কক্সবাজারক্রাইমরোহিঙ্গা সমাচার

ফাঁসির দড়িতে সেলফি তুললেন যুবক

জেলা প্রতিনিধি কক্সবাজার

পারিবারিক কলহের জেরে স্ত্রীর সঙ্গে অভিমান করে ফেসবুকে ফাঁসির সেলফি ও স্ট্যাটাস দিয়েই আত্মহত্যা করেছেন রেজাউল করিম রনি (৩২) নামের এক যুবক।

বুধবার ভোরে কক্সবাজার শহরের পাহাড়তলীর নজির হোসেনের ঘোনায় নিজ বাড়িতে গলায় রশি দিয়ে তিনি আত্মহত্যা করেন বলে পারিবারিক সূত্র দাবি করেছে। আত্মহত্যার আগে তার দেয়া স্ট্যাটাস ও সেলফি এখন ফেসবুকে ভাইরাল।

স্থানীয় সূত্র জানায়, কক্সবাজার শহরের পাহাড়তলীর নজির হোসেনের ঘোনার আলী আহমদের ছেলে রেজাউল করিম রনি কলেজে পড়াকালীন প্রতিবেশী পশ্চিম পাহাড়তলীর কহিনুরের প্রেমে পড়েন। পরে বিয়ে হয় তাদের। সংসার জীবনে রনি-কহিনুর দম্পতির ৮ বছর বয়সী একটি মেয়ে ও ৬ বছর এবং ৬ মাস বয়সী ৩টি সন্তান রয়েছে।

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, প্রেমের বিয়ে হলেও বিগত কিছুদিন ধরে পারিবারিক কলহে জড়িয়ে পড়েন তারা। ফলে ঝগড়া লেগেই থাকত স্বামী-স্ত্রীর মাধ্যে। মঙ্গলবারও ঝগড়া হয় তাদের। এরপর সন্তানদের নিয়ে একই এলাকায় বাপের বাড়ি চলে যায় স্ত্রী কহিনুর। ভালোবাসার মানুষটি তাকে না বুঝে বাপের বাড়ি চলে যাওয়ার ক্ষোভ ও অভিমানে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন রনি।

ফাঁসির দড়িতে সেলফি তুললেন যুবক

এরপর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে তার আইডিতে একটি স্ট্যাটাস দেন বুধবার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে। এ সময় গলায় নীল রংয়ের একটি রশি লাগানো সেলফিও আপলোড করেন তিনি। সঙ্গে স্বামী-স্ত্রীর যুগল একটি ছবি এবং অভিমানী কিছু কথা লেখা স্ট্যাটাস দেন রনি। ধারণা করা হচ্ছে, এরপরই তিনি ফ্যানে ঝুলে আত্মহত্যা করেন।

নিচে তার ফেসবুক স্ট্যাটাসটি হুবহু তুলে ধরা হলো- ‘আমি চলে যাব জীবনের প্রথম প্রেম শেষ পর্যন্ত একটা মনের মানুষের মধ্যে? মাঝে মধ্যে মনে হতো না? আমি একা নই, কিন্তু কহিনুর। আমি চলে যাচ্ছি মানুষ হিসেবে মরেছি আমি। মনে পড়ে গেলো বৃষ্টি বন্ধ ব্যর্থ আজ। চলে গেলাম। আমাদের ছোট ছাত্রজীবনে প্রথম প্রেম শেষ করে মৃত্যুর কাছে? এসে সাক্ষ্য দিয়ে যেতে হবে না। আমি ভালোবাসি। আমি জানি না তবে আমি নিশ্চিত। মেয়ে তুমি কি আমার? সঙ্গে দেখা হবে। আমি ভালোবাসি মেঘ আর দেখা হবে না? বলতে পারি।’

কক্সবাজার সদর মডেল থানা পুলিশের ওসি রনজিত বড়ুয়া বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, খবর পেয়ে দুপুর ১২টার দিকে এসআই জামাল হোসেন ঘটনাস্থলে গিয়ে বাড়ির দরজা ভেঙে মরদেহ উদ্ধার করে। ময়নাতদন্ত শেষে মাগরিবের আগে মরদেহটি রনির বড় ভাই আনিসের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

এসআই জামাল হোসেন বলেন, স্ত্রী বলেছেন মঙ্গলবার কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে তাকে প্রহার করেন রনি। এরপরই তিনি সন্তানদের নিয়ে বাপের বাড়ি চলে যান। তাদের ভেতর পারিবারিক কলহ বেশ কিছু দিন আগে থেকেই হয়ে আসছিল। আর রনি একটু বদমেজাজি ছিলেন বলে দাবি করেছেন তাদের দুই পরিবারের সদস্যরা।

Comment here