কক্সবাজারক্রাইমটেকনাফসারাদেশ

নাফনদীতে বিজিবির অভিযান : মাদক পাচারকালে বৈদেশিক নাগরিকসহ আটক -৪

মুহাম্মদ জুবাইর:
কক্সবাজারে টেকনাফ ব্যাটালিয়ন (২বিজিবি) পৃথক অভিযান চালিয়ে বাংলাদেশ -মিয়ানমার ট্রানজিট ঘাট দিয়ে বিদেশী ট্রলার করে মাদক পাচারকালে ৭কোটি ৭৪লাখ টাকা মূল্যের ২লাখ ৫৮হাজার ইয়াবা ও বৈদেশিক নাগরিকসহ ৪ মাদক কারবারীকে আটক করেছে। ধৃতরা হলেন- মিয়ানমারের দব্রিচাই এলাকার নেম ইউ চ (৩৬), মন্দ্রাছের ছেওয়াচি (৩৮), টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের শীর্ষ মানবপাচারকারী ও ইয়াবা ব্যবসায়ী মো: রবিউল ইসলামের ছেলে মো: জাহাঙ্গীর আলম (৪২) ও সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীরদ্বীপের মৃত কালু মিয়ার ছেলে মো. হাফেজ আহমেদ (৪০)।
এসময় তাদের ব্যবহৃত ট্রলারটিও জব্দ করা হয়েছে। ২ বিজিবির অধিনায়ক লে.কর্ণেল শেখ খালিদ মোহাম্মদ ইফতেখার ২৭ জানুয়ারী দিবাগত রাত ৯ টায় ব্যাটালিয়ন সদর দপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান- মিয়ানমারে ২ নাগরিক ও ২ বাংলাদেশীসহ একটি ট্রলার বাংলাদেশের জলসীমায় প্রবেশের সময় মিয়ানমারের সীমান্ত রক্ষী বাহিনী (বিজিপি) এর ৩টি স্পীড বোট দিয়ে নাফ নদীতে ধাওয়া করলে ট্রলারটি নাফনদীর জিন্নাহখাল নামক স্থানে বালুচরে আটকেদেয়। পরবর্তীতে ট্রলারে অবস্থানরত আটক ৪ ব্যবসায়ী পালিয়ে যাওয়ার সময় বিজিবি টহলদল তাদেরকে আটক করতে সক্ষম হয়। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে জবানবন্দি সন্দেহজনক হওয়ায় ট্রলারটিকে অপর দু’টি ট্রলারের সাহায্যে টেনে টেকনাফ জেটিঘাটে এনে তল্লাশীকালে ট্রলারের ইঞ্জিনের নীচ হতে অভিনব পদ্ধতিতে লুকানো অবস্থায় একটি বস্তা উদ্ধার করা হয়। এ বস্তার ভেতর থেকে ২ কোটি ৩৪ লাখ টাকা মূল্যমানের ৭৮ হাজার ইয়াবা ও ২ বিদেশী নাগরিকসহ ৪ জনকে আটক করা হয়।
এছাড়া ২৬ জানুয়ারি হোয়াইক্যং খারাংখালী এলাকায় আনুমানিক রাত ১২টা ১৫ মিনিটে সন্দেহভাজন ৫-৬ জন মাদক কারবারীকে একটি কাঠের নৌকায় মিয়ানমারের মুদদ্বীপ থেকে নাফনদী পার হয়ে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে আসতে দেখে। নৌকাটি শূন্যরেখা অতিক্রম করে নাফ নদীর তীরে আসলে ২-৩ জন লোক বেড়িবাঁধ দিয়ে নৌকাটির কাছে যায়। তারা নৌকাটির কাছে গেলে নৌকা হতে মাদকের চালান তাদেরকে হস্তান্তর করার সময় বিজিবির টহলদল তৎক্ষণাত তাদেরকে চ্যালেঞ্জ করে। বিজিবি’র চ্যালেঞ্জকে উপেক্ষা করে মাদক কারবারীরা বিজিবির টহলকে লক্ষ্য করে গুলি ছুঁড়লে আত্মরক্ষার্থে বিজিবির টহলও পাল্টা গুলি ছোঁড়ে। এতে অজ্ঞাতনামা মাদক কারবারীরা নৌকা হতে লাফিয়ে নাফ নদী দিয়ে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে পালিয়ে যায়। এসময় ঘটনাস্থলে তল্লাশী করে নদীর তীরে ২টি বস্তা উদ্ধার ৫কোটি ৪০ লাখ টাকা মূল্যমানের ১ লাখ ৮০ হাজার ইয়াবা জব্দ করতে সক্ষম হয়। তিনি আরো জানান- অবৈধ মাদক বহন এবং পাচারের দায়ে অজ্ঞাত দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে টেকনাফ থানায় একটি মামলা দায়েরের প্রক্রিয়াধীন।
উল্লেখ্য,সীমান্ত সুরক্ষা ছাড়াও চোরাচালান, মাদকদ্রব্য আটক, অবৈধ অনুপ্রবেশ বন্ধ এবং আন্তঃ রাষ্ট্রীয় সীমান্ত অপরাধ দমনে বিজিবি সতর্ক প্রহরায় থাকে জানিয়েছেন অধিনায়ক।

Comment here