টেকনাফসারাদেশ

হ্নীলায় প্রভাবশালীদের ইশারায় পাহাড় কর্তন চলছে: নীরব দর্শক বনকর্মীরা

সাদ্দাম হোসাইন,হ্নীলা:
পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার্থে যে কোন ধরনের পাহাড়-টিলা কাটা নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হলেও হ্নীলা ইউনিয়নের বিভিন্ন টিলা,পাহাড়ী জনপদে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি,রাজনৈতিক ব্যক্তি ও স্থানীয় ইয়াবা গডফাদারদের প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ যোগ-সাজশে পাহাড় কাটা চলছে। স্থানীয় বনকর্মী-ভিলেজারদের রহস্যজনক আচরণে ক্ষুদ্ধ হয়ে উঠছে পরিবেশবাদী সচেতনমহল।
সরেজমিনে হ্নীলা ইউনিয়নের মরিচ্যা ঘোনা,রোজার ঘোনা,আলী আকবর পাড়া,ভিলেজার পাড়া,পশ্চিম পানখালী,পূর্ব পানখালী, পশ্চিম সিকদার পাড়া, মইন্যারজুম, উলুচামরী, লেচুয়াপ্রাং, রঙ্গিখালী, আলীখালী, লেদা, মোচনী, নয়াপাড়া, জাদিমোরা ও দমদমিয়ায় নতুন করে বসতি স্থাপন এবং চাষাবাদের জমি তৈরীর জন্য পাহাড় ও টিলা কাটা অব্যাহত রয়েছে। বিভিন্ন সুত্র থেকে এসব কাজে জড়িত রয়েছে স্থানীয় বর্তমান ও সাবেক জনপ্রতিনিধি,রাজনৈতিক নেতা,প্রভাবশালী ও কিছু এলাকায় ইয়াবা ব্যবসা করে কোটিপতি বনে যাওয়া ইয়াবা গডফাদারদের সংশ্লিষ্ট থাকার অভিযোগ উঠেছে। হ্নীলা মোরা পাড়ার মোঃ জলিলের পুত্র ইয়াবা গডফাদার মোঃ ইসমাঈল বাহিনী ৩০/৩৫জন শ্রমিক দিয়ে একটি পাহাড় কেটে বিলীন করছে। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করলে এর প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবার সমুহ অভিযোগ আনলে উক্ত ইয়াবা গডফাদার প্রকাশ্যে হামলা চালানোর জন্য মহড়া চালায়। এছাড়াও উক্ত স্থানে আরো ৩/৪জন বসতি গড়ার জন্য পাহাড় কাটছে অভিযোগ রয়েছে। এই ব্যাপারে হ্নীলা বিট কর্মকর্তাকে অবহিত করা হলেও গত এক সপ্তাহ ধরে কোন ধরনের পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি। এই ব্যাপারে হ্নীলা পশ্চিম সিকদার পাড়ার এক বাসিন্দা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন,ভাই বিভিন্ন স্থানে পাহাড় কেটে পরিবেশ ধ্বংস করার বিষয়টি ঠিক। এ বিষয়ে সত্য কথা বলতে গেলে আমারও প্রাণহানিসহ মিথ্যা মামলায় হয়রানিসহ নানা আশংকায় রয়েছি। তাই মুখ খুলে কিছু বলতে পারিনা। এই কাজে স্থানীয় কতিপয় রাজনৈতিক ব্যক্তি,মেম্বার,প্রভাবশালী ও কালো টাকার ছত্রছায়ায় এসব কাজ হচ্ছে। বন বিভাগের উপর মহলের চাপে মাঝে-মধ্যে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হলেও পরবর্তীতে কিছু ভিলেজার এবং বনকর্মীদের সাথে আতাঁতের কারণে পাহাড় কাটা বন্ধ হয়না। এই ব্যাপারে হ্নীলা ইউপির ৫নং ওয়ার্ডের মেম্বার জামাল উদ্দিন জানান,বন বিভাগের লোকজনকে ম্যানেজ করে আমার ওয়ার্ডে অহরহ পাহাড় কাটছে। ক্রেলের টেকনাফ সহব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য আব্দুর রহমান হাশেমী বলেন,পাহাড় কেটে বন ও পরিবেশ বিধ্বংসী কার্যক্রম সত্যিই দুঃখজনক। যারা এসব কর্মকান্ডের সাথে সম্পৃক্ত তাদের সংশোধনী দিয়ে ব্যবস্থা না হলে উচ্চ পর্যায়ের সভায় উত্থাপন করা হবে। হ্নীলা ইউপির চেয়ারম্যান এইচ.কে.আনোয়ার সিআইপি জানান,পাহাড় কাটা অন্যায়। তিনি স্থানীয় জনসাধারণের সচেতনার উপর গুরুত্বারোপ করেন। এই ব্যাপারে কক্সবাজার দক্ষিণের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) দেওয়ান মুহাম্মদ আব্দুল হাই আজাদ বলেন,এসব বিষয় আমি ব্যক্তিগতভাবে পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।

Comment here