জাতীয়টেকনাফসারাদেশ

সাবরাং উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মফিজ উদ-দৌল্লাহ’র সংবাদ সম্মেলন

প্রেস বিজ্ঞপ্তিঃ
টেকনাফ উপজেলার সাবরাং উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক
মফিজ উদ-দৌল্লাহ এর সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বুধবার (২ মার্চ) রাত ৯ টায় অত্র বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য সাবরাং উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মফিজ উদ-দৌল্লাহ’র সংবাদ সম্মেলন
পাঠ করেন অত্র বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মফিজ উদ-দৌল্লাহ।

প্রিয় সাংবাদিক বৃন্দ, হাতে গড়া প্রতিষ্ঠান সাবরাং উচ্চ বিদ্যালয়ে দীর্ঘ ৩০ বছর শিক্ষকতা জীবনের আজ অত্যন্ত দুঃখ ভারাক্রান্ত মন নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি ২-১টি কথা বলার জন্য। আনুমানিক ৫-৬ মাস পূর্বে এসএসসি পরীক্ষার্থী সালমা আক্তার(১৬) পিতা-কালা চান স্কুল চলাকালীন দুপুরের ছুটির সময় স্থানীয় সিকদার পাড়ার ইসমাইল প্রকাশ বাড়ুর বখাটে ছেলে মেহেদি হাসানের সাথে পালিয়ে গিয়ে বাল্য বিবাহ করে।
এঘটনা নিয়ে স্কুল পরিচালনা কমিটির সিদ্ধান্ত মােতাবেক উক্ত ছাত্রীকে স্কুল থেকে বহিস্কার করা হয়। গত সপ্তাহে টেকনাফ পৌরসভার মহিলা কাউন্সিলর কহিনুর আক্তার আমাকে ফোন করে বলেন, উক্ত ছাত্রীকে বিদ্যালয়ে পূণরায় ভর্তি করার জন্য। আমি তাহাকে অভিভাবকসহ ছাত্রীকে স্কুলে পাঠাতে বলি। এরপর বুধবার (২ মার্চ) সকাল সাড়ে ৯ ঘটিকার সময় ঐ ছাত্রী শাশুড়িসহ স্কুলে আসে। আমি তাদেরকে আশ্বস্থ করি , ছাত্রীর বাল্য বিবাহ হয়েছে। এর দেখাদেখি অন্য ছাত্রীরাও তার পথে চলতে পারে এর জন্য তাহাকে স্কুলে ক্লাস করতে দেওয়া হবে না। কিন্তু বাড়িতে পড়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবে।
এ কথা শুনার পর ছাত্রীর শাশুড়ী অকথ্য ভাষায় আমাকে গালিগালাজ করে বলে, এটা কি তাের বাপের স্কুল?
এসময় স্কুলের কর্মচারীরা আমাকে ঐ মহিলার সাথে কথা না বলার জন্য বারণ করে। এরপর আমি মাস্টার সিরাজুল জানাযায পড়ার জন্য চলে যায়। জানাজার নামাজ শেষে আমি স্কুলে ফিরে এসে অফিস কক্ষে অবস্থান করি।
এসময় ১০ টা ২০মিনিটের সময় কাউন্সিলর কহিনুর তার মোবাইল ফোন থেকে শেষে অকথ্য ভাষায় আমাকে গালিগালাজ করে। এর কিছুক্ষণপর ৭/৮ জন অপরিচিত
মহিলাদের সাথে নিয়ে কহিনুর অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে করতে বিদ্যালয়ের অফিসে প্রবেশ করে আমার
উপর চড়াও হয় এবং টানা হেচড়া করে। এসময় কয়েকজন সহকারী শিক্ষক এবং কর্মচারীরা আমাকে মহিলাদের হাত থেকে রক্ষা করে। এ ঘটনা দেখার পর বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা অফিসের চারদিকে জড়ো হয়ে গেলে তাদের আক্রমন করার আশংকা দেখা গেলে কাউন্সিলর কহিনুরকে সহকারী শিক্ষকরা শিক্ষক রুমে ঢুকিয়ে নিরাপদে আশ্রয় দেয়। এ ঘটনার খবর পেয়ে বিদ্যালয়ের সভাপতি ও অত্র ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নুর হোসেন ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ছাত্র-ছাত্রীদেরকে ক্লাস রুমে চলে যাওয়ার নির্দেশ দেন। শিক্ষার্থীরা ক্লাস রুমে চলে গেলে বিদ্যালয়ের সভাপতি নুর হোসেন চেয়ারম্যান ঘটনা যাচাই-বাচাই করার জন্য কাউন্সিলর কহিনুর আক্তারকে বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষে ডেকে আনেন। এসময় স্কুল পরিচালনা কমিটি ও অভিভাবও কয়েকজন ছিলেন।
এদের সামনে কহিনুর আমার উপর চড়াও হয়ে আমাকে থাপ্পড় মারেন। তখন শিক্ষার্থীরা উত্তপ্ত হয়ে কহিনুরকে আক্রমণ করতে চাইলে উপস্থিত সভাপতি নুর হােসেন চেয়ারম্যানসহ সবাই শিক্ষার্থীদের কবল হতে কহিনুরকে নিয়ে গিয়ে একটি রুমে নিরাপদে বসিয়ে রাখে। এরপর আমি ও সভাপতি উভয় মিলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও), উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এবং টেকনাফ থানার অফিসার ইনচার্জকে মোবাইল অবহিত করলে তৎক্ষনাত উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) একদল ফোর্সসহ স্কুলে এসে প্রত্যক্ষদর্শি অভিভাবক হতে ঘটনার সত্যতা জেনে নেন। এরপর কহিনুর আক্তারকে সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাথে করে নিয়ে যান
এবং উপজেলা নির্বহিী অফিসারের কার্যালয়ে উক্ত ঘটনা
সমাধান করবেন। এ ব্যাপার নিয়ে আমি সাবেক সাংসদ আব্দুর রহমান বদিকে উক্ত ঘটনা অবহিত করি। সাবেক সাংসদ ঘটনাটি যাচাই বাচাই করছেন এবং উনি চট্রগ্রামে অবস্থান করছেন।
তিনি উভয় পক্ষকে আশ্বস্ত করেছেন উনি টেকনাফে আসলে ঐ ঘটনার বিষয়ে মীমাংসা করবেন। এরপরেও সাবেক সাংসদ আব্দুর রহমান বদির কথা অমান্য করে কহিনুর আক্তার কিছু অনলাইন নিউজ পোর্টাল ও কিছু সামাজিক যোগযোগ মাধ্যম ফেসবুকে অত্র বিদ্যালয়ের সুনাম ক্ষুন্ন করার জন্য অপপ্রচার চালাচ্ছে। এর কারণে সঠিক ঘটনাটি প্রকাশ করার জন্য স্কুল কমিটির পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন,অত্র বিদ্যালয়ের সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান নুর হোসেন,সাবরাং ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি অত্র বিদ্যালয়ের অভিভাবক সদস্য আবুল কালাম,দাতা সদস্য সাবেক মেম্বার সব্বির আহমদ,টেকনাফ উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও বিদ্যালয়ের শিক্ষানুরাগী সাইফুল ইসলাম মুন্না,সাবরাং ইউপির প্যানেল চেয়ারম্যান ও অভিভাবক সদস্য শামসুল আলম,অভিভাবকদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন,নুরুল আমিন,আব্দুল কাইয়ুম, কবির আহমদ ও মো. হারুন অর রশিদসহ বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক এবং প্রাক্তণ শিক্ষার্থীরা।

Comment here