আন্তর্জাতিকটেকনাফ

মুক্তিপণ দিয়ে ফিরে আসা ৪ বাংলাদেশী জেলের বিরুদ্ধে মামলা

teknaf-jele-pic-13-12-2016জাবেদ ইকবাল চৌধুরী , টেকনাফ ভিশন :
মিয়ানমার বাংলাদেশ সীমানার নাফ নদ অবৈধভাবে অতিক্রম করার অভিযোগে ৪ বাংলাদেশীকে আটক করেছে বিজিবি। এরা হচ্ছেন টেকনাফ পৌরসভার চৌধুরী পাড়া এলাকার মৃত আব্দুর রহিমের ছেলে মো. হোসেন (৩৫), মৃত আবু বক্করের ছেলে আবদুর করিম (৩০) মৃত আব্দুল করিমের ছেলে সাদেক মিয়া (২০) , শাহ আলমের ছেলে মো. ফারুক মিয়া (১৪) ।
সোমবার রাত ৭ টার সময় তাদেরকে মিয়ানমার হতে বাংলাদেশ অংশের নাফনদে জেটি দিয়ে অনুপ্রবেশের সময় আটক করে বিজিবি। বিজিবি টেকনাফ সদর বিওপি কমান্ডার সুবেদার আব্দুল কাদের গাজী জানান, আটক এ ৪ জেলে সোমবার দেড় টার সময় নাফ নদের শূণ্য লাইন অতিক্রম করে মিয়ানমারের খাইংখালী খালের মুখে মাছ আহরনের সময় মিয়ানমার বর্ডার গার্ড পুলিশের পেইন বাও চাংওয়া ক্যাম্পের সদস্যরা ধরে মংডুতে নিয়ে যায়। খবর পেয়ে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ ( বিজিবি) ২ ব্যাটলিয়ান কর্তৃপক্ষ যোগাযোগ করে এদের ফেরত আনার ব্যবস্থা করে। অবৈধভাবে বাংলাদেশের জলসীমা অতিক্রম করার অপরাধে তাদেরকে আটক করে থানায় সোর্পদ করে মামলা রুজু করা হয়েছে বলেও জানান তিনি। এদিকে অপর একটি সুত্রদাবী করেছে, মিয়ানমারের বর্ডার গার্ড পুলিশ ( বিজিপি) টেকনাফের পৌরসভা এলাকার জালিয়াপাড়া সংলগ্ন নাফনদ থেকে বাংলাদেশী ৬ জন জেলেকে ধরে নিয়ে গেছে । ১২ ডিসেম্বর সোমবার বিকালে দুই নৌকাসহ তাদেরকে ধরে নিয়ে যায়। এদের মধ্যে দেড় লাখ টাকা মুক্তিপণ দিয়ে ৪ জন জেলেকে ফেরত আনা হলেও মিয়ানমারের মংডুদে আটক রয়েছে আরো দু বাংলাদেশী জেলে। এরা হচ্ছে, চৌধুরী পাড়ার আক্তার ফারুক (১৬), সাদেক হোসেন (১৮) । স্থানীয়রা জানান প্রতিদিনের মতো সোমবার বিকালে নৌকা নিয়ে একই এলাকার আট জেলে নাফ নদীতে মাছ শিকার করছিলেন। এক পর্যায়ে বিজিপির টহল দল নৌকাসহ তাদেরকে ধরে নিয়ে যায়। এসময় নৌকা থেকে পানিতে ঝাঁপ দিয়ে সাঁতরিয়ে স্থানীয় এক জেলের সহযোগিতায় দুই জেলে কূলে ফিরে আসেন। তারা হলেন আবদুল আমিন (২০) ও নুর মোহাম্মদ (২৫)।
পালিয়ে আসা জেলে আবদুল আমিন ও নুর মোহাম্মদ জানান সোমবার সকালে নাফ নদীতে দুটি নৌকা করে আটজন জেলে মাছ ধরতে যান। বিকালে মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী তাদের দিকে অস্ত্র উঁচিয়ে ধাওয়া করে ধরে ফেলে। পরে তাদের মিয়ানমারে নিয়ে যাওয়ার সময় নৌকা থেকে নাফনদে ঝাঁপ দেন তারা। ডুব দিয়ে ও সাঁতরিয়ে পালিয়ে আসার সময় মাছ শিকারত অপর জেলে আবদুল আজিজ তাদের উদ্ধার করে নিয়ে আসেন।
নৌকার মালিক মো. ইব্ররাহীম জানান তার নৌকা নিয়ে জেলেরা বাংলাদেশ জলসীমানায় মাছ শিকারের যান। এসময় বিজিপির সদস্যরা নৌকাসহ আট জেলেকে ধরে নিয়ে যায়। এর মধ্যে দুই জেলে পালিয়ে কূলে ফিরে আসেন।
টেকনাফ বিজিবি ২ ব্যাটলিয়ান অধিনায়ক লে. কর্ণেল আবু জার আল জাহিদ জানান , ইতিমধ্যে চার জেলে অবৈধভাবে বাংলাদেশ মিয়ানমার সীমান্তের শূণ্যরেখা অতিক্রম করার অপরাধে আটক করে মামলা দেওয়া হয়েছে। তিনি আরও জানান নাফনদীতে বেহুন্দী জাল (স্থানীয় ভাষায় বিঙ্গী জাল) নিয়ে মাছ শিকার করতে সম্পূর্ণভাবে নিষেধ করার সত্তে¡ও জেলেরা মিয়ানারের জলসীমানায় গিয়ে মাছ শিকার করছে। তাই বারবার এ ধরণের ঘটনা ঘটছে।
উল্লেখ্য, এর আগে নাফনদ থেকে আরও বেশ কজন জেলেকে ধরে নিয়ে গিয়েছিল মিয়ানমারের বিজিপি। তাদের এখনও ফেরত দেয়নি মিয়ানমার।

Comment here