রোহিঙ্গা সমাচার

মিয়ানমারে ফিরতে চায় রোহিঙ্গরা তবে…

জাবেদ ইকবাল চৌধুরী :
বর্বরতার শিকার হয়ে বিভিন্ন সময়ে মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে আসা রোহিঙ্গা স্বদেশে ফেরত যেতে চায়। তাদের একমাত্র দাবী হচ্ছে সেখানে প্রকৃত অর্থে নাগরিকত্ব নিশ্চিত করতে হবে মিয়ানমার সরকারকে। মিয়ানমমারে শত শত বছর ধরে বসবাসকারী আরাকানের মুসলিম রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব বাতিল করেছে মিয়ানমার সরকার। ১৯৪৮ সালে বৃটিশ সরকার র্বামাকে স্বাধীনতা দেয়। এরপর ১৯৫৫ সালের দিকে তৎকালিন সরকার মিয়ানমারে ন্যাশনাল রেজিষ্ট্রেশন শুরু করে । সে সময় সব ধর্মের নাগরিকদের রেজিষ্ট্রেশন করা হয় এবং ছবি যুক্ত এনআরসি (ন্যাশনাল রেজিষ্ট্রেশন কার্ড ) দেওয়া হয়। মিয়ানমারে বিভিন্ন ধর্মালম্বীদের বসবাস হলেও মূলত বৌদ্ধ ধর্মালম্বী এবং সেনাবাহিনীই মূলত দেশটি শাসন করে চলছে।
কবে শুরু বাংলায় রোহিঙ্গা আগমন
১৯৪২ সালের ২৮ মার্চ মিয়ানমারের মিনবিয়া এবং  ¤্রক-ইউ শহরে রাখাইন জাতীয়তাবাদী ও কারেইনপন্থীরা প্রায় ৫ হাজার মুসলিমকে হত্যা করে। ইতিমধ্যে রাখাইন রাজ্যের উত্তারঞ্চলে আাে ২০ হাজার মুসলমানকেও হত্যা করা হয়। এ দাঙ্গা নিয়ন্ত্রন করতে গিয়ে নিহত হয় উপ-কমিশনার ইউ য়ু কিয়াও খায়াং। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জাপানীরা ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের অধীনস্থ মিয়ানমারে হামলা চালায়। এক পর্যায়ে ব্রিটিশ শক্তি পরাজিত হয়ে ক্ষমতা ছেড়ে চলে যায়। এর ফলে ব্যাপক সংর্ঘষ ছড়িয়ে পড়ে রাখাইন ও মুসলিমদের মধ্যে। জাপান ব্রিটিশ যুদ্ধের সময় রোহিঙ্গা মিত্র শক্তি ব্রিটিশ পন্থী ছিলো । ব্রিটিশদের দখলীয় এলাকা গুলোতে রোহিঙ্গা অস্ত্রধারী একটি দল বাফার জোন সৃষ্টি করে। জাপানীরা হাজার হাজার রোহিঙ্গাদের নির্যাতন, ধর্ষণ এবং হত্যা করেছিলো। এ সময়ে প্রায় ২২ হাজার রোহিঙ্গা সংর্ঘষ এড়াতে সীমান্ত অতিক্রম করে বাংলায় চলে আসে। ওই সময় জাপানী ও বার্মাদের দ্বারা বার বার গণহত্যার শিকার হয়ে প্রায় ৪০ হাজার রোহিঙ্গা স্থায়ীভাবে চট্টগ্রাম চলে আসে।
এরপর ১৯৭৮ সালে, ১৯৯০ ৯১ সালে, ২০১২ সালে এবং সর্বশেষ ২০১৬ সালের অক্টোবর হতে উল্লেখ যোগ্য হারে বাংলাদেশে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ দল বেধে আসা শুরু কর। এ ছাড়া বিভিন্ন সময়ে মিয়ানমারে ব্যক্তিগতভাবে বিভিন্ন বর্বরতার শিকার হয়ে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ চলছে। যা কোন ভাবে থামানো যাচ্ছেনা। ইতিমধ্যে বাংলাদেশে ৫ লক্ষাধিক রোহিঙ্গা অবস্থান করছে বলে ধারনা করা হয়। এ ছাড়া সৌদি আরব, পাকিস্থান, আপগান, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়াসহ মধ্য প্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে ১০ /১৫ লক্ষাধিক রোহিঙ্গা অবস্থান করছে।
