এক্সক্লুসিভটেকনাফপর্যটনসারাদেশ

নিরাপদে আছেন সেন্টমার্টিনে আটকে পড়া পর্যটকরা

মুহাম্মদ জুবাইর:
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপের কারণে দেশের সমুদ্র উপকূলকে ৪ নম্বর হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। এতে বন্ধ রয়েছে কক্সবাজার ও টেকনাফের সঙ্গে সেন্টমার্টিন দ্বীপের জাহাজ চলাচল। ফলে গত বুধবার ও তার আগে থেকে সেন্টমার্টিনে ভ্রমণে গিয়ে প্রায় ৪ শতাধিক পর্যটক আটকা পড়েছেন। তাদের অনেকেই বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার ফিরে যাবার কথা ছিল। আবহাওয়া পরিস্থিতি অনুকুলে না হওয়ায় তারা নিজ গন্তব্যে ফিরে যেতে পারেনি।
সেন্টমার্টিনদ্বীপের ইউপি চেয়ারম্যান নুর আহমদ জানিয়েছেন, বৈরী আবহাওয়ার কারণে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন রুটে জাহাজ চলাচল বন্ধ রয়েছে। আবহাওয়া অফিস থেকে সমুদ্র উপকূলকে ৪ নম্বর হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। তাই তারা সেখানে আটকা পড়ে। বর্তমানে দ্বীপে প্রায় চার শতাধিক পর্যটক সমুদ্র কুটির রিসোর্ট, ও নীল দিগন্তসহ অন্যান্য রিসোর্টে রয়েছেন। তারা নিরাপদে রয়েছেন। তাদের কোনো সমস্যা হচ্ছে না। এবিষয়ে সমুদ্র কুটির রিসোর্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহমুদ ফয়সাল খাঁন এর সাথে মুঠোফোনে কথা হলে জানান, তার রিসোর্টে ৪০ জন পর্যটক রয়েছে। ২৩ অক্টোবর (জুমাবার) পর্যন্ত তাদের রুম বুকিং দেওয়া আছে। অপর দিকে নীল দিগন্ত রিসোর্টের ম্যানেজার জাহাঙ্গীর আলম বলেন তাঁর হোটেলে ২শত ৯০ জন পর্যটক রয়েছে। তাদেরও ২৩ অক্টোবর (জুমাবার) পর্যন্ত তাদের রুম বুকিং দেওয়া আছে। আবহাওয়া পরিস্থিতি অনুকূলে থাকলে পর্যটকবাহী জাহাজ কর্ণফুলী এক্সপ্রেস শনিবার সেন্টমার্টিন আসবে। তবে আবহাওয়া পরিস্থিতি যদি প্রতিকুলে থাকে, তাহলে হোটেলে অবস্থানরত পর্যটকদের বিষয়ে আমরা মানবিক ব্যবস্থায় যাহা প্রযোজ্য গ্রহণ করবো।
মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলার বাসিন্দা, নীল দিগন্ত রিসোর্টে থাকা পর্যটক ও “আমার বাজার লিঃ ” এর আসলাম ভুুঁইয়ার পুত্র শহিদ আফ্রিদি বলেন, তারা মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলা থেকে ৩৫০ জনের “আমার বাজার লিঃ ” নামে একটি গ্রুপ, ২১ অক্টোবর (বুধবার) কক্সবাজার হয়ে কর্ণফুলী জাহাজে করে সেন্টমার্টিন ভ্রমণে যায়। তারা সেখানে শুক্রবার পর্যন্ত থাকার কথা ছিল। সেখানে অবস্তানরত তাদের সাথীরা নিরাপদে আছে। দ্বীপের বাসিন্দা ও হোটেল কতৃপক্ষ এবং প্রশাসন তাদের নিয়মিত খোঁজ খবর রাখছে।
বাংলাদেশ ছাত্রলীগ সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন সাধারন সম্পাদক জিয়াউর রহমান হ্রদয় বলেন, সাগর উত্তাল ও বৈরি আবহাওয়ায় কক্সবাজার থেকে জাহাজ না আসায় দ্বীপে শত শত পর্যটক অবস্থান করছেন। আটকে পড়া পর্যটকরা বিভিন্ন হোটেলে নিরাপদে আছেন। আমরা দ্বীপ বাসী ও ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দ সর্বদা পর্যটকদের খোঁজ রাখছেন।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম জানিয়েছেন, হুঁশিয়ারি সংকেত উপেক্ষা করে সেন্টমার্টিন দ্বীপে যে সব পর্যটক রয়ে গেছেন তারা যাতে কোনো সমস্যায় না পড়েন সে ব্যপারে সেন্টমার্টিন পুলিশ ও স্থানীয় জন প্রতিনিধিদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। আটকে পড়া পর্যটকদের সাশ্রয় মূল্যে থাকা এবং খাওয়ার ব্যবস্থা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলা হয়েছে।
কক্সবাজার আবহাওয়া অফিসের কর্মকর্তা মো. আব্দুর রহমান জানান, সাগরে লঘুচাপের কারণে সমুদ্র বন্দরসমুহকে ৪ নম্বর হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলেছে আবহাওয়া অধিদফতর। লঘুচাপের কারণে সাগর উত্তাল রয়েছে। কক্সবাজারে ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে। বৃহস্পতিবার ভোর ৬টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত ৭৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। শুক্রবারও (২৩ অক্টোবর) ভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে।
সেন্টমার্টিন পুলিশ ইনচার্জ, তারেক মাহমুদ বলেন, সেন্টমার্টিনে প্রায় ৪’শ ১৩ জন পর্যটক আটকে পড়েছেন। আটকে পড়া পর্যটকদের খোঁজ-খবর রাখা হচ্ছে এবং তাদের সৈকতে না যেতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
এদিকে কক্সবাজার থেকে কর্ণফুলী এক্সপ্রেস নামে একটি পর্যটবাহী জাহাজ চলাচলের অনুমতি ফেলেও এখন পর্যন্ত টেকনাফ থেকে কোনো পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচলের অনুমতি পায়নি।

Comment here