আন্তর্জাতিকজাতীয়টেকনাফসারাদেশ

বিজিবি-বিজিপির পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত: নারীসহ ৪১ বাংলাদেশীকে ফেরত দিল মিয়ানমার

বিজিবি-বিজিপির পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত: নারীসহ ৪১ বাংলাদেশীকে ফেরত দিল মিয়ানমার
মাদক চোরাচালান ও মানবপাচারসহ সীমান্তে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড প্রতিরোধ কঠোরহস্তে দমন করা হবে
মুহাম্মদ জুবাইর:
মিয়ানমারে বিভিন্ন মেয়াদে মানবেতর জীবনযাপনকারী কারাবন্দীকে ৪১ বাংলাদেশি নাগরিককে বিজিবির প্রচেষ্ঠায় স্বদেশে ফেরত দিল মিয়ানমার। ফেরত আসাা বাংলাদেশী নাগরিকেরা মৌলভীবাজার, রাঙ্গামাটি, উখিয়া, কক্সবাজার, টেকনাফ, বান্দরবন এলাকার বাসিন্দা। ফেরত আসা বাংলাদেশীরা হলেন, মৌলভী বাজার জেলার জুরি থানার নয়াগ্রাম এলাকার মাশুক মিয়ার পুত্র জাকির হোসাইন, উখিয়া উপজেলার দক্ষিন সোনাপাড়ার আবুল হাসিম এর পুত্র নুরুল আবছার,হ্নীলা ইউনিয়নের পশ্বিম সিকদার পাড়ার মৃত আবদু শুক্কুরের ছেরে মো: আয়ুব খান, ওয়াপাড়া(নয়াপাড়া) এলাকার সালামত এর পুত্র মো: আবদুল্লাহ, হ্নীলা মৌলভী বাজার এলাকার আলী হোছাইনের পুত্র মো: সিরাজুল ইসলাম, টেকনাফ সদর ইউনিয়নের কেরুন তলী এলাকার মো: শাকের এর পুত্র সাদ্দাম হোসাইন, নুর মোহাম্মদ এর পুত্র আবদুল রশিদ, হোয়াইক্যংয়ের ঝিমংখালীর আবুল কাসেম এর পুত্র মোহাম্মদ সাকিব, বান্দরবান জেলার উজানি পাড়া এলাকার মং থোয়াই সিং এর পুত্র মংথিং মারমা/ এমজি থাইন, খাগড়াছড়ি জেলার মানিকছড়ি এলাকার উসাপ্রু মারমার পুত্র চাইলা প্রু মারমা, বান্দরবান জেলার, ভাংগামুড়া এলাকার খেলুসি মারমার পুত্র নথিমং মারমা, বান্দরবানের মংগু মারমার পুত্র মংলংচিং মারমা, কুহলং পাড়ার সচিংপ্রু মারমার পুত্র ইউমং সিং মারমা, টেকনাফের হ্নীলা নাদির আলীর মেয়ে হালিমা খাতুন, রাঙ্গামাটি জেলার কচুখালী এলাকার হ্নীলা উং এর পুত্র উছাথুই মারমা, নিজপাড়া এলাকার মংলাপ্রু মারমার পুত্র চাইন ডু অং মারমা, বান্দরবান জেলার কামাইজাজিরি পাড়ার বিগুচন্দ্র ত্রিপুরার পুত্র হারমনি ত্রিপুরা, জুনারাম ত্রিপুরার পুত্র হ্লেহে ত্রিপুরা, রেশংপাড়ার অংসারাই ত্রিপুরার পুত্র ডানিয়েল ত্রিপুরা, রাঙ্গামাটি জেলার কাপ্তাই থানার তম্বুপাড়ার সা থোয়াই মারমার পুত্র খোয়াই লা চাই মারমা, হেডম্যান পাড়ার থোয়াইসি মারমার পুত্র সচিং ইউ মারমা, পশ্চিমসোনাছড়ি এলাকার সুদু প্রু মারমার পুত্র থোয়াই কি সিং মারমা, কিয়াথাই অং মারমার পুত্র সাধু অং মারমা, তম্বুপাড়ার মংপু মারমার পুত্র হ্লা সুইচিং মারমা, শামুকছড়ি এলাকার অংথোয়াই রুই’র পুত্র পাইসা থুই মারমা, উখিয়া উপজেলার পূর্বডালীর ফেরদৌস আহমদের পুত্র আলী আহমদ, নতুন পল্লান পাড়ার নুরুল আমিনের পুত্র মো: শরিফ, আবুল হোছাইনের পুত্র ইমরান হোছাইন, নুর মোহাম্মদের পুত্র নুর কাশেম, পুরানপল্লান পাড়ার কাদির হোছাইনের পুত্র নুর আলম, নাইট্যংপাড়ার মৃত আবুল হোছাইনের পুত্র মো: আলম, মো: শফির পুত্র করিম উল্লাহ, নাজির পাড়ার আবদুর সবুর পুত্র মোর্শেদ আলম, হ্নীলা ওয়াব্রা য়ের দুদু মিয়ার পুত্র জানে আলম, দক্ষিন লেংগুর বিল এলাকার বাচ্চু মিয়ার পুত্র বাবুল, আবদুস্সালামের পুত্র মুজিব উল্লাহ, নতুন পল্লান পাড়ার মকবুল আহমদের পুত্র সোলতান, বনি আমিনের পুত্র মো: ছলিম, হ্নীলা জাদী মুড়ার মো: সোলাইমানের পুত্র মকবুল মাঝি, পল্লান পাড়ার মো: ইসমাইলের পুত্র সাদেক।
