটি ঘটেছে টেকনাফ নয়াপাড়া রোহিঙ্গা শিবিরের এইচ বøকে ।
জানা যায়, টেকনাফের নয়াপাড়া রোহিঙ্গা শিবিরের এইচ বøকে বসবাসকারী মংডু গর্জনিয়া এলাকার মৃত মো: হাসেম’র ছেলে মো: এমরান ও মংডু শহরের হারি পাড়ার আব্দুর রহিমের মেয়ে নুর কায়দার সাথে গত ২০১৮ সালের ১১ নভেম্বর ইসলামী শরিয়া মোতাবেক বিয়ে সম্পন্ন হয়। কথা ছিলো ২০১৭ ২৫ আগষ্ট শুক্রবার মিয়ানমারের মংডুতেই তাদের বিয়ে হবে। নগদ সাড়ে ১০ ভরি স্বর্ণালংকার পরিশোধ করা হয়। সেই অনুযায়ী সব ঠিকটাক। কিন্তু বিধিবাম। ওই দিনই মিয়ানমারে রোহিঙ্গা সংকটরে সৃষ্টি হয়। ওই দিন আর বিয়ে বন্ধন হয়ে উঠেনি। রোহিঙ্গা সংকট শুরুর কয়েকদিন পর মো: এমরান তার পরিবারসহ বাংলাদেশে পালিয়ে এসে টেকনাফ নয়াপাড়া রোহিঙ্গা শিবিরে আশ্রয় নেন। মিয়ানমারে রয়ে যায় নুর কায়দার পরিবার। এক বছর পর ২০১৮ সালের নভেম্বরে নুর কায়দাও পিতামাতার সম্মতিতে মো: এমরানের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার জন্য বাংলাদেশে আসে এবং ১১ নভেম্বর টেকনাফের ইসলামাবাদ এলাকায় জনৈক গুটি ফারুকের বাড়া ঘরে স্বামীর সাথে বসবাস শুরু করে। দাম্পত্য জীবনের কয়েক মাস অতিবাহিত হওয়ার পর হতে মিয়ানমার হতে দেন-মোহরের স্বর্ণালংকার স্ত্রী পিতার কাছে রেখে আসায় প্রায় সময় কথাকাটাকাটি শুরু হতে থাকে। মিয়ানমার হতে স্বর্ণ না আনা, পর্যাপ্ত যৌতুক না দেওয়া ইত্যাদি বলে প্রায় সময় স্ত্রী নুর কায়দাকে মানসিক ও শারিরীক নির্যাতন চালাতে থাকে। এক পর্যায়ে স্ত্রী বাপের বাড়ীতে জমা থাকা দেন মোহরের ৬ ভরি স্বর্ণ স্বামীর হাতে তুলে দেন। সেই স্বর্ণ আর চোখে দেখেনি। দেন-মোহরের স্বর্ণ বিক্রিলব্ধ টাকা দিয়ে একটি সিন্ডিকেটের সাথে ইয়াবা পাচারে মত্ত হয়ে উঠে। বারবার ইয়াবা পাচার না করা ও দেন মোহরের দাবী করায় এক পযার্য়ে গত ১৬ জুন নয়াপাড়া রোহিঙ্গা শিবিরের ঘর হতে স্ত্রীকে বের করে দেয়। বাংলাদেশে পিতামাতা হীন রোহিঙ্গা নব-বধু এখন তিন মাস যাবত প্রতিকারের আশায় বিচারকের দ্বাওে দ্বারে ঘুরছে। নুর কায়দা জানান, ‘পিতামাতাকে মিয়ানমারের রেখে স্বামীর কাছে চলে এসেছি। ম্বামী বাংলাদেশী আইডি কার্ড বানিয়েছে। আবার রোহিঙ্গা হিসেবে ক্যাম্পে ডাটা এন্ট্রিও করেছে। আমাকে বাংলাদেশী আইডি কার্ড করে দেওয়ার কথা বলে অনেকদিন টেকনাফের বাড়া বাসায় রেখেছে। এখনো রোহিঙ্গা হিসেবেও ডাটা এন্ট্রিও করতে দেয় নি। মোহরানার ৬ ভরি স্বর্ণ নিয়ে ইয়াবা ব্যবসায় দিয়েছে। অন্য মোহরানা গুলো মিয়ানমার হতে নিয়ে আসতে চাপ দিয়ে ঘর হতে বের করে দিয়েছে। ’
খোজঁ নিয়ে জানা যায়, মো: এমরানের (০১৮৩০৬৬৮১৪৯) আপন বোনের স্বামী জকরিয়া ( ০১৮৭১২৬৫৬৩৯) , জেটতো বোনের স্বামী মো: রফিক (০১৮৬০২৪০৯২১) ও তার নিকট আত্বীয় টেকনাফ উপজেলা পরিষদের পেছনে বসবাসকারী রোহিঙ্গা ফয়েজু সহ একটি পাচারকারী সিন্ডিকেট সক্রিয় রয়েছে। এ চক্রটি রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী আব্দুল হাকিম ডাকাত ও নয়াপাড়া আনসার ক্যাম্প লুটের নায়ক বন্দুক যুদ্ধে নিহত নুরুল আলমের সহযোগি হিসেবে এখনও সক্রিয় থেকে ইয়াবা পাচার ও অপকর্মে লিপ্ত রয়েছে।
এ চক্রটি বাংলাদেশী জাতিয় পরিচয় পত্র সংগ্রহ করেছে। ব্যবহার করছে ইনটারনেট সংযোগসহ মোবাইল সেট। এবং সময় সুযোগে টেকনাফের বিভিন্ন ভাড়াবাসা, উপজেলা পরিষদের পেছনের নিজস্ব ঘরবাড়ী ও নয়াপাড়া-শালবনের রোহিঙ্গা শিবিরের বাসাতে অবস্থান নিয়ে নির্বিঘেœ অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে। রোহিঙ্গা যুবক এসব মো: এমরান অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তবে স্ত্রীর সাথে টানাপোড়েন চলছে বলে জানান।
সচেতন মহল দাবী করেছে মোবাইল গুলো ট্রেকিং করলেই এদের অপকর্মেও সব রহস্য বের হয়ে আসবে। এদিকে টেকনাফ মডেল থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাস জানান, রোহিঙ্গা ক্যাম্প গুলো মাদক, সন্ত্রাসী ও অপকর্মেও ডিপোতে পরিণত হয়েছে। ইতিমধ্যে সেখানে সভা সমাবেশ করে সর্তক করা হয়েছে। সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়ার সাথে সাথেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও তিনি জানান।

Comment here