টেকনাফসারাদেশ

সাবরাং ট্যুরিজম পার্কে তারকা হোটেল এর ভিত্তি প্রস্থর স্থাপন : পার্কটি বাস্তবায়িত হলে প্রতিদিন ৩৯ হাজার পর্যটক সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবে

টেকনাফ প্রতিনিধি:
কক্সবাজারের টেকনাফে সী-বিচ এলাকায় প্রস্তাবিত সাবরাং পর্যটন অঞ্চলে তারকা হোটেল এর ভিত্তি প্রস্থর স্থাপনের মাধ্যমে বাংলাদেশে পর্যটনের নতুন ঠিকানা উম্মোচন হয়েছে। এতে করে প্রায় ১০ হাজার মানুষের কর্মসংস্থার সুযোগ হবে। এই পার্কটি বাস্তবায়িত হলে প্রতিদিন দেশি-বিদেশি ৩৯ হাজার পর্যটক উপভোগ করতে পারবে।
আজ শনিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি)। তিনটি তারকা হোটেল-এর ভিত্তি প্রস্থরের স্থাপনের মাধ্যমে উম্মোচন হলো দেশে পর্যটনের নতুন ঠিকানা । এতে করে এ অঞ্চলের প্রায় ১০ হাজার মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ হবে। এই পার্কটি বাস্তবায়িত হলে প্রতিদিন দেশি-বিদেশি ৩৯ হাজার পর্যটক এখানে সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন।
শনিবার (১৩ জানুয়ারি) বেলা ১২টার দিকে সমুদ্র সৈকতে পাড়ে টেকনাফ ‘সাবরাং ট্যুরিজম পার্কের খোলা প্রাঙ্গণে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে পর্যটন বান্ধব তিনটি প্রতিষ্ঠানের তারকা হোটেল নির্মাণের ভিত্তি প্রস্থর স্থাপন করেছেন বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল (বেজার) নির্বাহী চেয়ারম্যান পবন চৌধুরী।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন গ্রেট আউটডোর অ্যান্ড অ্যাডভেঞ্চার লিমিটেড-এর ব্যবস্থাপক সোহেল আহমদ ও সানসেট বে লিমিটেডের চেয়ারম্যান ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর ইশতিয়াক আহমেদ পাটোয়ারি। এসময় উপস্থিত ছিলেন টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. সাইফুল ইসলাম, টেকনাফ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মো: হাফিজুর রহমান।
‘সাবরাং ট্যুরিজম পার্ক’ এবং এই বিশাল সমুদ্র সৈকত বেজার কিভাবে হয়েছে, সেই দীর্ঘ ইতিহাস উল্লেখ করে বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান পবন চৌধুরী বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে বেজা নয়নাভিরাম সমুদ্র সৈকতের পাড়ে পর্যটন অঞ্চল ‘সাবরাং ট্যুরিজম পার্কে’ কাজ শুরু করেছে। এখানে আরও আগে কাজ শুরু করার কথা থাকলেও পানি এবং পাথরের কারণে কিছু সমস্যা সৃষ্ট হয়েছে। তবে নীল জলরাশির এ অঞ্চল দৃশ্যমান হলে তা কক্সবাজারের স্থান দখল করে নিবে। এতে করে বাংলাদেশে নতুন ঠিকানা পাবে পর্যটকরা। যেখানে পর্যটন-বান্ধব পরিবেশ থাকবে।
