কক্সবাজারক্রাইমচকরিয়াসারাদেশ

পরকিয়া প্রেমের বলী খাজামঞ্জিল এলাকার মোহসেনা

ডেস্ক নিউজ:
কক্সবাজার শহরের খাজামঞ্জিল এলাকার বাসিন্দা মোহসেনা আক্তার (৩৭) এর লাশ পেকুয়া উপজেলার মেহেরনামার নুইন্যামুইন্যা এলাকার ব্রীজের পাশ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।

২৫ জানুয়ারি সকালে স্থানীয় কৃষকরা জমিতে কাজ করতে গেলে রক্তাক্ত অবস্থায় এক মহিলার লাশ পড়ে থাকতে দেখলে পুলিশে খবর দেয়। এদিকে নিহত মোহসেনা আক্তারের খাজামঞ্জিলস্থ বাড়িতে গিয়ে স্থানীয় প্রতিবেশীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, মোহসেনার স্বামী আবু তৈয়ব (রোহিঙ্গা) মালয়েশিয়া প্রবাসী ছিল।
তার সাথে মালয়েশিয়া থাকতো চকরিয়া উপজেলার কোনখালী ইউনিয়নের বটতলী এলাকার রিদুয়ান। সেখানে থাকা অবস্থায় মোহসেনার সাথে রিদুয়ানের পরকিয়া সম্পর্ক হয়। পরে সেই খবর জানাজানি হলে আবু তৈয়ব বিষপানে মালয়েশিয়াতে প্রায় ১ বছর আগে আত্মহত্যা করে। পরে রিদুয়ান দেশে এসে মোহসেনার সাথে সম্পর্ক রাখে। সে সুবাদে রিদুয়ান প্রায় সময় মোহসেনার বাড়িতে আসা যাওয়া করতো। মোহসেনার ২ ছেলে এবং ১ মেয়ে আছে।
নিহত মোহসেনার ছেলে আরিফ (১৭) জানান,আমার মায়ের কাছ থেকে রিদুয়ান প্রায় ৫ লাখ টাকার মত ধার নেয়। সেই টাকা দেওয়ার কথা বলে ২৪ জানুয়ারী মাকে ডেকে নিয়ে যায়। বিকালে মা কোনখালী গেছে জানতাম। এখন সকালে মায়ের মৃতদেহ ফেইসবুকে দেখে এখন ঘটনাস্থলে এসেছি। তবে রিদুয়ানকে তার মা বিয়ে করেছে বলে জানায় সে। আরিফের দাবী সৎবাবা পরিকল্পিত ভাবে মা কে ডেকে এনে হত্য করেছে। রিদুয়ানের স্ত্রী সন্তান রয়েছে বলে জানা গেছে।
পেকুয়া থানা ওসি মোহাম্মদ আলী জানান, খবর পেয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। লাশের পাশ থেকে একটি ছুরি এবং ব্যাগ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহত মহিলার পায়ের রগ কাটা ছিল এবং বুকে বেশ কয়েকবার ছুরিকাঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এ ঘটনায় এখনো কাউকে আটক করা হয় নি।
এ ব্যাপারে প্রত্যক্ষদর্শী নজরুল ইসলাম বলেন, সকালে বোরো চাষের জন্য জমিতে আমরা কয়েকজন শ্রমিক কাজ করতে যায়। এ সময় বিলের মাঝে একটি রক্তাক্ত মহিলার লাশ দেখতে পায়। পরে আমরা পুলিশকে খবর দেয়। স্থানীয়দের ধারণা ওই মহিলাকে অন্য কোথাও খুন করে গভীররাতে বিলে ফেলে রেখে চলে যায় ঘাতকরা।
সরেজমিনে দেখা যায়, বিলের মাঝে বোরকা পড়া অবস্থায় পড়ে ছিলো মহিলা লাশ। দুই পা ও বাম হাতের রগ কেটে দেয়া হয়েছে। বুকের মাঝখানে রক্তে ভিজে গেছে বোরকা। কাটা হাত থেকে রক্ত ঝরে পড়ছে মাটিতে। লাশের পাশে একটি ভ্যানেটি ব্যাগ ছিলো। ব্যাগের ভেতর থাকা মুঠোফোন, জাতীয় পরিচয়পত্র থেকে সহজেই শনাক্ত করা গেছে নিহত মহিলার পরিচয়।
পেকুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মোহাম্মদ আলী আরো বলেন, “সিআইডি ক্রাইমসীনের উপাত্ত সংগ্রহ করেছে। পিবিআই টিমও আসছে তদন্তের কাজে।আপাতত এইটুকু বলা যায় নৃশংসভাবে তাকে হত্যা করা হয়েছে। অন্যকোথাও খুন করে গভীররাতে হয়তো লাশ বিলের মাঝে ফেলে গেছে ঘাতকরা। তবে কি কারনে খুন করা হয়েছে তা অগ্রিম বলতে পারছিনা।

Comment here