রোহিঙ্গা বিদ্রোহ
১৯৪৭ সালে রোহিঙ্গারা মুজাহিদ পার্টি গঠন করে। এরা জিহাদী আন্দোলন সর্মথন করতো। স্থানীয় ভাবে এদের বলা হতো পুরুইক্যা বাহিনী। তাদের লক্ষ্য ছিলো আরাকানে ইসলামী রাষ্ট্র ব্যবস্থা কায়েক করা। ১৯৬২ সালে জেনারেল নে উইন সামরিক শাসন জারি না করার আগ পর্যন্ত রাখাইনে মুজাহিদ বাহিনী বেশ সক্রিয় ছিলো। পরে জেনারেল নে উইন সরকার এ বাহিনীর বিরুদ্ধে বেশ কিছু অভিযান পরিচালনা করে। এ সরকার ১৯৭৮ সালে “কিং ড্রাগন অপারেশন” নাম দিয়ে মুসলিমদের উপর বর্বরতা শুরু করে। এ সময় কয়েক লাখ রোহিঙ্গা সীমান্ত পাড়ি দিয়ে প্রতিবেশী বাংলাদেশে শরনার্থী হিসেবে আশ্রয় নেয়। এ সময় রোহিঙ্গাদের বিরাট একটি অংশ মুসলিম রাষ্ট্র হিসেবে পাকিস্থান, আফগানিস্থান ও সৌদি আরব পাড়ি জমায়। অনেকে আবার মিয়ানমারে জাতি সংঘের মাধ্যমে মিয়ানমারে ফিরেও যায়। এরপরও মুজাহিদ গোষ্ঠী আরাকানের পাহাড়ি অঞ্চলে আরফিএফ, আরএসও, আরিফ, আরএনও ইত্যাতি ব্যানারে সক্রিয় ছিলো। বর্তমানে আল -একেইন নামে মিয়ানমারের বর্ডার গার্ড পুলিশের ৩ টি স্থাপনায় হামলার দায়ও স্বীকার করেছে সংস্থাটি। মিয়ানমারের রাখাইনের উত্তর মংডু ’র পাহাড়ি এলাকায় এদের সশস্ত্র অবস্থানের ভিডিও ফুটেজ ছেড়েছে ফেস বুকে। মিয়ানমারের জান্তা সরকার প্রায় অর্ধ শতাব্দী দেশটি শাসন করেছে। তারা ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য বার্মিজ জাতীয়তাবাদ এবং থেরাভেদা বৌদ্ধ ধর্মী মতবাদ ব্যাপকহারে ব্যবহার করে থাকে। এরফলে রোহিঙ্গা, কোকাং, পানথাই (চীনা মুসলিম)’র মতোক্ষুদ্র জাতিসত্ত¡াকে নির্যাতন করে থাকে। এমনকি বর্তমান সু চি’র নেতৃত্বাধিন সরকারের আমলেও বার্মার প্রধান জনগোষ্ঠী থেকে আসা নব্য গণতন্ত্রপন্থীরা রোহিঙ্গা মুসলিমদের মিয়ানমারের নাগরিক হিসেবে স্বীকার করেন না। মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গা ও চীনা জনগোষ্ঠীর মত ক্ষুদ্র জাতিসত্ত¡াদের বিরুদ্ধে দাঙ্গার উসকানি দিয়ে দমন পীড়ন অতি সফলতার সাথেই অব্যাহত রেখেছে। য়ার ফলে মিয়ানমারের জনগন চীনা ও বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে ঢুকে পড়ছে।
