দৃষ্টিপাত

আরও নিরাপত্তা চান এমপিরা;অসহায় পুলিশ

টেকনাফ ভিশন ডেস্ক:সংসদ সদস্যদের (এমপি) আলোচনায় এখন ব্যক্তিগত নিরাপত্তা। বিশেষ করে দুর্বৃত্তের গুলিতে সুন্দরগঞ্জের এমপি মঞ্জুরুল ইসলাম লিটন নিহত হওয়ার পর থেকেই সবাই পুলিশি প্রহরা দাবি করছেন। তাদের নিরাপত্তা দিতে রাজি পুলিশ প্রশাসনও। কিন্তু পর্যাপ্ত যানবাহন ও জনবল সঙ্কটে সেই কাঙ্ক্ষিত সেবা দিতে পারছেন না তারা।
এ নিয়ে উল্টো বিপাকে পড়েছেন পুলিশের সর্বোচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তারা। জাতীয় দৈনিক ইত্তেফাকের এক বিশেষ প্রতিবেদনে এমনটাই বলা হয়েছে।
পুলিশের সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, জনবলের চেয়েও বড় সমস্যা যানবাহন অর্থাৎ, নিজস্ব গাড়ির অভাব। পুলিশের অধিকাংশ থানাতেই নিজস্ব যানবাহন ব্যবস্থা নেই। ফলে চরম বিপাকে পড়তে হচ্ছে ওইসব থানার পুলিশকে।
এ বিষয়ে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) একেএম শহীদুল হক বলেন, ‘নিরাপত্তার বিষয়টি সামনে রেখে যা করা দরকার এর সবই আমরা করতে চাই। কিন্তু গাড়ি না থাকলে তা কিভাবে সম্ভব? এই মুহূর্তে আমাদের প্রচুর গাড়ি দরকার। তারপরও যাদের জীবন ঝুঁকিপূর্ণ তাদের অবশ্যই আমরা নিরাপত্তা দেবো। এ বিষয়টি সবাইকে বুঝতে হবে।’
নাম প্রকাশে পুলিশের আরেক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, এ মুহূর্তে প্রায় ৫০টির মতো টহল গাড়ি ভিভিআইপি ও ভিআইপিদের নিরাপত্তার কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। রয়েছে গানম্যানও। এছাড়া দলীয় অনুষ্ঠান, টহল ডিউটিসহ নিজ বিভাগের কর্মকর্তাদের নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করে পুলিশ।
‘এ পরিস্থিতিতে বিদ্যমান জনবল ও যানবাহন দিয়ে কোনোভাবেই নতুন ব্যক্তিদের নিরাপত্তা দেওয়া সম্ভব নয়,’ বলেন তিনি।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সবচেয়ে চমকপ্রদ তথ্য হচ্ছে- টহল গাড়ির এতোই অভাব যে, বাইরে থেকে রিকুইজিশন নিয়ে কাজ চালাতে হয় পুরো পুলিশ বিভাগকে। এমনকি রিকুইজিনেশন নেওয়া সব গাড়িও ব্যবহার করতে পারে না পুলিশ। জানা গেছে, ১৫টি রিকুইজিশন করা গাড়ির মধ্যে মাত্র একটি ব্যবহার করতে পারে পুলিশ। বাকিগুলোর প্রায় সবই দিয়ে দিতে হয় প্রশাসনের নানা বিভাগে। এ চিত্র শুধু ঢাকা শহরে নয়, পুরো দেশেই- এভাবেই গাড়ির ব্যবস্থা করছে পুলিশ।
এখন সমাধান খুঁজে ফিরছে পুলিশ। জনবলের সমস্যা কিছুটা হলেও মিটেছে। এ সরকারের আমলে প্রায় ৫০ হাজার পুলিশ সদস্য নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু নিজস্ব যানবাহন সঙ্কট রয়েই গেছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দীর্ঘদিন ধরে পুলিশ সদর দফতর থেকে একটি নির্দিষ্ট মডেলের গাড়ির জন্য আবেদন করা হচ্ছে। কিন্তু মন্ত্রণালয় দিতে চেয়েছে জিপ গাড়ি। যা কিনা পুলিশের কাজের জন্য সহায়ক নয়।
এদিকে, নিরাপত্তা দেওয়া নিয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে রয়েছে জোর অভিযোগ। যাদের নিরাপত্তা দেওয়া হচ্ছে তারা গানম্যানকে দিয়ে নিরাপত্তা নয় বরং, নিত্যদিনের কাজও করিয়ে নেওয়া হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজনের বরাত দিয়ে পত্রিকাটি বলছে, গানম্যানকে দিয়ে পারিবারিক কাজকর্ম যেমন, বাচ্চাদের স্কুল থেকে আনা-নেওয়া থেকে শুরু করে বাজার পর্যন্ত করিয়ে নেওয়ার ঘটনাও ঘটছে।

সূত্র: দৈনিক ইত্তেফাক

Comment here