আন্তর্জাতিকরোহিঙ্গা সমাচার

স্বদেশ ফেরত অভিযানেই রোহিঙ্গা নারীর সন্তান প্রসব : হ্নীলায় খোলা মাঠে রোহিঙ্গাদের বসতি গড়ার চেষ্টা : প্রশাসনিক বাঁধায় উচ্ছেদ

 

জাহাঙ্গীর আলম, হ্নীলা থেকে :

Image may contain: one or more people, people standing, people sitting and outdoor

টেকনাফের হ্নীলায় অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গারা খোলা মাঠে বসতি গড়ার চেষ্টা করলে উপজেলা প্রশাসন,বিজিবি ও হ্নীলা ইউপি যৌথ অভিযান চালিয়ে অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গাদের জড়ো করে স্বদেশ ফেরতের সিদ্বান্ত নেয়। স্বদেশ ফেরতের অভিযান চলাকালে এক নারী সন্তান প্রসব করার ঘটনায় জনমনে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।
জানা যায়-২৫ডিসেম্বর ভোররাত হতে রঙ্গিখালী,নাটমোরাপাড়া,জালিয়াপাড়া,হ্নীলা পূর্ব ফুলের ডেইল,হোয়াব্রাং সীমান্ত পয়েন্ট দিয়ে অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গারা উপজেলার হ্নীলা বাসষ্টেশনের উত্তর পার্শ্বের খোলা মাঠে ৬/৭শ রোহিঙ্গা বসতি গড়ার সংবাদ পেয়ে সকাল ১১টারদিকে হ্নীলা বিওপি ক্যাম্পের কোম্পানী কমান্ডার নজরুল ইসলাম বিশেষ টহল দল,হ্নীলা ইউপি সচিব হাকিম উদ্দিন পাহাড়ী গ্রাম পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। পরিস্থিতি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হলে টেকনাফ ২বিজিবি ব্যাটালিয়নের উপাধিনায়ক মেজর আবু রাসেল ছিদ্দিকী ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ শফিউল আলম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এস

ময় প্রশাসনের তৎপরতা দেখে কৌশলে রোহিঙ্গা পুরুষেরা পালিয়ে গেলেও নারী-শিশুরা রয়ে যায়। বিজিবি জওয়ানেরা ৩শ ৫৬জন নারী-শিশুকে জড়ো করে স্বদেশ ফেরতের সিদ্বান্ত নেয়। এসব রোহিঙ্গা নারী-শিশুদের বিকালে মানবিক খাদ্য সহায়তা দেওয়ার পর হ্নীলা ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব এইচকে আনোয়ার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এমতাবস্থায় জড়ো করা রোহিঙ্গাদের মধ্যে মিয়ানমারের বুড়া সিকদারপাড়ার আবুল আলমের স্ত্রী খুরশিদার প্রসব বেদনা শুরু হয়। তাকে দ্রæত পাশ্ববর্তী হোছন আহমদের ভাড়াবাসার একটি কক্ষে নিয়ে গেলে একজন ফুটফুটে পুত্র সন্তানের জন্ম হয়। বিজিবি জওয়ানেরা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি স্বাপেক্ষে প্রসূতিকে উন্নত চিকিৎসা সহায়তার জন্য হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। সন্ধ্যা রাত ৭টারদিকে বিজিবি এসব অবৈধ বস

তি উচ্ছেদ করে এবং জড়ো করা রোহিঙ্গা নারী-শিশুদের স্বদেশ প্রেরণ করে বলে জানায়। উক্ত অনুপ্রবেশকারী পয়েন্ট সমুহে চিহ্নিত দালাল চক্রের সদস্যরা অনুপ্রবেশকারী এসব রোহিঙ্গাদের ঘরে বন্দি করে রেখে মুক্তিপণ আদায়ের পর ছেড়ে দেয়। এরপর মাঝপথে এলাকার অপর চক্রের সদস্যরা এসব রোহিঙ্গাদের মালামাল হাতিয়ে নেওয়ার পাশাপাশি শ্লীলতাহানির চেষ্টা চালায় বলে ভূক্তভোগীরা জানায়।এসব দালাল ও ছিনতাইকারী চক্রের সদস্যরা রহস্যজনক কারণে আইনের আওতায় না আসায় জনমনে প্রশাসনের কিছু সদস্যদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
একদিকে স্থানীয় কতিপয় সুবিধাভোগী চক্র রোহিঙ্গাদের প্রকাশ্যে আর্থিক অনুদান বা সহায়তা দেওয়ার কারণে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঠেকানো যাচ্ছেনা। এই চক্রটির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ না থাকায় সহায়তার প্রলোভনে পড়ে সড়ক ও বাজারের পার্শ্বে স্থাপনা তৈরীতে আগ্রহী হয়ে উঠছে। যেহেতু বাংলাদেশ তাদের মানবিক কারণে আশ্রয় দিয়েছে সে কারণেই তাদের নির্দিষ্ট স্থানে রাত যাপনের ব্যবস্থা করার দাবী উঠছে। তারা নির্দিষ্ট গন্ডির বাইরে গেলে সামাজিক অপরাধ বৃদ্ধির পাশাপাশি আইন-শৃংখলা পরিস্থিতির চর

ম অবনতির আশংকা দেখা দিয়েছে। সুতরাং সীমান্ত এলাকায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা রোহিঙ্গাদের সংঘবদ্ধ করে সীমিত গন্ডির ভেতরে রাখা স্থানীয় জনসাধারণের মুখ্য দাবীতে পরিণত হয়েছে।

Comment here