শিক্ষা ও ধর্ম

নারী ও কন্যা শিশুর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে উদ্বুদ্ধ যুব সমাবেশ সম্পন্ন

টেকনাফ প্রতিনিধি :

যুব সমাজকে নারী নির্যাতনের ক্ষতিকর দিকগুলো সম্পর্কে সচেতন করতে এবং নারী ও কন্যা শিশুর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে উদ্বুদ্ধ করার লক্ষ্যে সহকারি প্রধান শিক্ষক বাসি রাম দে এর সভাপতিত্বে ২২ সেপ্টেম্বর রবিবার
‘যুব সমাবেশ’ টেকনাফ মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের হল রুমে অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে ১২ থেকে ১৬ বছর বয়সী কিশোর ও কিশোরীর উপস্থিতিতে এবং অংশ গ্রহণে তিনটি ইভেন্টের আয়োজন করা হয়। প্রথমে সপ্তম ও নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীর মধ্যে বিতর্ক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। বিতর্কের বিষয় ছিল”নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে নারীদেরকে সচেতন করাই সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ”।
দ্বিতীয়ত, নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে মাল্টিসেক্টরাল সেবা সমূহের যথাযথ ব্যবহার ও আরও শক্তিশালী করনের মাধ্যমে সেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে আলোচনা সভা হয়।উক্ত সভায় বিশেষ অতিথি টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সুমন বড়ুয়া বলেন, সমাজে প্রতিটি ঘরে প্রতিটি মানুষের নারী নির্যাতনের প্রতি সচেতন হতে হবে। শুধুমাত্র প্রোগ্রাম করলে হবে না। তাদেরকে সেবা গ্রহণের জন্য আইনের আশ্রয় জোড়দার করতে হবে। শুধুমাত্র প্রচার করলে হবেনা, মাল্টিসেক্টরাল সেবা সমূহের যথাযথ ব্যবহার সম্পর্কে সকল শ্রেণীর মানুষদের বিশেষভাবে অবগত করতে হবে। স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি নুরুল বশর বলেন,মাদক এবং নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধের জন্য সরকারের বিভিন্ন ধরণের উদ্যেগের কারণে বর্তমানে নারী নির্যাতন অনেক কমে আসছে। আস্থা প্রকল্পের এই সুন্দর আয়োজন আমাদের স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য সুফল বয়ে আনবে। ভবিষ্যতে ও আমরা এর ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে চেষ্টা করব। বিশেষ অতিথি টেকনাফ প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি জাবেদ ইকবাল চৌধূরী বলেন, নারী এবং শিশুদের প্রতি সহিংসতা বন্ধ করতে সকল শ্রেণীর মানুষের এগিয়ে আসতে হবে। শুধুমাত্র নারীরা নয় পুরুষদের ও এগিয়ে আসতে হবে। প্রত্যেকে যদি নিজের অবস্থান থেকে এগিয়ে আসে তাহলে নির্যাতন অনেকাংশে কমে আসবে। তাছাড়া নারীর মাধ্যমেই বতর্মানে নারীরা সহিংসতার শিকার হচ্ছে। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জনাব আনন্দময় ভৌমিক এই কার্যক্রম এর জন্য তিনি প্রকল্পের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারাদের ধন্যবাদ জানান। পাশাপাশি আস্হা প্রকল্পের সার্বিক কার্যক্রম এ তিনি সহযোগিতা করবেন বলে আস্বস্ত করেন। প্রধান অতিথি ও উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান তাহেরা আক্তার মিলি বলেন,নারী ও শিশুর নির্যাতন প্রতিরোধে কিশোর কিশোরিদের নিয়ে আস্হা প্রকল্পের এই মহতি কার্যক্রম প্রশংসার দাবিদার। নারী ও শিশুর নির্যাতন প্রতিরোধে ছাত্র-ছাত্রীদেরকেও এগিয়ে আসতে হবে। তিনি বলেন ইপসার পাশাপাশি নিজেদের মধ্যেও এই ধরনের আয়োজন করতে হবে।
সমাবেশে কিশোর-কিশোরীর বাল্য বিবাহের ক্ষতিকর দিক ও প্রতিকার বিষয়ে ও তিনি আলোচনা করেন।
এছাড়াও ইপসা-আস্হা প্রকল্পের প্রকল্প সমন্বয়কারী জনাব জসিম উদ্দিন আস্হা প্রকল্পের লক্ষ্য- উদ্দেশ্য, কার্যক্রম ও অর্জন সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেন। আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন স্কুলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জনাব দিলিপ কুমার দাস,আস্থা প্রকল্প UNFPA কক্সবাজার জেলা প্রতিনিধি জনাব এস এম ইকবাল হোসাইন, ম্যানেজিং কমির সদস্যগন প্রমুখ।
তৃতীয়তঃ
অনুষ্ঠানে সকল অংশগ্রহণকারী নারী ও কন্যা শিশুর প্রতি জেন্ডার ভিত্তিক
সহিসংতা প্রতিরোধে শপথ গ্রহণ করেন ও সিগনেচার ক্যাম্পেইং করা হয়। শপথ বাক্য পাঠ করান টেকনাফ মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক বাসি রাম দে।
পরিশেষে বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক অঙ্গিকার ব্যানারে মন্তব্য প্রদানের মাধ্যমে যুব
সমাবেশ সমাপ্তী ঘোষনা করেন এবং এই ধরনের উদ্যেগ গ্রহনের জন্য ইপসা, আইন
ও সালিশ কেন্দ্র এবং ইউএনএপপিএ’কে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন ।
প্রায় চার শতাধিক কিশোর-কিশোরীর উপস্থিতিতে আস্থা প্রকল্পের উদ্যোগে
নেদারল্যান্ডসএম্বাসির অর্থায়নে, ইউএনএফপিএ এবং আইন ও সালিশ কেন্দ্রের সহযোগিতায় ইপসা এই সমাবেশের আয়োজন করে।

Comment here