তথ্য-প্রযুক্তিসারাদেশ

বঙ্গোপসাগরে নৌবাহিনীর বার্ষিক সমুদ্র মহড়া ‘সেফ গার্ড-২০১৬’ সমাপ্ত

বিশেষ প্রতিবেদক:বঙ্গোপসাগরে ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণসহ আধুনিক সমর কৌশল প্রদর্শন ও সন্ত্রাস বিরোধী কমান্ডো অপারেশনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর বাৎসরিক সমুদ্র মহড়া এক্সারসাইজ ‘সেফ গার্ড-২০১৬’ আজ শনিবার (১০-১২-২০১৬) সমাপ্ত হয়েছে। চারটি ধাপে দীর্ঘ ১৫ দিনব্যাপী নৌবাহিনীর ৫৩টি যুদ্ধজাহাজ, সকল ঘাঁটি, মেরিটাইম পেট্রোল এয়ার ক্রাফট, হেলিকপ্টার, হাই স্পিড বোট ও আধুনিক সমরাস্ত্রে সজ্জিত নৌ কমান্ডো দলসহ নৌ সদস্যদের সম্মিলিত প্রস্তুতি গ্রহণ শেষে সমাপনী দিনে কাল্পনিক শত্র“পক্ষকে সফলভাবে নির্মূল করার মাধ্যমে এই মহড়া সম্পন্ন হয়। এই সমুদ্র মহড়ার মাধ্যমে দেশের বিশাল জলসীমার সার্বভৌমত্ব রক্ষার পাশাপাশি সমুদ্রে অবৈধ অনুপ্রবেশ ও চোরাচালান রোধ, গভীর সমুদ্রে উদ্ধার তৎপরতা, মৎস্য ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ, তেল-গ্যাস অনুসন্ধানের ব্লকসমূহে অধিকতর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি সার্বিকভাবে দেশের ব্লু ইকোনমির উন্নয়নে বাংলাদেশ নৌবাহিনী আরও কার্যকর ভুমিকা রাখতে সক্ষম হবে।
‘সেফ গার্ড-২০১৬’ এর চূড়ান্ত দিনে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় পরিকল্পনা মন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, এমপি প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বিভিন্ন মহড়া প্রত্যক্ষ করেন। এর আগে প্রধান অতিথি বানৌজা বঙ্গবন্ধু তে এসে পৌঁছালে নৌবাহিনী প্রধান এডমিরাল নিজামউদ্দিন আহমেদ, এবং কমান্ডার বিএন ফ্লিট কমডোর শেখ আরিফ মাহমুদ তাঁকে স্বাগত জানান। এ সময় নৌবাহিনীর একটি সুসজ্জিত দল প্রধান অতিথিকে গার্ড অব অনার প্রদান করে।
উক্ত মহড়ায় উল্লেখযোগ্য অংশ ছিল নৌ বহরের বিভিন্ন কলাকৌশল অনুশীলন, সমুদ্র এলাকায় পর্যবেক্ষণ, অনুসন্ধান ও উদ্ধার অভিযান, লজিষ্টিক অপারেশন, ল্যান্ডিং অপারেশন, উপকূলীয় এলাকায় অবস্থিত নৌ স্থাপনাসমূহের প্রতিরক্ষা মহড়া ইত্যাদি। এতে বাংলাদেশ সেনা, বিমান ও কোস্ট গার্ডসহ দেশের বিভিন্ন মেরিটাইম সংস্থা প্রত্যক্ষ/পরোক্ষভাবে অংশগ্রহণ করে। মহড়ার শেষ দিনে নৌবাহিনীর জাহাজসমূহ হতে ভুমি থেকে ভুমিতে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র, ভুমি থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র, বিমান বিধ্বংসী কামানের গোলা বর্ষণ, সাবমেরিন বিধ্বংসী গোলা নিক্ষেপ, সারফেস ফায়ারিং, হেলিকপ্টার ডেক ল্যান্ডিং, সোয়াডস ও কমান্ডো টিম কর্তৃক গভীর সমুদ্রে শত্র“পক্ষ দ্বারা অধিকৃত জাহাজ এবং অপহৃত ব্যক্তিদের উদ্ধারের মহড়াসহ বিভিন্ন সমর কৌশল প্রদর্শিত হয়। মহড়ার শেষ পর্যায়ে এতে অংশগ্রহণকারী নৌবাহিনীর সকল জাহাজ এবং বোটসমূহ স্টীম পাস্ট এবং মেরিটাইম পেট্রোল এয়ার ক্রাফট ও হেলিকপ্টার ফ্লাই পাস্টের মাধ্যমে প্রধান অতিথিকে সম্মান প্রদর্শন করে।
মহড়া শেষে প্রধান অতিথি চট্টগ্রাম নৌ অঞ্চলের সকল কর্মকর্তা ও নাবিকদের সফলভাবে অনুষ্ঠিত এই মহড়ার জন্য সকল নৌসদস্যকে অভিনন্দন জানান এবং নৌসদস্যদের পেশাগতমান, দক্ষতা ও কর্মনিষ্ঠার প্রশংসা করেন। প্রধান অতিথি দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব এবং সমুদ্র সম্পদ রক্ষা এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য একটি শক্তিশালী নৌবাহিনী গঠনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর লালিত স্বপ্নের কথা উল্লেখ করেন। সেই লক্ষ্য বাস্তবায়নে তিনি বর্তমান সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অব্যাহত প্রচেষ্টার কথা উল্লেখ করেন। সেইসাথে তিনি বঙ্গোপসাগরে বিশাল সমুদ্রসীমা রক্ষার পাশাপাশি জাতীয় অর্থনীতিতে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সক্রিয় ভূমিকারও প্রশংসা করেন। নৌ মহড়ার সমাপনী দিনে অন্যান্যের মধ্যে উচ্চ পদস্থ সামরিক ও বেসামরিক ব্যক্তিবর্গ, নৌ সদর দপ্তরের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসারগণ ও পদস্থ নৌ কর্মকর্তা, নাবিকগণ এবং গণমাধ্যমের সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।##

Comment here