বুধবার (২৩মার্চ) বেলা ৩টার দিকে টেকনাফ পৌরসভার চৌধুরীপাড়াস্থ বাংলাদেশ-মিয়ানমার ট্রানজিট ঘাটে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এ তথ্য নিশ্চিত করেন ২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্ণেল শেখ খালিদ মোহাম্মদ ইফতেখার।
তিনি জানান, একইদিন সকাল ৯.৪৫ মিনিট হতে ২:৩০ ঘটিকা পর্যন্ত মিয়ানমারের অভ্যন্তরে মংডুর ১ নম্বর পয়েন্টে ১৬ সদস্য বিশিষ্ট বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল ও ৯ সদস্য বিশিষ্ট মিয়ানমার প্রতিনিধিদলের সঙ্গে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের পক্ষে নেতৃত্বদেন টেকনাফ ব্যাটালিয়ন(২ বিজিবি) অধিনায়ক লে. কর্নেল শেখ খালিদ মোহাম্মদ ইফতেখার এবং মিয়ানমার প্রতিনিধিদলের পক্ষে নেতৃত্ব দেন ১ নং বর্ডার গার্ড পুলিশ ব্রাঞ্চের অধিনায়ক লে.কর্ণেল কাও না ইয়াং শো।
টেকনাফ ব্যাটালিয়ন(২ বিজিবি) অধিনায়ক লে. কর্নেল শেখ খালিদ মোহাম্মদ ইফতেখা, জেটি ঘাঁটে সংবাদ সম্মেলনে জানান ফের আসা ৪১ বাংলাদেশী নাগরিকগণ বিভিন্ন সময়ে অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রম করে মিয়ানমার গিয়ে বিজিপি কর্তৃক আটক হয়ে সাজা ভোগ করে আসছিল। বিষয়টি বাংলাদেশ সরকার, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, মিয়ানমারস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস ও বিজিবি অবগত হয়ে দীর্ঘ ১বছর প্রচেষ্টা চালানোর পর অবশেষে বিজিবির সহায়তায় পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে দেশে ফিরে আসলো স্বদেশী নাগরিক।
তিনি আরও জানান, জানান, সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে পতাকা বৈঠকে মাদক চোরাচালান প্রতিরোধ, মানবপাচার দমন এবং সীমান্তে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড কঠোরহস্তে দমনসহ উভয় দেশের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আলোচনা করা হয়।
দু-দেশের সীমান্ত ব্যবস্থাপনার বিভিন্ন বিষয়ে ফলপ্রসূ আলোচনা ও পারস্পরিক বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক, উত্তরোত্তর উন্নতি এবং সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য উভয় মতামত ব্যক্ত শেষে পতাকা বৈঠক সমাপ্ত করে নারীসহ ৪১ স্বদেশী নাগরিকদের সাথে নিয়ে টেকনাফ চলে আসি। ফিরে আসা নাগরিকেরা চট্টগ্রাম পার্বত্য এলাকা,উখিয়া এবং টেকনাফের প্রত্যন্ত এলাকার বাসিন্দা।
ফেরত আসা সাজাভোগকারী নাগরিকদের জেটিঘাঁটে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবং উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার সমন্বয়ে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে নেয়া হয়েছে। সেখান থেকে আইনী প্রক্রিয়া শেষে টেকনাফ মডেল থানার মাধ্যমে স্বস্ব পরিবারের নিকট হস্তান্তর করা হবে বলেও জানা যায়।

Comment here