টেকনাফ (কক্সবাজার) প্রতিনিধি॥
প্রধানমন্ত্রীর প্রকাশে ইয়াবা প্রতিরোধের ঘোষনার পর সীমান্ত উপজেলা টেকনাফে পুলিশ প্রধানের সফরকে ঘিরে প্রশাসনিক তৎপরতা বাড়লেও বড় ধরনের ইয়াবা উদ্ধার অভিযান থমকে রয়েছে। আজ ২৪ শে মে টেকনাফ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে বাংলাদেশ পুলিশের প্রধান (আইজিপি) একেএম শহিদুল হক এক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখবেন। ঐদিন মুলত তিনি সকালে টেকনাফ উপজেলার শামলাপুর নবনির্মিত ভবন ও টেকনাফ মডেল থানার নব নির্মিত ভবনের আনুষ্ঠানিক উদ্ভোধন করবেন। এরপর বিকালে সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও মাদকবিরোধী সমাবেশে যোগদান করার কথা রয়েছে।
পুলিশ সূত্র জানায়, গত ২০০৯ সালে সারাদেশের গুরুত্ব বিবেচনা করে টেকনাফ থানাকে মডেল থানায় রূপান্তর করা হয়। এমনকি বৃটিশ আমলে নির্মিত জরাজীর্ণ ভবনে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পুলিশকে কার্যক্রম চালাতে হয়েছে। সম্প্রতি পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ টেকনাফ মডেল থানার গুরুত্বকে বিবেচনা করে পুলিশের কর্মকর্তা ও সদস্য বৃদ্ধি করেছে। তবে এখনও পর্যাপ্ত পরিবহন সমস্যা লেগে আছে। আরও জানা যায়, গত ২০১৫ সালে বাংলাদেশ পুলিশের নির্মাণ শাখা কর্তৃক সাড়ে ৬ কোটি টাকা ব্যয়ে চারতল বিশিষ্ট একটি ভবন নির্মাণে টেন্ডার আহ্বান করে। এসময় মের্সাস ডি ডেলটা ইঞ্জিনিয়ারিং ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান টেন্ডারটি পেয়ে কাজ শুরু করে। এ প্রতিষ্ঠান সাড়ে ৬ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রায় দুই বৎসর বিরামহীন কাজ করে নির্মাণ কাজ শেষ করতে সক্ষম হয়।
নব নির্মিত ভবন পরিদর্শনে দেখা যায়, চারতলা বিশিষ্ট ভবনের নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। এটি মডেল থানাকে সমৃদ্ধ করবে। পুলিশের সর্বোচ্চ ব্যক্তি আইজিপিকে বরণ করতে পুলিশের পাশাপাশি কমিউনিটি পুলিশিং ও একযোগ কাজ করছে।
এদিকে, পুলিশ প্রধান একেএম শহিদুল হকের টেকনাফ সফরকে কেন্দ্র করে গেইট নির্মাণ, জনসভার পেন্ডেল নির্মান ও বিভিন্ন স্থাপনার পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতাসহ সমাবেশের ব্যাপক প্রস্তুতি চালিয়ে যাচ্ছেন সংশ্লিষ্টরা। গত ৬ মে কক্সবাজারের এক জনসভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কক্সবাজারের একটি বদনাম রয়েছে, এখান থেকে সারা দেশে ইয়াবা সরবরাহ হয়, পাচারকারী যতই শক্তিশালী হোক ছাড় দেওয়া হবেনা এমন মন্তব্যের পর কোন এক বাহিনী প্রধানের এটি প্রথম টেকনাফ সফর। মিয়ানমার সীমান্তবর্তী এই টেকনাফের নাফ নদী, বঙ্গোপসাগর ও সড়কপথ দিয়ে দেশে ইয়াবা পাচারের হিড়িক চলছে। একমাস আগেও বিজিবি, কোস্টগার্ড ও পুলিশ টেকনাফ সীমান্ত দিয়ে বড় বড় ইয়াবার চালান আটক করে। কিন্তু সম্প্রতি কয়েক সপ্তাহের মধ্যে ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের অন্যান্য এলাকাতে ইয়াবার বড় বড় চালান ধরা পড়লেও টেকনাফে ধরা পড়ছে ছোট ছোট চালান। বিশেষ করে রবিবার সকাল সাড়ে ১০ টায় কক্সবাজার টেকনাফ সড়কে নয়াবাজার এলাকায় দুই হাজার ইয়াবাসহ দুই সহোদর নুরুল কবির ও নুরুল আমিন, সকাল সাড়ে ৭ টায় ২ হাজার ইয়াবাসহ ঝিমংখালী এলাকায় মিয়ানমার নাগরিক আলী জোহারকে আটক করে হোয়াইক্যং পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এস আই একরাম্জ্জুামান। টেকনাফ শাহপরীরদ্বীপে সড়কে দুপুর দুই টায় ৯ হাজার ৯০৯ পিস ইয়াবা ও মোটরসাইকেসহ দুই সহোদর মোঃ আল ফারুক এবং মোঃ ফয়েজকে আটক করে বিজিবি। তবে এক সপ্তাহের মধ্যে বড় চালানের ইয়াবা উদ্ধারের তথ্য পাওয়া যায়নি।
এ প্রসংগে টেকনাফ মডেল থানার ওসি মোঃ মাঈন উদ্দিন খাঁন বলেন, উপকূলীয় এলাকা হিসেবে এখানে নদী বা সাগরে অভিযান চালানোর মতো লজিষ্টিক সাপোর্ট থানা পুলিশের নেই। ইয়াবা পাচারকারীরা ধরন পাল্টিয়ে স্থল ভাগের চেয়ে সাগর ও নদী পথকে বড় চালানের জন্য বেচে নিয়েছে। এরা প্রতিনিয়ত রুট পরিবর্তন করে পাচার চালিয়ে যাচ্ছে। তবে পুলিশও আইনশৃংখলা রক্ষার পাশাপাশি ইয়াবাসহ মাদক উদ্ধারে তৎপর রয়েছে। তিনি আরো বলেন, আইজিপি মহোদয়ের সফর ও সমাবেশের দিক নির্দেশনার আলোকে ইয়াবাসহ মাদক নির্মূলে পুলিশি অভিযান আরো জোরদার করা হবে।
আজ টেকনাফ আসছেন আইজিপি : ইয়াবা পাচার বন্ধে কার্যকর দিক নির্দেশনার অপেক্ষায় আইনশৃংখলা বাহিনী
![](http://www.teknafvision.com/wp-content/uploads/2017/05/lrqMwHlfAcnppwo-1600x900-noPad.jpg)
Comment here