মিয়ানমারের বিদ্রোহী সংগঠন আরএসও সাবেক কর্মকর্তা সেলিম উল্লাহ। তিনি আরাকানের পাহাড়ি অঞ্চলে কাটিয়েছেন বেশ কয়েক যুগ। এখন নিস্ক্রিয় রয়েছেন। চট্টগ্রমে অবস্থান করছেন। তিনি বলেন, মিয়ানমারের মুসলিমদের উপর ব্রিটিশ শাসনের শেষের দিকে নির্যাতন শুরু হয়। যার কারনে ওই সময়ে রোহিঙ্গাদের মধ্যে ক্ষোভ বিদ্রোহ বাড়তে থাকে। যা এক পর্যায়ে সশস্ত্র অবস্থায় পৌছেঁ। তবে আর্ন্তজাতিক পরিবেশ পরিস্থিতির কারনে এখানে সশস্ত্র বিদ্রোহ বাদ দিয়ে শান্তিপূর্ণ সমাধনের পথই জরুরী বলে মনে করেন তিনি।
নিজ দেশে ফিরে যেতে চায় রোহিঙ্গারা
কথা হয় মিয়ানমারের বুচিডং থানার ঢুডেইং গ্রামের মৃত লোকমাল হাকিমের ছেরে আব্দু জাব্বারের সাথে । তিনি বলেন, ৭৫ বৎসর বয়সী আ্ব্দু জাব্বার যখন ৬ষ্ট শ্রেনির ছাত্র তখনই রেজিষ্ট্রেশন কার্যক্রম শুরু হয়। তাকে সে সময়ে ছবি উঠিয়ে পরবর্তী ১৯৫৭ সালের দিকে আইডি কার্ড প্রদান করে মিয়ানমার সরকার। সে সময়ে ছিলো না কে হিন্দু, কে বৌদ্ধ বা মুসলিম। সকল ধর্মের লোকজন শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করেছে এবং নাগরিক অধিকার ভোগ করেছে। বিভিন্ন সময়ে মিয়ানমার পার্লামেন্টে মুসলিম সদস্যও দায়িত্ব পালন করেছে।
তিনি আরো বলেন, ১৮৯০ সালে নির্মিত তার পৈত্রিক বাড়ী এখনো কালের সাক্ষী হিসেবে দন্ডায়মান রয়েছে তাদের গ্রামে। তার দাদা ও বড় দাদা এলাকার হেড ম্যান (চেয়ারম্যান) ছিলেন ওই এলাকার । এখনো বিদ্যমান রয়েছে তাদের পরিবারের পূর্ব পুরুষদের নিজস্ব অর্থায়নে নির্মিত মসজিদ ও মক্তব। এই মসজিদ ও বাড়ী সংস্থার করতে গিয়েই ঘটে বিপত্তি। ওই এলাকার দায়িত্বশীল কর্মকর্তার মৌখিক অনুমতি নিয়েই সংস্কার কাজে হাত দেন তিনি। এ ফাকেঁ কর্মকর্তা বদল। নতুন কর্মকর্তা কাজে বাধা দিয়ে বলেন, কেন অনুমতি নেওয়া হয়নি। আগের কর্তকর্তা অনুমতি নিওয়ার কথা তিনি মানতে নারাজ। চলে মানসিক নির্যাতন। এরই মধ্যে আব্দু জাব্বার ছেলে ইউসুফকে নিয়ে ২০০৪ সালে পালিয়ে আসে বাংলাদেশে । বর্তমানে টেকনাফের লেদা অনিবন্ধিত রোহিঙ্গা শিবিবে বসবাস করছে। এ প্রতিবেদককে তার সেই ৬ষ্ট শ্রেনিতে পওয়া মিয়ানমারের এনআরসি টি দেখিয়ে বলেন, আমি যদি মিয়ানমারের নাগরিক না হতাম,তাহলে কেন আমাকে এ কার্ডটি দেওয়া হলো। তিনি আরো বলেন, প্রতিটি জেলার আলাদা আলাদা কোর্ড দিয়ে নারী ও পুরুষের ভিন্ন রং’র কাড সরবরাহ করেছিলো মিয়ানমার সরকার। শুধু তাই নয়, এসব কার্ড ১৯৮৭ সালে যখন কিং ড্রাগন অপারেশন চলে তখনও পুনরায় ভেরিফাই করা হয়। এরপরও আমাদের আর কি বলার আছে। তিনি বলেন, মিয়ানামারে আমার বাবা, দাদার কবর রয়েছে। এখনো আমি ও আমারএক ছেলের পরিবার ছাড়া অন্যান্য সকলেই সেখানে অবস্থান করছে। তিনি এখনো ওই এলাকায় উত্তর মংডুর মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হয় নি বলেও জানান। তিনি বলেন, আমাদের যদি আর্ন্তজাতিক রীতিনীতি অনুযায়ী নাগরিক হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয় তাহলে এ মুহুর্তে মিযানমারে ফিরে যেতে প্রস্তুুত বলেও জানান। একই ভাবে কথা হয়, মিয়ানমারের বুচিঢং তিতোপই গ্রামের আব্দুল মজিদের ছেলে মোহাম্মদ কাশিম(৭৬)। তিনি বলেন, প্রতিবেশী মুসলিম রাষ্ট্র বাংলাদেশ আমাদের স্থান দিয়ে সাহায্য করেছে তার জন্য অবশ্যই কৃতজ্ঞ। ছোট্ট পরিসরে এখানে জীবন মান অত্যান্ত কষ্ট দায়ক।এ থেকে পরিত্রান পাওয়া দরকার। নিজ দেশে যদি শান্তি ফিরে আসে থাহলে চলে যাবো। মাস খানেক আগে মিয়ানমারের মংডু কেয়ারী প্রাং থেকে মিয়ানমার সেনা সদস্যদের হাতে ধর্ষনের শিকার হয়েছে এক সন্তানের জননী মোহসেনা বেগম। তিনি বলেন, এখান খাবো কি, থাকবো কিভাবে। মিয়ানমারে শান্তি আসলে ভালো হতো। চলে যেতে ইচ্ছে করছে। শুধু ভয় মিয়ানমারের সরকারী বাহিনীর বর্বরর্তা। তা কি যে কোন ভাবে বন্ধ করা যায়না। লেদা রোহিঙ্গা শিবিরের চেয়ারম্যান ডাঃ দুদু মিয়া বলেন, বর্তমানে সাথে ৩ হাজার রোহিঙ্গা পরিবার এখানে বসবাস করছে। তাদের নেই শিক্ষা , চিকিৎসা বা নাগরিক সুযোগ সুবিধা। আর্ন্তজাতিক সমপ্রদায় বা জাতি সংঘ কি রোহিঙ্গাদের নাগরিক অধিকার টুকু নিশ্চিত করতে পারেনা। এ অধিকার যদি দেওয়া হয় কোন রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অপ্রয়োজনে থাকবে না।
ডিসেম্বরে ৩ হাজার রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ প্রতিহত করেছে বিজিবি
ডিসেম্বর মাসে রোহিঙ্গা বোঝাই ২৩৫ টি নৌকা ফেরত পাঠিয়েছে বিজিবি। এসব নৌকায় ৩ হাজারেরও অধিক মিয়ানমর নাগরিক রোহিঙ্গা মুসলিম ছিলো বলে ধারনা করা হয়।
টেকনাফ সীমান্ত দিয়ে মিয়ানমার হতে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের চেষ্টা কালে এসব নৌকা ফেরত পাঠানো হয়। টেকনাফস্থ বিজিবি ২ ব্যাটালিয়নের উপ-পরিচালক মুহাম্মদ আব্দুল্লাহিল মামুন জানান, গত ২০১৬ সালের ১ ডিসেম্বর হতে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত টেকনাফ সীমান্তের আনোয়ার প্রজেক্ট, ২,৬ ু ৭ নাম্বার ¯øুইস গেইট এলাকা,লম্ববিল, তুলাতলি, লম্বাবিল হাউজের দ্বীপ,কাটাখালী, ঝিমংখালী , উনছিপ্রায়, নয়াপাড়া, জাদিমোড়া, দমদমিয়া, শাহপরীরদ্বীপ গোলা পাড়া এলাকা দিয়ে মিয়ানমার হতে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের চেষ্টা চালায়।
বিজিবি ২ ব্যাটালিয়নের উপ-অধিনায়ক মেজর আবু রাসেল সিদ্দিকী জানান, মিয়ানমার হতে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের চেষ্টাকারী প্রতি নৌকায় ১০ থেকে ১৫ জন রোহিঙ্গা নারী পুরুষ ও শিশু থাকে। সে হিসেবে ডিসেম্বর মাসে ৩ হাজারের মত রোহিঙ্গা হতে পারে যারা কি না অনুপ্রবেশের প্রচেষ্টা চালায়। তবে সীমান্তে বিজিবি টহল দলের দিবারাত্রী পাহারা জোরদার থাকায় তাদের অনুপ্রবেশ চেষ্টা প্রতিহত করা সম্ভব হয়েছে।
