ক্রাইমজাতীয়টেকনাফসারাদেশ

সাবরাংয়ের গৃহবধু হত্যার তদন্তের রিপোর্ট পাল্টাতে টাকার মিশনে নেমেছ অভিযোগ নিহতের বাবা-মার

প্রেস বিজ্ঞপ্তি:
টেকনাফ উপজেলার সাবরাং ইউনিয়নের পুরানপাড়া (দক্ষিন নয়াপাড়া) এলাকায় প্রেমের সম্পর্কে বিয়ে হয় একই উম্মে কুলসুমার। বিয়ের প্রায় ৩ বছর পর ওই গৃহবধু উম্মে কুলসুমকে গলাটিপে শ্বাসরোদ্ধ করে হত্যাকে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেওয়ার ব্যার্থ চেষ্ঠা করেছে তার স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন। এ ব্যাপারে গৃহবধূর বড় ভাই নুরুল আলম বাদী হয়ে তার স্বামী, শ্বশুর-শাশুড়িসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে টেকনাফ মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং ৬০, তারিখ ১৮/০৫/২০২০ ইং।
১৪ জুন (রোববার) দুপুরে বাদীর নিজ বাড়ীতে স্থানীয় সাংবাদিকদের কান্নাজড়িত কন্ঠে নির্মমতার শিকার, গৃহবধূর পিতা আলী আহমদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমার মেয়েকে মিথ্যা প্রলোভনে প্রেমের ফাঁদে ফেলে বিয়ে করে একই এলাকার খুইল্যা মিয়ার পুত্র আবু নাছের। বিয়ের পর হতে আমার আদরের কন্যা উম্মে কুলছুমকে শারিরীক ও মানষিকভাবে নির্যাতন করতো শ্বশুর বাড়ীর লোকজন। আমরা উম্মে কুলছুম হত্যায় জড়িতদের ফাঁসি চাই।
এভাবে নির্যাতনের শিকার হয়ে বিয়ের প্রায় ৩ টি বছর চলে যায়। অতঃপর ১৭ জুন ভোররাত ২:৩০মিনিটের সময় মেয়ের স্বামী ও পরিবারের সদস্যরা মিলে তাকে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করে সকালে স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে বলে আমাদের খবর দেয়। আমরা উপস্থিত লোকজন স্থানীয় মহিলাদের দিয়ে তার শরীর চেক করে উম্মে কুলছুমার মাথায় রক্ত,গলায় ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে মারধরের স্পষ্ট চিহ্ন দেখতে পাই। এসব চিহ্ন ও তাদের কথা বার্তায় সন্দেহ করলে তারা উম্মে কুলছুৃম আত্মহত্যা করেছে বলে দাবী করে । বিবাদীরা দ্রুত আমার মেয়ের লাশ দাফন, কাফনের প্রস্তুতি নিতে থাকে। আমরাও তাদের কথায় সরল বিশ্বাসে লাশ গোসল করতে গেলে লাশের মাথায় ও শরীরের বিভিন্ন জায়গায় গুরুতর জখম ও জমাট বাঁধা রক্ত দেখে সন্দেহ আরো বেড়ে যায়। তাৎক্ষণিক টেকনাফ মডেল থানায় খবর পাঠালে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে লাশের সূরত হাল তৈরী করে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে লাশের ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়ে দেয় এবং স্বামীকে তাৎক্ষণিক আটক করে জেল হাজতে প্রেরণ করে পুলিশ। বাকী আসামিরা এখনো অধরা ।
ওই খুনি আসামীরা এলাকায় ঘুরে বেড়ালেও পুলিশ তাদের এখনো আটক করতে পারেনি।
বিভিন্ন মাধ্যমে আসামীরা মামলা তুলে নিতে আমাদেরকে হুমকি দিচ্ছে। আমরা প্রাণনাশের আতঙ্কে আছি। আমরা আমাদের মেয়ে হত্যার সঠিক বিচার চাই”।
তারা আরো অভিযোগ করে বলেন, ‘আসামীরা বিভিন্ন মাধ্যমে আমাদেরকে জানায় তারা টাকা দিয়ে ময়না তদন্তের রিপোর্ট পাল্টে দিবে বিধায় তাদের আমরা কিছুই করতে পারবনা। হত্যার প্রমাণ লোপাটের জন্য তারা ময়না তদন্তের রিপোর্ট পাল্টাতে টাকার মিশন নিয়ে নেমেছে বলে লোকজনকে বলতে শুনা যায়।
ওই খুনিরা যেন কৌশলে পার পেয়ে না যায় এবং ন্যায় বিচার নিশ্চিত হয় সে জন্য প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট সকলের কাছে আকুল নিবেদন করছি’। এসময় পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন ।
উল্লেখ্য পুরান পাড়া একই বসত ভিটায় ২০১৭ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর ভোররাতে ৬ মাসের অন্ত:সত্ত্বা সিরাজুল ইসলামের দ্বিতীয় স্ত্রী সেলিনা বেগম সেলিকে বিদ্যুৎসর্ট দিয়ে হত্যা করে প্রথম স্ত্রী মোতাহারা ও ভাড়াটে খুনিরা। তারা সহজেই জামিনে বের হয়ে আসায় আবারও একই বসত ভিটায় খুনের ঘটনা ঘটে দাবী স্থানীয়দের।

Comment here