টেকনাফ

মূল হোতাদের গ্রেপ্তার করতে হবে : রোধ করা যাচ্ছে না ইয়াবা পাচার

টেকনাফ ভিশন ডেস্ক :52dd85d9aa773-36
দেশের একটি বড় অংশ মাদকাসক্ত হয়ে পড়ছে। বিশেষ করে তরুনসমাজ জড়িয়ে পড়ছে এ কাজে। প্রত্যন্ত অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ছে মরণ নেশা ইয়াবা। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযানে মাঝেমধ্যে দু-একজন ইয়াবা ব্যবসায়ী ধরা পড়লেও মূল হোতারা বরাবরই ধরাছোঁয়ার বাইরেই থেকে যায়। যাদের ধরা হচ্ছে, তারাও আইনের ফাঁকফোকর দিয়ে বেরিয়ে গিয়ে নতুন করে মাদক ব্যবসায় জড়িত হচ্ছে। জানা যায়, তিন শতাধিক বড় ইয়াবা ব্যবসায়ীর মাধ্যমে মিয়ানমার থেকে চালান আসছে বাংলাদেশে। ছোট ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে তা ছড়িয়ে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন স্থানে। শুধু টেকনাফেই রয়েছে দুই শতাধিক ডিলার। মিয়ানমার সীমান্তবর্তী নাফনদী ও টেকনাফের পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে দু’ শতাধিক বিভিন্ন পয়েন্ট হতে এসব ডিলাররা পাচার কার্যক্রম চালিয়ে থাকে। এই ইয়াবা ব্যবসায়ী ও ডিলারদের বেশির ভাগই আবার ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নাম ব্যবহার করে চলেছে। এই ব্যবসায়ীদের সমন্বয়ে গড়ে উঠেছে ইয়াবা সিন্ডিকেট। মিয়ানমার থেকে অবৈধ পথে ইয়াবার চালান আনতে নিত্যনতুন কৌশল অবলম্বন করে এসবচক্র। সারা দেশে যেভাবে সর্বনাশা ইয়াবা ছড়িয়ে পড়ছে, তাতে শঙ্কিত না হয়ে উপায় নেই। অন্যদিকে ক্ষমতাধর ও রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী ব্যক্তিরা এ ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকেও অনেক সময় নিষ্ক্রিয় থাকতে দেখা যায়।
টেকনাফ উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী বলেন, মাদকের অনুসর্গ হিসেবে সমাজে অপরাধ বাড়ছে। দ্রæত এই মাদকের বিস্তার রোধ করা না গেলে সামাজিক ও অর্থনৈতিক স্থিতি নষ্ট হবে। কাজেই ইয়াবা সিন্ডিকেট ভাঙতে হবে। রাজনৈতিক পরিচয় কিংবা সামাজিক প্রভাব যা-ই হোক না কেন, ইয়াবা ব্যবসার মূল হোতাদের ধরে আইনের হাতে সোপর্দ করতে হবে। সামাজিক ও রাজনৈতিক পরিচয়-নির্বিশেষে এদের জাতীয় শত্রু হিসেবে বিবেচনা করতে হবে। দেশ ও জাতির স্বার্থে এটা এখন জরুরি হয়ে দেখা দিয়েছে।
এ ছাড়া আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ইয়াবাসহ মাদক সিন্ডিকেটের হোতাদের গ্রেপ্তারে দ্রæত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে এমন প্রতাাশার কথাও জানালেন সাবেক এই সাংসদ ।
ইয়াবাসহ মাদকের বিস্তার রোধে আইনের সংস্কার চান টেকনাফ মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শেখ আশরাফুজ্জামান। তিনি বলেন , বর্তমান আইনে গড ফাদাররা ধরা ছোঁয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছে। যার ফলে ইয়াবা পাচার রোধ করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। ইয়াবার বিস্তার রোধ করতে হলে দ্রæত সময়ে বিচার কাজ শেষ করা যায় বা বিশেষ ট্রাইব্যুন্যাল গঠন করে দৃষ্ট্রান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।

এদিকে গত জুলাই আগষ্ট ও সেপ্টেম্বর এ তিন মাসে বিজিবি টেকনাফে ১৪৬ টি অভিযান পরিচালনা করেছে। এসব অভিযানে ১১ লাখ ৬৯ হাজার ৫৬৫ পিস উদ্ধার করা হয়। এ সংক্রান্ত মামলায় ৮৯ জনকে আটক করে থানায় সোর্পদ করে বিজিবি। ২ বডার গাড ব্যাটালিয়নের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
২ বর্ডার র্গাড ব্যাটলিয়ন অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল মোঃ আবু জার আল জাহিদ বলেন সীমান্তের বিভিন্ন এলাকায় বিজিবি কড়াকড়ি অবস্থানের কারনে ইয়াবা, মাদকদ্রব্য ও চোরাইপন্য পাচার আগের তুলনায় অনেকটা কমে আসে। বিজিবির কর্মকর্তা থেকে সৈনিকরা সীমান্ত ও চেকপোষ্টে টহল জোরদার রেখেছে এবং নিরলস ভাবে কাজ চালিয়ে যাচেছন। তাছাড়া টেকনাফ সীমান্তের বিভিন্ন স্থানে বিজিবির একাধিক টিম সর্তক অবস্থায় রাখা হয়েছে বলে জানায় বিজিবি কর্মকর্তা। তিনি বর্তমানে সাগর পথকে ইয়াবা পাচারকারীরা ব্যবহার করছে বলেও মত ব্যক্ত করেন।
্অপরদিকে কোস্টগার্ড নাফনদী ও বঙ্গোপসাগরে গত আগষ্ট ও সেপ্টেম্বর মাসে ৭ টি অভিযান চালিয়ে ৯ লাখ ৯১ হাজার ৫’শ পিস ইয়াবা জব্দ করেছে। তবে পাচারকারী কাউকে আটক করতে সর্মথ হয়নি কোষ্ট গার্ড।
কোস্ট গার্ড টেকনাফ ষ্টেশন কমান্ডার লে. নাফিউর রহমান বলেন, ইয়াবা পাচার রোধ করতে হলে সমন্বিত অভিযান পরিচালনার করতে হবে। পাশাপাশি বড় বড় গডফাদারদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনতে হবে। তা নাহলে পুরোপুরি ইয়াবা পাচার বন্ধ করা কঠিন হবে।

Comment here