প্রসংগত নভেম্বরও মাসে রোহিঙ্গা বোঝাই ২’শতাধিক নৌকা প্রতিহত করেছিলো। সেখানে ২ হাজারের অধিক রোহিঙ্গা ছিলো।
৫ লাখ সাড়ে ২৮ হাজার ইয়াবা জব্দ : আটক-৪৩
মিয়ানমার সীমান্ত দিয়ে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের পাশাপাশি ইয়াবা পাচারও চলছে। বিজিবি গেল ডিসেম্বর মাসে ৫ লক্ষ ২৮ হাজার ৫৪৪ পিস ইয়াবা উদ্ধার করে ৪৩ জন পাচারকারীকে আটক করে টেকনাফ মডেল থানায় সোর্পদ করেছে। উদ্ধার হওয়া ইয়াবার মূল্য প্রায় ১৫ কোটি ৮৫ লাখ ৬৩ হাজার ২’শ টাকা। এ সংক্রান্ত টেকনাফ মডেল থানায় ৫২ টি মামলা রুজু করা হয়। এ ছাড়া এ সময় ২ হাজার ৫৭ ক্যান বিয়ার জব্দ করে বিজিবি।
বিজিবি ২ ব্যাটালিয়ন কমান্ডার লে.কর্ণেল আবু জার আল জাহিদ জানান, নভেম্বর ডিসেম্বর মাসে উল্লেখ যোগ্য হারে ইয়াবা অভিযান পরিচালনা করে বিজিবি। সীমান্ত দিয়ে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ প্রতিহত করতে গিয়ে বাড়ানো হয়েছে বিজিবি সংখ্যা ও টহল । এ সুফল পাওয়া যাচ্ছে ইয়াবা উদ্ধারেও। সীমান্তে টহল জোরদার থাকায় রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঠেকানোর পাশাপাশি ইয়াবাও ধরা পড়ছে প্রচুর।
ডিসেম্বর মাসে ১২ কোটি ৩৯ লাখ ৩৫ হাজার টাকা রাজস্ব আয়
মিয়ানমারের মংডুর সাথে টেকনাফে যাতায়াত বন্ধ থাকলেও টেকনাফ বন্দর দিয়ে বন্ধ হয়নি পন্য আনা নেওয়া। গত বছর অক্টোবরের ৯ তারিখ থেকে দু দেশের সীমান্ত ব্যবসায়ীদের যাতায়াত বন্ধ রয়েছে। তবে মোবাইল যোগাযোগের মাধ্যমে আনা নেওয়া হচ্ছে বিভিন্ন পন্য। যার কারনে ২০১৬ সালের ডিসেম্বর মাসে ১২ কোটি ৩৯ লাখ ৩৫ হাজার ৩৮০ টাকা রাজস্ব আয় করেছে শুল্ক বিভাগ। যা মাসিক টার্গেটের চেয়ে ৪ কোটি ৬১ লাখ ৩৫ হাজার ৩৮০ টাকা অতিরিক্ত । ডিসেম্বর মাসে মাসিক টার্গেট ধরা হয়েছিলো ৭ ’কোটি ৭৮ লাখ টাকা। টেকনাফ স্থল বন্দর দিয়ে দু’দেশের সীমান্ত বানিজ্যের আওতায় এ রাজস্ব আদায় সম্ভব হয়।
টেকনাফ স্থল বন্দর শুল্ক ষ্টেশনের কর্মকর্তা মোহাম্মদ আব্দুল মান্নান জানান , ২৬২ টি বিল অব ইমর্পোটের মাধ্যমে আমদানিকৃত ৩৬ কোটি ৮৩ লাখ ৩১৮ টাকার পন্যের বিনিময়ে ১২ কোটি ৩৯ লাখ ৩৫ হাজার ৩৮০ টাকা রাজস্ব আয় হয়। আর এ মাসে ৪৩ টি বিল অব এক্সপোর্টের মাধ্যমে ১ কোটি ৫৫ লাখ ৮৮ হাজার ৫১৩ টাকা মূল্যমানের পণ্য রপ্তানি করে সীমান্ত বাণিজ্য ব্যবসায়ীরা। এ ছাড়া শাহপরীরদ্বীপ গবাধিপশুর করিডোর খাতে ২৫’শ৫৪ টি গরুও ৮৫ টি মহিষ আমদানি বাবদ রাজস্ব আয় হয় ১৩ লাখ সাড়ে ১৯ হাজার টাকা।

Comment here