আন্তর্জাতিকরোহিঙ্গা সমাচার

মংডু’র আকাশে হেলিকপ্টার চক্কর : নাফনদীতে নৌ টহল : ফিরেছে ২০ জন বাংলাদেশী : বাংলাদেশে আটকে আছে দু’শতাধিক মিয়ানমার নাগরিক

mr-pic-areest mr-pic-03 teknaf-pic-02
টেকনাফ ভিশন ডেস্ক :
মিয়ানমারের মংডুতে আটকাপড়া ২০ জন বাংলাদেশী টেকনাফে ফিরেছে। সোমবার (১০ অক্টোবর) সন্ধা সোয়া ৬টার দিকে টেকনাফ স্থল বন্দরের ইমিগ্রেশন জেটি দিয়ে তারা ফিরে আসেন। তবে বাংলাদেশে আটকে আছে দু’শতাধিক মিয়ানমার নাগরিক। শনিবার রাতে আরাকান রাজ্যের কাওয়ারবিল তানাইংসুক , নাফফোরা, রাসিডং ও কোডেংগাও এলাকায় ৩ বিজিপি ক্যাম্পে স্বশস্ত্র হামলার পর রোববার হতে ইমিগ্রেশন যাতায়াত বন্ধ হয়ে পড়ে। যার কারনে টেকনাফ ও মংডু শহরে আটকা পড়েছিলো এরা।
টেকনাফ ইমিগ্রেশন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ডাটা এ্যান্ট্রি অপারেটর) মোঃ আনোয়ার হোসেন জানান, ১৮ জন বাংলাদেশী ব্যবসায়ী ও দুই শিশুসহ ২০ জনকে সোমবার সন্ধ্যায় মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ একটি ট্রলারে ফিরে আসার ব্যবস্থা করেন।
ফিরে আসা ব্যবসায়ী চট্রগামের আবুল বছর, টেকনাফ জালিয়া পাড়ার ওসমান ও কুলাল পাড়ার আবুল হাসেম জানান, মংডু শহরে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। রবিবার থেকে খাওয়ার হোটেল বন্ধ ছিলো। সব রাস্তা গুলো ফাঁকা । বিপুল সংখ্যক সেনা ও সরকারী বাহিনীর তৎপরতা দেখা গেছে। কিছু আত্বীয় স্বজন ছিলো বিধায় খাবার সুযোগ হয়েছিলো। মূলত গত রবিবার ও সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত মংডুর বিভিন্ন হোটেলে অবরুদ্ধ অবস্থায় অবস্থান কয়েছে।
এদিকে টেকনাফে আটকে পড়া মিয়ানমার নাগরিক মংডুর দিল মোহাম্মদের ছেলে ও ছৈয়দ আকবরের ছেলে আব্দুর রাজ্জাক জানিয়েছেন, মিয়ানমারে চলমান ঘটনার কারনে মংডু ও টেকনাফে নৌ-চলাচল বন্ধ রয়েছে। যার কারনে ফিরে যেতে পরছেন না দু’শতাধিক মিয়ানমার নাগরিক।
শনিবার ভোরে বিজিপি ক্যাম্পে হামলার ঘটনায় ৯ বিজিপি সদস্য নিহত ও ৫ বিজিপি সদস্য আহত এবং ৯ জন রোহিঙ্গা বিদ্রোহী সংগঠনের সদস্য নিহত হয়েছে বলে রাজধানী নেডিডোতে সংবাদ সম্মেলনে মিয়নমারের পুলিশ প্রধান মেজর জেনারেল জ্য উইং জানিয়েছেন। এতে জানানো হয়, রবিবার রাত দেড় টা হতে সাড়ে ৪ টার পর্যন্ত ২ শতাধিক হামলাকারী তিনটি ক্যাম্পে হামলা চালায়। এসময় হামলাকারীরা ৬২ টি অস্ত্র ও ১০ হাজার রাউন্ড গুলি লুট করে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় ২ জন হামলা কারীকে আটক করা । এ ছাড়া মংডু ও রাসিডং এলাকায় রাত ১১ টা হতে সকাল ৪ টা এবং রাত ৭ টা হতে সবাল ৬ টা পর্যন্ত কারফিউ বলবৎ রয়েছে।
এদিকে ঘটনার পর মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বিপুল সদস্য হামলাস্থল কাওয়ারবিল, নাফফোরা ও কোডেংগাও এলাকায় পৌঁছে ব্যাপক তল্লাশি অভিযান শুরু করে । সেনা বাহিনী সোমবার দিন এসব গ্রামে নিরীহ ৭ জন রোহিঙ্গাকে হত্যা করেছে বলেও রোহিঙ্গা ভিত্তিক কয়েকটি ওয়েব সাইটে খবর প্রকাশ করে।
সোমবার দিনব্যাপী মংডু বুড়ো সিকদার পাড়া এলাকায় রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের সাথে সেনা সদস্যদের কয়েক দফা সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে বলে বিভিন্ন মাধ্যমে জানা গেছে। এতে উভয় পক্ষে ১০ জনের বেশী হতাহত হয়েছে বলে সূত্রে জানা গেছে।
অপরদিকে টেকনাফ সীমান্ত দিয়ে প্রত্যক্ষদর্শী লোকজন জানিয়েছে, মিয়ানমার মংডু সীমান্তের আকাশে হেলিকপ্টার চক্কর দিয়েছে গোটা দিন। নাফদনীতে টহল দিতে দেখা গেছে মিয়ানমার বিজিপি’র স্পীড বোট।
টেকনাফ ২ ব্যাটালিয়ন বিজিবি অধিনায়ক লে.কর্ণেল আবুজার আল জাহিদ জানান, টেকনাফ সীমান্ত পরিস্থিতি সম্পূর্ন নিয়ন্ত্রনে রয়েছে। এছাড়া কোন অনুপ্রবেশের ঘটনা ঘটেনি বলে জানান তিনি।
অপরদিকে এ ঘটনার পর থেকে নাফ নদীতে মাছ ধরার নৌকা নামেনি।

Comment here