আন্তর্জাতিক

বাংলাদেশ সীমান্তে বিজিবি’র সর্তক টহল জোরদার : মিয়ানমারের মংডু সীমান্তের বিজিপি ক্যাম্পে হামলা

ভিশন ডেস্ক : index
টেকনাফ সংলগ্ন মিয়ানমরের মংডুতে তিনটি সীমান্ত ক্যাম্পে হামলা চালিয়েছে দুর্বৃত্ত¡রা। এ ঘটনায় মিয়ানমারের (বর্ডার গাড পুলিশ) বিজিপি’র বেশ কয়েকজন সদস্য হতাহত ও অস্ত্র লুটের খবর পাওয়া গেছে। ৯ অক্টোবর রোববার ভোররাত ১ টার সময় থেকে এ ঘটনা শুরু হয়। হামলার শিকার তিনটি ক্যাম্পে হচ্ছে কাউয়ারবিল তানাইংসুক, নাফফোরা ও রাসিডং। কেউ কেউ এ ঘটনা মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ও পুলিশের অভ্যান্তরিন ঘটনা বলেও দাবী করছেন।
তবে মিয়ানমারের কোন দায়িত্বশীল সুত্র নিশ্চিত করেনি। এদিকে
এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সীমান্তে বর্ডার র্গাড বাংলাদেশ (বিজিবি) সর্তক অবস্থায় রয়েছে। টেকনাফ-মিয়ানমার ট্রানজিট যাতায়াত, সীমান্ত বানিজ্য ব্যবসায়ী যাতায়াত অঘোষিত ভাবে বন্ধ রয়েছে।
জানা যায়, শনিবার দিবাগত রাত ১ টার সময় মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মংডু থানার কাউয়ারবিল তানাইংসুক ক্যাম্পে হানা দেয় স্বশস্ত্র দূর্বৃত্ত¡রা। পরে নিকট সময়ে এটি ছড়িয়ে পড়ে নাফফোরা ও রাসিডং ক্যাম্প। এই তিন ক্যাম্পে মোট ৯ জন পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছেন বলে স্থানীয় একাধিক সুত্র থেকে জানা গেছে।
এদিকে এ ঘটনা নিয়ে পরস্পর বিরোধী বক্তব্য পাওয়া গেছে। কেউ কেউ দাবী করছেন এ ঘটনা এদের বাহিনীর অভ্যান্তরিন ঘটনা । এ ধরনের ঘটনার জন্ম দিলেই তা মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের উপর চাপিয়ে দিয়ে মুসলিমদের উপর নির্যাতন শুরু করে। একইভাবে রবিবার সকাল থেকে ঘটনার আশপাশের এলাকার লোকজন প্রানভয়ে ঘরবাড়ী ও ভিটেমাটি ফেলে নিরাপদ স্থানে চলে যেতে শুরু করে। আর ওই সব ঘরবাড়ীতে মিয়ানমার আইন শৃংখলা বাহিনীর উপস্থিতি রাখাইন লোকজন আগুন ধরিয়ে দেয় বলেও জানা গেছে।
অপর একটি সুত্র মতে মিয়ানমারে ২০১২ সালের জুন মাসের শুরু হওয়া জাতিগত দাঙ্গার পর “নাইন-সিক্স” নামের একটি বুর্ডিষ্ট সংগঠন রাখাইন রাজ্যে ক্ষমতা ব্যবহার করে আসছিলো। যাদের সাথে ছিলো সেনাবাহিনীর সু সর্ম্পক। মিয়ানমারের অংসান সুচি’র দল লীগ ফর ড্যামুক্রেসী ক্ষমতায় আসার পর ওই নাইন-সিক্স গ্রæপের ক্ষতমা আস্তে আস্তে খর্ব হতে থাকে। এ গ্রæপটিই এ হামলা ঘটিয়েছে এমন খবরও রটেছে রাখাইন রাজ্যে। তবে এ ঘটনার সাথে মিয়ানমারের বিদ্রোহী সংগঠন রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গনাইজেশন( আরএসও) বা আরাকান আর্মি(এএ) জড়িত থাকতে পারে বলেও বিভিন্ন সুত্র নিশ্চিত করেছে।
এ বিষয়ে টেকনাফস্থ ২ বর্ডার গার্ড ব্যাটিলয়ানের অধিনায়ক লে. কর্ণেল আবুজার আল জাহিদ, মিয়ানমার বর্ডার গার্ড পুলিশ দোভাষীর মাধ্যমে বিজিবিকে জানিয়েছেন, দূর্বৃত্ত¡রা যাতে সীমান্ত অতিক্রম করে যাতে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ না করতে পারে বা ঘাটিঁ গড়তে না পারে সে ব্যাপারে সহযোগিতা চেয়েছেন। তবে এর আগে থেকেই বিজিবি সর্তক রয়েছে। টহল সংখ্যা বৃদ্ধি করা হয়েছে এবং দহলও জোরদার করা হয়েছে। সীমান্ত চৌকি গুলোকে অ্যার্লাট রাখা হয়েছে। যাতে সীমান্ত অতিক্রম করে কোন দূর্বৃত্ত¡ বাংলাদেশে প্রবেশ করতে না পারে।
এ ছাড়া মিয়ানমারের মংডু সীমান্তে দৃবৃর্ত্তে¦র হামলায় সেখানের পরিস্থিতি অস্বাভাবিক রয়েছে। যার কারনে মিয়ানমার থেকে কোন ট্রানজিট যাত্রী মংডু থেকে টেকনাফ আসেনি। তাই টেকনাফ থেকেও কোন যাত্রী মিয়ানমারে যায়নি। আনুষ্টানিক ভাবে যাতায়াত বন্ধ না থাকলেও অঘোষিত ভাবে বন্ধ রয়েছে ট্রানজিট যাতায়াত ।
টেকনাফ স্থল বন্দরে দায়িত্বরত অভিবাসন কর্মকর্তা (ডাটা এ্যাট্রি অপারেটর) মোঃ আনোয়ার হোসেন বলেন, বিভিন্ন বোটের লাইনম্যান, বোটমাঝি ইত্যাদি মাধ্যমে খবর পাওয়া গেছে মিয়ানমারের তিনটি সীমান্ত ক্যাম্পে “আরকান আর্মি” নামের মিয়ানমারের বিদ্রোহী সংগঠনের সদস্যরা হামলা চালিয়ে বেশ কয়েকজন বিজিপি সদস্য হতাহত হয়। যার কারনে কোন ব্যবসায়ী রবিবার টেকনাফ বন্দর দিয়ে যাতায়াত করেনি। এদিকে গতকাল শনিবার বিকালে আসা একটি জাহাজের আইজিএম জমা করা হলেও রবিবার কোন পন্যবাহী জাহাজ মিয়ানমার থেকে টেকনাফ স্থল বন্দরে নৌঙ্গর করেনি বলে জানিয়েছেন রাজস্ব কর্মকর্তা মোঃ আব্দুল মান্নান।

Comment here