পবন চৌধুরী বলেন, ‘সাবরাং ট্যুরিজম পার্কে পর্যটন শিল্প গড়তে মাস্টারপ্ল্যানের মাধ্যমে উন্নয়ন কাজ চলছে। যা অন্য জায়গার চেয়ে আলাদা হবে। এখানে ঘিঞ্জি পরিবেশ এবং ভিড় থাকবে না। পাশপাশি এই অঞ্চলের প্রকৃতি ও জীব-বৈচিত্র সংরক্ষণে রেখে পাঁচ কিলোমিটার সমুদ্র সৈকত পর্যটকদের জন্য সংরক্ষিত থাকবে। আর এখানকার রাস্তা ও সীমানা চিহ্নিতকরণের কাজ দ্রুত শুরু হবে।
গ্রেট আউটডোর অ্যান্ড অ্যাডভেঞ্চার লিমিটেড-এর ব্যবস্থাপক সোহেল আহমদ বলেন, তারা এখানে ¯েœারকেলিং, স্কুবা ডাইভিং, প্যারাসেইলিং, জেট স্কিইং, প্যাডেল বোর্ডিং, বিচ ভলিবল, বিচ বোলিং সুবিধাসহ আধুনিক পর্যটনবান্ধব হোটেল স্থাপনের কাজ শুরু করছেন।
গ্রিন অরচার্ড হোটেল অ্যান্ড রিসোর্টস লিমিটেড এবং সানসেট বে লিমিটেডের চেয়ারম্যান ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর ইশতিয়াক আহমেদ পাটোয়ারী বলেন, ‘সর্বপ্রথম হোটেল নির্মাণের কাজ দ্রুত শুরু করে শেষ করতে চাই। যাতে পর্যটকরা দেশের এই অনন্য পর্যটন স্পটে এসে নীল সাগরের জলরাশি উপভোগ করতে পারেন। পর্যটনকে সমৃদ্ধ করার এ পরিকল্পনার জন্য তারা বেজা’র এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানান।
বেজা জানিয়েছে, সমুদ্র সৈকতের পাড়ে অবস্থিত সাবরাং ট্যুরিজম পার্কটির আয়তন ১ হাজার ৪৭ একরের। শুরুতে এ অঞ্চলে গ্রেট আউটডোর অ্যান্ড অ্যাডভেঞ্চার লিমিটেড, গ্রিন অরচার্ড হোটেল অ্যান্ড রিসোর্টস লিমিটেড এবং সানসেট বে লিমিটেড-এই তিন প্রতিষ্ঠান ৫.৫ একর জমিতে ৩২.২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগের মাধ্যমে পাঁচ তারকা ও তিন তারকা মানের হোটেলসহ পর্যটন বান্ধব বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণের কাজ শুরু করেছে। যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ২৫৭ কোটি টাকা। এছাড়া ৯টি পর্যটনবান্ধব প্রতিষ্ঠানের আরও ২১২.৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করার কথা রয়েছে। এই বিনিয়োগকারীর তালিকায় নেদারল্যান্ড ও সিঙ্গাপুরের দুটি প্রতিষ্ঠানও রয়েছে। এই মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে সাবরাং ট্যুরিজম পার্কে প্রতিদিন দেশি-বিদেশি ৩৯ হাজার পর্যটক উপভোগ করতে পারবে
এবং বর্তমানে এ পর্যটন অঞ্চলের প্রশাসনিক ভবন ও ভূমি উন্নয়ন, প্রতিরক্ষা বাঁধ, সেতুকালভার্ট তৈরিসহ বিভিন্ন ধরনের উন্নয়ন কর্মকান্ড চলছে।
জানা গেছে, সাবরাং পর্যটন অঞ্চল চালু হলে দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনে এখান থেকে কম সময়ে যাওয়া যাবে, পথও কিছুটা পরিবর্তিত হবে। কারণ, এখন টেকনাফের দমদমিয়া থেকে সেন্টমার্টিনে জাহাজে যেতে সময় লাগে দুই থেকে আড়াই ঘণ্টা। সাবরাং পর্যটন অঞ্চলের কাজ শেষ হলে মাত্র আধা ঘণ্টায় যাওয়া যাবে সেন্ট মার্টিনে। ফলে একজন পর্যটক তখন কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত দেখার পর সাবরাং পর্যটন অঞ্চল ও সেন্টমার্টিন একসঙ্গে দেখার সুযোগ পাবেন।++

Comment here