টেকনাফরোহিঙ্গা সমাচার

রোহিঙ্গা বোঝাই ৮ নৌকা ফেরত :মিয়ানমারে আটক ১১ জেলে ফেরেনি : উৎকন্ঠায় পরিবার

জাবেদ ইকবাল চৌধুরী, টেকনাফ ভিশন :
রোহিঙ্গা বোঝাই ৮ নৌকা ফেরত
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে এখনো বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। রবিবার রাত হতে সোমবার (২৮ নভেম্বর) পর্যন্ত রোহিঙ্গা বোঝাই ৮ টি নৌকার অনুপ্রবেশ ঠেকিয়ে দিয়েছে বিজিবি। প্রতিটি নৌকাতে ১০ থেকে ১৫ জন নারী পুরুষ ও শিশু ছিলো বলে জানিয়েছেন বিজিবি টেকনাফ ২ ব্যাটলিয়ার্নে উপ অধিনায়ক মেজর আবু রাসেল সিদ্দিকী।
এ ছাড়া টেকনাফ নাইট্যং পাড়া সংলগ্ন নাফনদ হতে ২ টি মাছ ধরার নৌকা ধরে নিয়ে গেছে মিয়ানমারের বর্ডার গার্ড পুলিশ। রবিবার দুপুরে নাইটং পাড়া সংলগ্ন নাফনদীর বাংলাদেশ অংশ থেকে জালসহ নৌকা দুটি নিয়ে যায়। নাইটং পাড়ার জাফর আলম ও অলি আহমদ জানান,“ নাফনদীতে জাল ফেতে নৌকা দুটি অন্যান্য মাছ ধরার নৌকার মত সেখানে ছিলো। এ সময় নৌকাতে কোন জেলে ছিলো না। মিয়ানমারের বিজিবি সদস্যরা নাফনদী থেকে নৌকা দুটি জালসহ নিয়ে যায়। ” বিষয়টি নাইটং পাড়ায় টহলরত বিজিবি সদস্যদের জানানো হয়েছে কিন্ত্র এখনো কোন প্রতিকার এ পর্যন্ত হয় নি বলেও জানান তারা।
teknaf-jela-porivar-pic
৯ অক্টোবর মিয়ানমারের ৩ টি বিজিবি ক্যাম্পে সন্ত্রাসী হামলার পর এর আগে সেন্টমার্টিন ও টেকনাফ জালিয়া পাড়া ও নাজির পাড়া সংলগ্ন নাফ নদ হতে ৩ দফায় ১১ জেলেকে ধরে নিয়ে যায় মিয়ানমারের বিজিপি সদস্যরা। এখনো তাদের ফেরত আনা সম্ভব হয়নি। এ বিষয়টি বিজিবি কর্মকর্তারা মিয়ানমারের বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি) কতৃপক্ষক জানানো হয়েছে। এমনটি জানিয়েছেন, বিজিবি ২ ব্যাটলিয়ান কমান্ডার লে.কর্ণেল আবুজার আল জাহিদ। তিনি বলে, সম্প্রতি অনুষ্ঠিত বিজিপি-বিজিবি পতাকা বৈঠকে বাংলাদেশী জেলেদের নামীয় তালিকা হস্তান্তর করা হয়েছে। বিষয়টি মিয়ারমারের পররাষ্ট মন্ত্রনালয়ের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রযেছে বলে বিজিপি কর্মকর্তারা কক্সবাজারের উক্ত বৈঠকে নিশ্চিত করেছেন।
