এক্সক্লুসিভসারাদেশ

বুদ্ধিজীবি হত্যা দিবস:অপশক্তির কাছে মাথা নত নয়

টেকনাফ ভিশন ডেস্ক:কোনো অপশক্তির কাছে মাথা নত করবে না জাতি- এই প্রত্যয়ে ও বিনম্র শ্রদ্ধার সঙ্গে জাতি পালন করছে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস।১৯৭১ সালের এ দিনে (১৪ ডিসেম্বর) পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসর রাজাকার আলবদর, আলশামস মিলিতভাবে বাংলার শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করেছিল।জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের স্মরণে বুধবার সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গেই রাজধানীর মিরপুরে অবস্থিত বুদ্ধিজীবীদের স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানোর জন্য বিভিন্ন সামাজিক, পেশাজীবী, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক সংগঠনসহ হাজার হাজার সাধারণ মানুষ আসতে শুরু করে।এর আগে ভোরে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।পরে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রধান হিসেবে শেখ হাসিনা কেন্দ্রীয় নেতাদের নিয়ে শ্রদ্ধা জানান। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন ‘কোনো অপশক্তির কাছে মাথা নত করা হবে না, সব অপরাধীকে শাস্তির আওতায় আনতে সরকার বদ্ধপরিকর।’
পরে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের নেতৃত্বে শহীদ পরিবারের সদস্য এবং মুক্তিযোদ্ধারা পুষ্পস্তবক অপর্ণ করেন। এ সময় মন্ত্রী বলেন, ‘আগামী জানুয়ারির মধ্যে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা প্রকাশসহ জুলাইয়ের মধ্যে সকল রাজাকারের তালিকা প্রকাশ করব আমরা।’এর পরেই বিভিন্ন রাজনৈতিক এবং সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন ও সর্বস্তরের মানুষ স্মৃতিসৌধে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণের মাধ্যমে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। শ্রদ্ধা জানিয়েছে সাংবাদিকদের সংগঠন ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিও (ডিআরইউ)।
একই সঙ্গে শ্রদ্ধা জানাতে আসা সবার প্রত্যাশা- জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের যারা হত্যা করেছে, এদের মধ্যে যারা বিচার-প্রক্রিয়ার বাইরে আছে বা পলাতক আছে, তাদের বিচারের আওতায় আনা ও বিচারের রায় কার্যকর করে দেশকে সম্পূর্ণরূপে কলঙ্কমুক্ত করা।
এরই মধ্যে মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত অনেকের ফাঁসির রায় ঘোষিত হয়েছে। মানবতাবিরোধী হত্যা মামলায় দণ্ডিত জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল কাদের মোল্লার ফাঁসির দণ্ড কার্যকর হয়েছে। জামায়াতের অপর নেতা মো. কামারুজ্জামান এবং বুদ্ধিজীবী হত্যার অন্যতম হোতা আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের ফাঁসির রায়ও কার্যকর হয়েছে।
চলতি বছরের ১১ মে মুক্তিযুদ্ধকালে বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডের নীলনকশা বাস্তবায়নকারী গুপ্তঘাতক আলবদর বাহিনীর প্রধান ও জামায়াতের আমির মতিউর রহমান নিজামীর ফাঁসির দণ্ড কার্যকর হয়। তবে বুদ্ধিজীবী হত্যায় সরাসরি জড়িত চৌধুরী মইনউদ্দীন ও আশরাফুজ্জামান খান পলাতক থাকায় বিচারের রায় এখনো কার্যকর করা সম্ভব হয়নি।
চৌধুরী মইনউদ্দীন যুক্তরাজ্যে ও আশরাফুজ্জামান খান যুক্তরাষ্ট্রে পলাতক রয়েছেন। তাদের ২০১৩ সালের ৩ নভেম্বর মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২।
বুদ্ধিজীবীদের হত্যার ঠিক দুই দিন পর ১৬ ডিসেম্বর জেনারেল নিয়াজির নেতৃত্বাধীন পাকিস্তানি বাহিনী আত্মসমর্পণ করে এবং স্বাধীন দেশ হিসেবে বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটে।

Comment here