টেকনাফপবিবেশ

বন ধ্বংসের কারণ এক বিট কর্মকর্তা !


কক্সবাজার প্রতিনিধি :
টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের লেদা বন বিট কর্মকর্তার বিরুদ্ধে পরিবেশ আইন অমান্য করে বন বিভাগ ধ্বংস করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় কিছু বনখেকু লোকজনের সাথে সখ্যতা গড়ে তুলে লেদার বিট কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা আবদুল মালেক মুন্সি মোটা অংকের উৎকোচ নিয়ে বন বিভাগের জমিতে অবৈধ বাড়ি নির্মাণ, মাটি কেটে ইট ভাটায় বিক্রি, বনায়ন ধ্বংস করে এক ইয়াবা গডফাদারকে মাটি কাটার সুযোগ ও লেদার রোহিঙ্গা বস্তি এবং তার আশেপাশের বিভিন্ন এলাকায় বন বিভাগের জমিতে দোকান নির্মাণ করে চলেছেন। এ ছাড়া দৈনন্দিন টাকা উত্তোলন, ভাড়া বাসা নির্মাণের সুযোগ করে দিয়ে রোহিঙ্গা লোকজনকে ভাড়া দেওয়া সহ বিভিন্নভাবে বন বিভাগের পরিবেশ ধ্বংস খোদ বন কর্মকর্তা নিজেই করে থাকলেও দেখার কেউ নেই।
সরেজমিন পরিদর্শন ও স্থানীয় এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা গেছে, লেদা বিট কর্মকর্তা আবদুল মালেক মুন্সি দীর্ঘদিন ধরে একজন বিট কর্মকর্তা হয়েও এসব অপরাধের সাথে জড়িত থাকলেও সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কোন মাথা ব্যথা নেই। সম্প্রতি গত ২ সপ্তাহ ধরে লেদা মৌলভী পাড়া এলাকায় স্থানীয় মতিউর রহমান প্রকাশ মতি উল্লাহর পুত্র আবদুল মালেক বন বিভাগের জমিতে নিজে দালান বাড়ী নির্মাণের পাশাপাশি পার্শ্ববর্তী বনের শত শত গাছ ধ্বংস করে মাটি কেটে বন বিভাগের জমি দখল করছে এমন খবরে পেয়ে সরে জমিন গিয়ে ঘটনার সত্যতা পাওয়া যায়। বিষয়টি বিট কর্মকর্তা আবদুল মালেক মুন্সিকে জানালে সে ব্যবস্থা নিবেন বলে জানিয়ে ২ সপ্তাহ সময় ক্ষেপন করেন। এরপরও মাটিকাটা অব্যাহত রাখলে বিষয়টি নিয়ে সচিত্র সংবাদ তৈরি করা কালে গত ২ মে আবদুল মালেক মুন্সির মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে সংশ্লিষ্ট বিষয়টি নিয়ে সংবাদ লিখলে নিজের ক্ষতি হবে বলে হুমকি দিয়ে মুঠোফোন কেটে দেয়। কিছুক্ষণ পর পুনরায় ফোন ব্যাক করে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের অনুমতি নিয়ে মাটি কাটছে বলে জানান ওই কর্মকর্তা। বন বিভাগের জমিতে স্থানীয় চেয়ারম্যানের অনুমতি দেয়ার এখতিয়ার আছে কিনা জানতে চাইলে স্থানীয় চেয়ারম্যানরা সবকিছু পারে বলে আবারও ফোন কেটে দেয়। এ ব্যাপারে স্থানীয় হ্নীলা ইউপি চেয়ারম্যান এইচ.কে. আনোয়ার বলেন- “বন বিভাগের জমিতে কাউকে বন কাটা ও মাটি কাটার অনুমতি দেওয়ার এখতিয়ার আমার নেই এবং আমি কাউকে অনুমতিও দিই নাই।”
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিট কর্মকর্তা আবদুল মালেক মুন্সির বিরুদ্ধে মোটা অংকের উৎকোচ নিয়ে লেদা নুর আলী পাড়া এলাকায় আবুল বশরের স্ত্রী নুর নাহার, হাজী নুর আলীর পুত্র হাছন, আবদুল কাদেরের পুত্র নুরুল ইসলাম ও মৃত ছৈয়দুর রহমানের পুত্র নবী হোছনসহ অসংখ্য লোকজনকে বন বিভাগের জমি বিক্রি করার মত করে ঘর বাড়ী নির্মাণ করার সুযোগ করে দিয়েছেন। এছাড়াও লেদা শিয়াইল্যাঘোনা এলাকার বনের পাহাড় কেটে ইট ভাটায় মাটি বিক্রি ও লেদা রোহিঙ্গা বস্তি এলাকায় বন বিভাগের জমিতে বেশ কয়েকটি দোকান ঘর নির্মাণ করে স্থানীয় কিছু লোকজনকে ব্যবহার করে প্রতি দোকান থেকে দৈনন্দিন ১’শ টাকা করে উত্তোলন করে পকেটস্থ করছে। তাছাড়া বন বিভাগের জমিতে ভাড়া বাসা নির্মাণের সুযোগ দিয়ে মোটা অংকের বিনিময়ে রোহিঙ্গাদের ভাড়া দিচ্ছে বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ভাবে দীর্ঘদিন একজন বিট কর্মকর্তা হয়েও বন বিভাগের পরিবেশ ধ্বংস করে যাচ্ছেন। বিষয়টি সরজমিন পরিদর্শন করে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বন বিভাগের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দ্রæত হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন সচেতন এলাকাবাসী।
এ ব্যাপারে মাটি কাটার সাথে সংশ্লিষ্ট আবদুল মালেকের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে, তিনি বলেন- “তোমার যতদূর সাহস আছে, ততদূর লিখ। তাতে আমার কিছু আসে-যায় না”।
তবে কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগের এসিএফ মোঃ সরওয়ার আলম বিষয়টি খতিয়ে দেখে সংশ্লিষ্ট বিট কর্মকর্তা ও জড়িতদের বিরুদ্ধে দ্রæত আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান।

Comment here