আন্তর্জাতিকরোহিঙ্গা সমাচার

বিবিসি বাংলার প্রতিবেদন : ‘রোহিঙ্গা নির্যাতন বন্ধ করুন, নাগরিকত্ব দিন’

 অনলাইন

'রোহিঙ্গা নির্যাতন বন্ধ করুন, নাগরিকত্ব দিন'

মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের ওপর সব ধরনের বিধিনিষেধ প্রত্যাহার করে তাদের নাগরিকত্ব দেয়ার পথ সুগম করতে একটি আন্তর্জাতিক কমিশন মিয়ানমারের সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।

তারা রোহিঙ্গাদের অবাধ চলাচলের স্বাধীনতাও প্রদান করতে বলেছে।

জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব কফি আনান এই কমিশনের প্রধান।

মিয়ানমারের সেনাবাহিনী রাখাইন রাজ্যের সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের ওপর ব্যাপক সহিংসতা চালাচ্ছে এই অভিযোগের পটভূমিতে মিয়ানমারের নেত্রী অঙ সান সুচি এই কমিশন গঠন করেন।

বিবিসির সংবাদদাতা জানাচ্ছেন, কমিশন তার রিপোর্টে রোহিঙ্গাদের বিশ্বের সর্ববৃহৎ দেশহীন সম্প্রদায় বলে বর্ণনা করেছে।

এতে সতর্ক করে বলা হয়েছে, রোহিঙ্গাদের ওপর আরোপ করা নানা ধরনের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা না হলে রোহিঙ্গা এবং সংখ্যাগুরু বৌদ্ধ জনগোষ্ঠী উভয়েই কট্টরপন্থার পথে ধাবিত হতে পারে।

রাখাইন রাজ্যে সেনা অভিযানে ব্যাপকহারে নির্যাতন, হত্যা এবং ধর্ষণের অভিযোগ ওঠার পর ৮৭ হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গা দেশ ত্যাগ করতে বাধ্য হন।

এর আগে সেনাবাহিনী বলেছিল যে রাখাইনে হত্যা, ধর্ষণ বা নির্যাতনের অভিযোগের বিষয়ে তারা নিজস্ব তদন্ত পরিচালনা করেছে এবং রোহিঙ্গা জাতিগত সংখ্যালঘুদের ওপর গুরুতর নির্যাতনের যে অভিযোগ উঠেছিল তা সব হয় মিথ্যা না-হয় ভ্রান্ত।

মিয়ানমার থেকে বিবিসির সংবাদদাতা জোনাহ ফিশার জানান, জাতিসংঘ বাংলাদেশে পালিয়ে আসা শত শত রোহিঙ্গা নাগরিকের বক্তব্য শোনার পর মিয়ানমার, যেটি বার্মা নামেও পরিচিত, এর সেনাবাহিনী গত ফেব্রুয়ারি মাসে এ বিষয়ে তদন্ত শুরু করে।

বর্মী সেনাদের দ্বারা রাোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের নারীদের ব্যাপকহারে ধর্ষণ ও নির্যাতনের অভিযোগ ওঠার পর জাতিসংঘের কর্মকর্তারা একে ‘মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ’ হিসেবে অভিহিত করেন।

যদিও মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর তদন্তকারী দল বাংলাদেশে যায়নি কিন্তু তারা বলছে, প্রায় ৩০০০ গ্রামবাসীর সাথে কথা বলেছে তারা।

বিবৃতিতে বলা হয়, জাতিসংঘের করা ধর্ষণ এবং হত্যার সবধরনের অভিযোগ ছিল অসত্য।

সেইসাথে তারা উল্লেখ করেছে, কেবলমাত্র দুটো ঘটনার ক্ষেত্রে সৈন্যরা অসদাচরণ করেছে।

তবে সেসময় রাখাইন রাজ্যের আগুনে পুড়ে যাওয়া গ্রাম ও মানুষের মৃতদেহের যে ভয়াল ছবি এবং নারীদের বয়ানে যে চিত্র উঠে এসেছে, তার প্রেক্ষিতে এই তদন্ত দলের পর্যবেক্ষণ মেলানো বেশ কঠিন।

ঘটনার বিষয়ে অনুসন্ধানের জন্য জাতিসংঘের স্বাধীন তদন্ত দল পাঠানোর প্রচেষ্টাও অঙ সান সুচির বাধার কারণে আটকে গেছে বলে মনে করা হয়।

Comment here