টেকনাফসারাদেশ

হ্নীলায় রিক্সা চালককে পিটিয়ে মারার চেষ্টা চালিয়েছে ইয়াবা গডফাদারেরা

সাদ্দাম হোসাইন, হ্নীলা :
হ্নীলায় গভীর রাতে এক রিক্সা চালককে বাড়ি থেকে তুলে এনে মধ্যযুগীয় কায়দায় বেধঁড়ক পিটিয়ে মারাতœক আহত করেছে ইয়াবা গডফাদারেরা। এই ব্যাপারে থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়,২৬জুলাই রাতের প্রথম প্রহরে টেকনাফের হ্নীলা রঙ্গিখালীর মকবুল আহমদের পুত্র আব্দুল গফুর(৩২)কে জামাল মেম্বারের পুত্র ইয়াবা গডফাদার শাহ আজম লেদা ভাড়া যাইতে হবে বলে জানায়। উত্তরে অটোরিক্সা চালক গফুর জানায়,গাড়ি ঢুকিয়ে রেখেছি এবং এখন ভাত খাচ্ছি। ইয়াবা গডফাদার আজম গালমন্দ করে বলে আজকে ভাড়া না গেলে তুই আর কোন দিন রোডে গাড়ি চালাইতে পারবিনা। তুরে পাইলে মারি ফেলাইয়ুম। কিছুক্ষণ পর অবৈধ অস্ত্র নিয়ে জামাল মেম্বার পুত্র আজম,লাঠি ও লোহার রড নিয়ে শাহ নেওয়াজ,শাহ জালাল,কালা চাঁদের পুত্র রিদুওয়ান ও অছিউর রহমানের পুত্র বেলাল গফুরের বাড়িতে এসে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে তাকে অপহরণ করে আলীখালীতে নিয়ে রাস্তার পাশে একটি গাছের বেঁধে রাখে। এরপর আজম বুকে অস্ত্র ঠেকিয়ে গালিগালাজ করে বলে তুরে গুলি করে মারলে কি হবে বলে হুমকি দেয় এবং মারধর করে। এরপর আজমসহ উপরোক্তরা লাঠি-লোহার রড নিয়ে মধ্যযুগীয় কায়দায় অমানবিক নির্যাতন চালিয়ে রক্তাক্ত করে। এই ঘটনার কিছুক্ষণ পর (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) এক ব্যক্তি উপস্থিত হয়ে এই অবস্থা দেখতে পেয়ে তাকে কেন মারছে জানতে চাইলে,আজম তাকে বলে রঙ্গিখালীর বেলাইল্যার পুয়াতি হাটে এইজন্য তার এই অবস্থা। উপস্থিত ঐ ব্যক্তি বলেন,তার সাথে হাটলে এমন নির্যাতন করতে হবে কি বলে রক্তাক্ত আব্দুল গফুরকে উদ্ধার করে। ঐ ব্যক্তি তাদের বিভিন্নভাবে সহায়তাকারী অপর এক ব্যক্তিকে এই ঘটনা মুঠোফোনে জানায়। ঐ ব্যক্তি মুঠোফোনে গফুরের সাথে কথা বলে জানায়,এই ঘটনা নিয়ে আর বাড়াবাড়ি করবিনা এবং কাউকে বলবিনা। যা খরচ লাগে তোমাকে দেব। আর বললে তুমি হ্নীলা ষ্টেশনে এসে গাড়ি চালাতে পারবিনা। পরবর্তীতে উদ্ধারকারী ব্যক্তি ও শাহ জালাল হুমকি দিয়ে বলে,এই ঘটনা সকালে কাউকে জানালে তোমাকে পরে মেরে ফেলা হবে বলে হুমকি দিয়ে বাড়িতে দিয়ে আসে। সকালে রক্তাক্ত আব্দুল গফুর হ্নীলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক টেকনাফ উপজেলা সদর হাসপাতালে রেফার করে। সেখানে অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় কক্সবাজার সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। এই ব্যাপারে অভিযুক্তদের আসামী করে টেকনাফ মডেল থানায় একটি মামলার প্রক্রিয়া চলছে বলে এসআই বোরহান উদ্দিন জানান।
উল্লেখ্য উপরোক্ত আসামীরা স্বশস্ত্র সংঘবদ্ধ গ্রুপ ও ইয়াবা চোরাকারবারী সিন্ডিকেট হওয়ায় রক্তাক্ত আব্দুল গফুরসহ পুরো পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে বলে দাবী করেন। এদিকে এলাকার সচেতন মহল মনে করেন,হামলায় রক্তাক্ত আব্দুল গফুর পুলিশের সোর্স হিসেবে কাজ করার সন্দেহ করায় পূর্ব পরিকল্পিতভাবে রিক্সা ভাড়া নেওয়াকে ইস্যু করে স্বশস্ত্র ইয়াবা সিন্ডিকেট তাকে প্রাণে মারার চেষ্টা চালিয়েছিল। এই ন্যাক্কারজনক ঘটনায় পুরো এলাকায় আতংক সৃষ্টি করলেও স্বশস্ত্র গ্রুপের ভয়ে কেউ মুখ খুলতে পারছেনা বলে একাধিক ব্যক্তি জানান। এলাকার শান্তি-শৃংখলা রক্ষার স্বার্থে এসব অপরাধীদের কঠোর হস্তে দমনের জন্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সহায়তা কামনা করেছেন।

Comment here