প্রসংগত ১১ নভেম্বর শুক্রবার রাত ৮টার দিকে টেকনাফের নাজির পাড়া বরাবর নাফ নদী থেকে মাছ শিকাররত অবস্থায় ৩ জেলেকে ট্রলার ও জালসহ ধরে নিয়ে যায় বিজিপি। উক্ত ৩ জেলে হচ্ছে টেকনাফ পৌরসভার উত্তর জালিয়াপাড়ার আব্দুল মালেকের ছেলে আব্দুর রহমান (৩২), চৌধুরী পাড়া এলাকার সৈয়দ হোসেনের ছেলে মোঃ ইউনুচ (২৫) ও আব্দুল আমিনের ছেলে মোঃ খালেক(১৮)।
এর আগে ৯ নভেম্বর বুধবার বিকালে সেন্টমার্টিনের দক্ষিন-পূর্ব দিকে আনুমানিক ২ কিলোমিটার সাগর এলাকায় কয়েকটি দেশীয় ট্রলার সাগরে মাছ শিকার কালে হঠাৎ করে মিয়ানমার বর্ডার র্গাড পুলিশের একটি ট্রলার নিয়ে ধাওয়া করলে অন্য ট্রলারগুলো পালিয়ে আসলেও সেন্টমার্টিন কোনার পাড়ার মৃত জাফর আহমদের ছেলে নাসির উদ্দিনের মালিকানাধীন ট্রলারটি ৫ মাঝি-মাল্লাসহ আটক করে নিয়ে যায়। নিয়ে যাওয়া মাঝি-মাল্লারা হল, সেন্টমার্টিন কোনার পাড়ার শাইর আহমদের ছেলে আব্দুল হামিদ মাঝি, অলি চানের ছেলে হাসিম, অছিউর রহমানের ছেলে ফজল আহমদ, দক্ষিণ পাড়ার মোহাম্মদ ইসমাঈলের ছেলে মোঃ হোছাইন, লাল মিয়ার ছেলে সাদ্দাম।
এ ছাড়া ৪ নভেম্বর বুধবার সন্ধ্যায় নাফ নদীতে জালের খুটি পুততে গিয়ে মিয়ানমার বর্ডার গার্ড পুলিশের হাতে আটক হয় টেকনাফ পৌরসভার চৌধুরী পাড়ার কবির আহমদের ছেলে হামিদ হোসেন (৪০), একই এলাকার মোঃ ইসলামের ছেলে মোঃ ইসমাইল কালাইয়া (৩২), দক্ষিন জালিয়া পাড়ার সেকান্দার আলীর ছেলে নুর হোসেন (৪৫)।
এ সময় চৌধুরী পাড়ার মৃত হাসানের ছেলে পুতুইয়া (৩২) কোন মতে পালিয়ে আসতে সক্ষম হয় বলে জানায়।
আটক জেলেদের কোন খোঁজ খবর না পাওয়ায় উৎকন্ঠায় রযেছে জেলে পরিবারের স্বজনরা। স্বামী বিজিপির হাতে আটক জেলে আব্দুর রহমানের স্ত্রী আনোয়ারা ও আব্দুল মালেকের স্ত্রী মনিরা বেগম জানান, এক দিকে এখনো স্বামীর খোজঁ খবর পাওয়া যাচ্ছে না। অন্যদিকে ছেলে সন্তান নিয়ে অর্ধাহারে অনাহারে কাটছে তাদের জীবন। পরিবারের উর্পাজনক্ষম সদস্যদের কারনে আজ তাদের পরিবারে অর্নকার মেমে এসেছে । তারা মিয়ানমারে আটক তাদের স্বামীসহ ১১ জন জেলেকে ফিরিয়ে আনতে বিজিবিসহ সংশ্লিষ্টদের সহযোগিতা কামনা করেছেন।
এ নিয়ে গত ৯ অক্টোবরের পর হতে এ পর্যন্ত নাফ নদী ও বঙ্গোপসাগর থেকে ১১ জেলেকে ধরে নিয়ে গেল বিজিপি।
এদিকে সোমবার বিকেলে নাফনদীর মিয়ানমার সীমান্তে বিজিপি’র টহল চোখে পড়েছে। বেশ কয়েকটি স্পিড যোগে বিজিপি’র টহলের দৃশ্য টেকনাফ সীমান্ত দিয়ে দেখা যায়।

 

Comment here